আগে চাইতো টাকা, এখন চায় পাউন্ড

বা ই॥ একদিকে মামলার চাপ, অন্যদিকে চাঁদার চাপ। এই দুই চাপে রীতিমতো পিষ্ট তিনি। ব্যবসা-বাণিজ্যে দারুণ মন্দা। পারকিনসন্স রোগে আক্রান্ত। সব কিছু ভুলে যান, কিন্তু ভুলতে চাইলেই কি সব ভোলা যায়?  এখন ফোন ধরেনই না। বিড় বিড় করে বলেন, ‘আগে চাইতো টাকা, এখন চায় পাউন্ড’। তারেক জিয়াকে উদ্দেশ্য করে এই কথাগুলো বলেন, আর নিজেই নিজের ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করেন। মোর্শেদ খান। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী।
ব্যবসায়ী হিসেবে মোর্শেদ খানের অর্জন অনেক। আরব-বাংলাদেশ ব্যাংক, প্যাসিফিক গ্রুপ, সিটিসেল মোবাইল। ব্যবসায় তাঁর সাম্রাজ্য বহুদূর বিস্তৃত। মূলত, তাঁর সম্পদ রক্ষার জন্যই তিনি রাজনীতির পথে পা বাড়ান। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর, সবাইকে অবাক করে দিয়ে মোর্শেদ খান হন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। অথচ কূটনৈতিকভাবে তাঁর কোনো অভিজ্ঞতাই ছিল না। অনেকেই জানে, তারেক জিয়াকে খুশি করেই তিনি এমন মূল্যবান মন্ত্রিত্ব বাগিয়ে ছিলেন। এখন নিজেই এজন্য নিজেক শাপ-শাপান্ত করেন। এই মন্ত্রিত্বই হলো তাঁর কাল।
ওয়ান ইলেভেনে তো পালিয়ে বাঁচলেন। এখন বেঁচেও মরে আছেন। সব কিছুর জন্য তিনি দায়ী করেন, তারেকের লাগামহীন অর্থলোভকে। তার আত্মীয় স্বজনকে সবসময় বলেন, ‘তারেকই ডুবিয়েছে বিএনপিকে। তারেক থাকলে বিএনপির ভবিষ্যৎ নাই।’ বেগম জিয়ার সঙ্গে দেখা করে দল ছাড়তেও চেয়েছেন, কিন্তু বেগম জিয়া অনুরোধ করেছেন বলেই এখন নামেমাত্র আছেন বিএনপিতে। দলের কোনো কর্মকান্ডে থাকেন না। ‘ম্যাডাম’ কে বলেছেন ‘সব টাকা যদি আমিই দেই তাহলে অন্যরা কি করে?’ টাকা দিতে দিতে ক্লান্ত হয়েছেন। এখন তার ব্যবসাও খুব খারাপ। বলেন, ‘নিজেরই খাওয়ার পয়সা নেই, পার্টিতে দেবো কী করে?’
দুর্নীতির মামলা, মানি লন্ডারিং এর মামলা, সিটিসেলের মামলা। মামলায় মামলায় জর্জরিত, দিশেহারা। এর মধ্যে লন্ডন থেকে চাপ আসে পাউন্ডের। ছেলে মেয়েকে রাজনীতিতে জড়াননি। চানও না তাঁরা রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ুক। এখন মনে করেন রাজনীতি না করলে জীবন সায়াহ্নে এতো অশান্তির মধ্যে তাঁকে পরতে হতো না। মাঝে মাঝে রেগে গিয়ে বলেন, ‘বখাটেরা যখন দলের নেতা হয়; তখন সেই দলে থাকলে তো এরকম পরিণতিই হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published.