তারেক জিয়ার অর্জিত ইতিহাসের কিছু শিক্ষা

ডা: হাসান মাহমুদ মামুন॥ খুব মায়া লেগেছিল সেদিন, যেদিন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে আজকের চন্দ্রিমা উদ্যান নামে খ্যাত সংসদের পাশে যেখানে তাকে দাফন করা হচ্ছিল। তারেক জিয়ার কান্না আমাদের মনকে ব্যথিত করেছিল। কিন্তু যখন জানলাম যে সেখানে জিয়াউর রহমান এর দেহাবশেষ কবর না দিয়ে অন্য কিছু করা হয়েছে তখনই ঘৃনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতি মনের মাঝে বিশেধাগার হয়ে একাকার হয়ে গেল।
প্রশ্ন : জনগনকে ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করে কি লাভ?
মিথ্যা যে একদিন সত্য হয়ে বের হয়ে আসবেই। যাহোক, আজকের বিএনপি যারা দেখলাম পত্রিকায় বেশ ঘটা করে প্রমাণ দিচ্ছে তাদের এতদিন কোন সদস্য ছিল না। এখন সদস্য ফরম বিলি হচ্ছে প্রথমদিন ৪০ হাজার ফরম বিক্রি হয়েছে, গেল কাল নাকি ১ লাখ ৩০ হাজার বিক্রি হয়েছে, ফরম এর মুল্য যদিও আমি জানিনা। তবে বিএনপির মিডিয়া প্রকাশ করেছে তাদের লক্ষ্য ১ কোটি। নিশ্চয়ই মনে আছে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ও বেশ কয়েকবার এরুপ ঘোষনা দিয়ে তারপর চুপ হয়ে আছে কারন আওয়ামী লীগ জানে বাংলাদেশ এর জনগনই আওয়ামীলীগ। এখন বিএনপি যদিও বলছে তবে অফিস এর লোকজনের আনা গোনা গত কয়েকদিনেই ৪০ হাজার হয়েছে কিনা তা ভাল জানে আমাদের প্রশাসন তন্ত্র।
সে যাহোক, আমি মনে করি বিএনপির এই ঘোষনা আর সদস্য ফরম এর মাধ্যমে জামাত শিবিরদের নিজেদের করে নেয়া। ভাল জানেন যার জানার কথা তার। মুল প্রসঙ্গে আসি, কোথায় যেন পড়েছিলাম জিয়াউর রহমান প্রেসিডেন্ট থাকা কালে কোন ক্যাডেট এর প্রিন্সিপ্যাল নাকি জিয়াকে ফোন দিয়ে বলছিলেন স্যার আপনার ছেলে এই কয় বিষয়ে ফেল করেছিল আমি তাকে পাশ করিয়ে পরের শ্রেণী তে প্রমোশন দিয়েছি। জিয়াউর রহমান নাকি তাকে তিরস্কার করেছিলেন। যদি ঘটনা সত্য হয় তবে বুঝতে হবে জিয়া তার নিজ সন্তানদের মানুষ এর মত মানুষ করতে চেয়েছিলেন। যা বেগম জিয়া করতে পারেন নি।
৯০ এর গণ আন্দোলনের পর ক্ষমতায় আসল খালেদা জিয়ার নেত্বীত্রে বিএনপি সরকার। আবার মিডিয়া বা খবরের কাগজ গুলোতে আস্তে থাকল তারেক জিয়া সমাচার। প্রচার হয়েছিল, জিয়াউর রহমানের স্যুটকেইস এর ভিতর নাকি ছেড়া গেঞ্জি আর পুরোনো কাপড় পাওয়া গিয়েছিল। সেই সুইটক্যাস থেকে বড় বড় জাহাজ বের হয়ে আসল। প্রথম বার খুব ভদ্র তারেক জিয়াকে দেখেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ক্ষমতায় গিয়ে নির্ধারিত সময়ে ক্ষমতা ছাড়তে অনেক নাটক করতে চেয়েছিল বিএনপি পারেনি।
পরের বার ক্ষমতায় আসল, বাংলাদেশকে যে দলের নেত্বীত্রে স্বাধীন করা হয়েছে আর যিনি স্বাধীনতার স্বাধ সাধারনের মনে জাগিয়ে তুলতে পেরেছিলেন সেই বাঙ্গালী জাতির জনকের সুযগ্যা কন্যার হাত ধরে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ। তাক লাগিয়েছিল শেখ হাসিনা সেবারই প্রথম। মানুষ এর বোধগম্য হল শেখের বেটি অনেকটাই বাবার মতই দেশকে ভালবাসে, এবং তিনিই বাংলাদেশ কে বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে সক্ষম করাবেন।
দুর্ভাগ্য ২য় বার আবার ক্ষমতায় আসল বিএনপি যুদ্ধাপরাধীদের সাথে নিয়ে দেশের মুল্যবান সম্পদ গ্যাস কে বিলিয়ে দিয়ে। তারেক জিয়াকে শয়তানদের প্ররোচনায় দেওয়া হল দলের ২য় ক্ষমতা ধর ব্যক্তি। ব্যাস আর কি, হাওয়া ভবন, দুর্নীতি সবই দেখল বাংলাদেশ। সে সময় অনেক কেই প্রশ্ন করতাম আচ্ছা এত দুর্নীতি হচ্ছে পরে তো তারেক জিয়া ফাঁসবে এবং পঁচবে। উত্তর অনেক সময় এভাবে আসত, আরে মিয়া তার নিজের কোথাও কোন প্রমান নেই। কোথাও নেই স্বাক্ষর। কয়েকজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু সব করে। এরপর তো সবই ইতিহাস। জেল খাটতে হল তারেক জিয়া কে সেই সকল দুর্নীতির দায়েই, হারাতে হল অনেক কিছুই।  সাধারনের সম্বোধন আসল চোর নামে, ডাকাত নামে, দুর্নীতিবাজ সহ চরিত্রের বিভিন্ন বিশেষন।
কি লাভ হল,  মনে করেন কোন একদিন তাকে বাংলাদেশে আসতেই হল, কিন্তু মুছতে পারবে কি সেই সকল সম্বোধন। আমি আপনি হলে তো কচু গাছে ফাসি ঝুলিয়ে মরবার চেষ্টা করতাম। কি করে দেখাব এই মুখ খানা। আর তারেক জিয়া কিনা দেশের বাহিরে থেকেই শুরু করেছিল বাঙ্গালী জাতির জনক কে নিয়ে অযথা মিথ্যাচার আর ইতিহাস বিকৃতির প্রচেষ্টা। সেই সকল শয়তানদের প্ররোচনায় যারা খালেদা জিয়াকে দিয়ে ১৫ ই আগষ্ট নিজের ভুয়া জন্মদিন পালন করিয়ে দেশকে বিপথে পরিচালিত করেছিল। আসলে মানবিকতা আর মানসিকতা এক বিষয় নহে। ব্যক্তি শেখ মুজিব খালেদা জিয়াকে যেভাবে বাবার মত এগিয়ে এসে সংসার বাঁচিয়ে ছিলেন সেই হিসেবেও তো সম্মান আর শ্রদ্ধায় বঙ্গবন্ধু কে বাবার মত দেখে সেই হিসেবে কথা বলতে হত।
কিন্তু সবই যে উলটো, সৃষ্টিকর্তা বলে ত একজন আছেন ই। তিনি ই সব বিচারের মালিক তার বিচারের কাছে তো কিছুই টিকবে না। কেউ কি বলতে পারেন, টিকে। ????? আজ কে যদি আমরা একই ক্ষেত্রে জননেত্রী শেখ হাসিনা সজীব ওয়াজেদ জয় আর সায়মা ওয়াজেদ পুতুল কে দেখি তাতে অনেকটাই নিশ্চিত হই বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ভবিষ্যতে এই প্রকারের পরিস্থিতির সম্মুখীন হবে না কারন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দলীয় পদে নিজের সন্তানদের আগে বাড়তে দেন নি। শেখ হাসিনা ভাল করেই জানে এক্ষেত্রে ভবিষ্যৎ কি হতে পারে। কারন জয় আর পুতুল যদি কোন বৈধ অবৈধ কাজে মত না দিলেও ঘনিষ্ঠ জনদের কারনে তাদের কে সমালোচিত হতেই হত।

Leave a Reply

Your email address will not be published.