বিচার বিভাগের এই দৈন্যদশার শেষ কোথায়

বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছিল বলেই আজ বিচাপতি হিসেবে আমাদের আগমন এবং প্রস্থান। আর বাংলাদেশ সৃষ্টির পিছনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কারিঘর হল আমাদের বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধুকে অস্বিকার করলে এই বাংলাদেশকেই অস্বিকার করা হয়। বঙ্গবন্ধুবিহীন বাংলাদেশ যেন সেই পাকিস্তানেরই নামমাত্র বা দ্বিতীয় সংস্করন। তাহলে বাংলাদেশকে আবারো পাকিস্তানে ফিরিয়ে নেয়ার নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন দেশী এবং বিদেশী কুচক্রীমহল। তবে আদতে যা বুঝা যায় তা হল রাষ্ট্রে নয় পাকিস্তানী রাজনীতি এবং প্রশাসন ও বিচার-বিভাগের আদলে। যে কারণে বিশ্বে আজ পাকিস্তান জাতীকে বর্বর এবং সন্ত্রাসী জাতী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। বাংলাদেশও কি সেই পথে এগুচ্ছে। কুশিলবদের মুছে তেল দেওয়া এবং বড় গলার কথা বলার ধরন দেখে আপাতত এমনটাই মনে হচ্ছে।
বিচারপতিগণ এবং এই বিচার বিভাগ নিয়ে কোন কথা বলার ইচ্ছা বা আগ্রহ কোনটাই ছিল না। কারণ এই বিভাগকে শ্রদ্ধা করি এবং বিচারকদেরকে সম্মান করি। কিন্তু এই সপ্তাহান্তে যে আলোচনা এবং সমালোচনার ঝড় বইছে সেখানে উপস্থিত হয়ে ক্ষুদ্র জ্ঞানে অবনত মস্তকে কিছ পরামর্শ বা তাপে পানি ডালতে চেষ্টা করছি মাত্র। শ্রদ্ধেয় বিচারকগণকে বলতে চাই এই দেশে পাকিস্তানী কায়দায় কোন শাসন ব্যবস্থা কায়েম হবে না। যদি কেউ স্বপ্ন দেখেন বা কেউ দেখায় তাহলে সেটা শুরুতেই গুরেবালি হবে। দুধ কলা দিয়ে সাপ পোষা আমাদের স্বভাব। কিন্তু সেই সাপ যখন আমাদেরকে রক্ষা করার বদৌলতে আগ্রাসী ভুমিকায় আক্রমন করে তখন কি পরিণতি তা হয়ত সকলেই জানে। তবে বলছি হয়ত কোন কোন সময় পোষা সাপের আক্রমণে কেউ হত বা কেউ মারা যায় কিন্তু পরক্ষণেই সেই পোষা সাপটিকে চিরতরে বিনাশ করে দেয়া হয়।
আমাদের বিচারকগণ যে রায় দিয়েছেন তাতে হয়তো কেউ খুশি বা কেউ অখুশী হয়েছেন। কিন্ত আমি কোনটিই হয়নি। কারণ এই রায়ে শত্রুর শত্রুতা মাত্র প্রকাশ পেল। চক্রান্তের ঘটনা উদঘাটিত হলো। এতো ভাল বৈকি খারাপ হয়নি। তবে এটি যদি কোন কুট চাল না হয়ে গেইম হয় তাহলেও বলব এটা সঠিক হয়নি। কারণ যা পত্রিকান্তরে প্রকাশিত হয়েছে তা আমি সাধারণ মানুষ হিসেবেও মেনে নিতে পারিনি। এই দেশের সকল কিছুই জবাব দিহীর অধিনে থাকবে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অধিনে হবে। জনগণের কাছে দায়বদ্ধ বা জবাবদিহীতামূলক হতে হবে। তবে জবাবদিহীতার উদ্ধে উঠে কেউ পার পায়নি আর পাবেও না। আমি কাউকে ছোট করার উদ্দেশ্যে বলছি না বরং বলছি নিজেকে ছোট করলে সম্মান বৃদ্ধি পায় এবং রাষ্ট্রে সুখ-শান্তি স্থায়ী হয়।
অতিরিক্ত স্বাধীনতা ভোগের ফল ভাল হয়না তার প্রমান আজ আমাদের সম্মানিত বিচারপতিদের অবিচারকসূলব রাজনৈতিক বক্তব্য এবং রাজনৈতিক রায় এর মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এই রায়ে আসলে জাতি হতাস। কারণ যাদের উপর দায়িত্ব দেয়া হয় তারাই বিভিন্ন সমস্যা তেরী করে বিশৃঙ্খল পরিবেশ তেরীতে সহযোগীতা করে। সংবিধান নিয়ে টানাহেচরা আসলেই মুখ্যতার লক্ষ্যণ। তবে এই সংবিধানকে নিজের প্রয়োজনে বা ক্ষমতার বিলাসী আয়েশ বা লোভে ব্যবহার করাও জঘন্যতম ঘৃন্যকাজ। আমরা দেখেছি ফখরুল, মঈন ইউ আহমেদ দেরকে। বেশীদিন আগে নয়; যা ভুলে যাবো। কিন্তু তাদের ক্ষমতার দাম্ভিকতা এবং ভবিষ্যত পরিকল্পনাও দেখেছি। কিন্তু শেষ পরিণতিও এখন দেখতে এবং জানতে পারছি। তবে উলুর যদি পাখ উঠে তাহলে আগুনে পুরে মরে। আমাদের দেশের বিচার প্রসাশনেরও হয়েছে তাই। হিতাহিত জ্ঞানশুন্য হয়ে যা মনে চাই তা করে ফেললাম তাই হয়েছে। কাজের কাজ কিছুই হয়নি। জাতির অনেক আশা ছিল জনাব সিংহা সাহেবের উপর। কিন্তু সে আশায় গুরেবালি হলো।
যতদুর জানতে পেরেছি এবং উপলব্ধি করেছি তাতে মনে হয় আমাদের সিংহা সাহেব আগামী দিনে রাষ্ট্রপতি বা অন্য কোন উচ্চাসনের ইংগিত দিয়ে আসছিলেন। কিন্ত আজ সেই আশায়ও বিনা মেঘে বজ্রাঘাত হলো। আমাদের প্রাণের প্রীয় মাননীয় প্রধান বিচারপতি তাঁর সরকারী প্লটে তৈরীকৃত বাড়িটি ৪ কোটি বা ৫ কোটি টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন। কি প্রয়োজন ছিল ঐ সুন্দর বাড়িটি বিক্রি করার। আমরা দু:খ পেয়েছিলাম তখন যখন ওনি বাড়িটি বিক্রি করে কিন্তু এখন আবার অন্য কিছু ভাবার উদয় হয়েছে ক্ষুদ্র মনে। আসলে তিনি কি তাঁর লক্ষ্যে পৌঁছতে না পাড়লে মঈন ইউ এবং ফকরুদ্দিনদের মতো মাতৃভুমি ছেড়ে বিদেশে পাড়ি দিবেন। আর তা যদি হয় তাতো খুবই দু:খের। সরকারকে বলব এই সময়ে কঠিনভাবে কিছু একটা করা উচিত যাতে ঐ ধরণের লোকদের লালসা চরিতার্থ না হয়ে বরং দৃষ্টান্ত থাকে যাতে আগামী দিনে আর কেউ এই ধরনের বিভ্রান্তি এবং গায়ে মানে না আপনি মোড়ল ভাব নিয়ে দেশের ক্ষতি করে নিজেকে জাহির করতে না পারে।
আমাদের বলার আর কিছু নেই বরং শুধু দেখার আছে। তবে অনেকেই অনেক কিছু বলেছেন বিভিন্ন মাধ্যমে তা যথাযথ যুক্তিযুক্ত। কিন্তু কিছু চাটুকার এবং স্বঘোষিত সুশিল ও নগরিক সমাজের বাটপাররা তাদের খায়েশ পুরণের আকাঙ্খা পোষণের নিমিত্তে দাত কেলিয়ে উদ্ভট কথা বলেছেন। তাদেরকেও চিহ্নিত করুন এবং আগামী দিনে বিচারের কাঠগড়াই দাঁড় করিয়ে ইতিহাসে স্বাক্ষী রাখুন। মাননীয় আইন মন্ত্রী এবং মন্ত্রীপরিষদ ও প্রধানমন্ত্রী যথার্থই বলেছেন। আমাদের আস্থা তাদের উপর রয়েছে। আশা করি স্থায়ীভাবে বিচার বিভাগের দৈন্যদশা ঘুচাবে এবং ঘুরে দাঁড়াবে আমাদের বিশ্বাস এবং নির্ভরতা। হানাহানি এবং মনো ভিবেদ দুর হবে। রাষ্ট্রের সকল স্তম্ভগুলো একসঙ্গে দেশের কল্যাণের তরে কাজ করবে। একে অপরের সঙ্গে মনোবিবাদে জড়াবে না। প্রকাশ্যে বিভাজন ও বিশৃংখলা সৃষ্টি করে এমন আচরণ থেকে বিরত থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.