ত্রিপুরার পাহাড়ী ঢলে কসবা উপজেলার দুইটি ইউনিয়নের ৪৮টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি ক্ষতির পরিমান প্রায় ২০০ কোটি টাকা

ভজন শংকর আচার্য,কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ অতিবর্ষন ও পাহাড়ী ঢলে কসবা উপজেলার বায়েক, কায়েমপুর ও গোপিনাথপুর ইউনিয়নের ৪৮টি গ্রামের মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে।  পুকুরের মাছ, হ্যাচারি, মৎস খামার ও কৃষিজমি ঢলের পানিতে একাকার হয়ে ১৫০কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঢলের পানি প্রবেশ করায় ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার বিদ্যালয়গুলো বন্ধ হয়ে গেছে।
সবচেয়ে মারাত্মক দুর্ভোগে পড়েছে বায়েক ইউনিয়নের প্রায় ৩৩টি গ্রামের মানুষ। অর্ধাহারে অনাহারে তাদের দিনাতিপাত করতে হচ্ছে। গত শনিবার (১২ আগষ্ট) কসবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসিনা ইসলাম বায়েক ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেন। গতকালই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৪ টন চাউল বায়েক ও গোপিনাথপুর ইউনিয়নে বরাদ্দ দিয়েছেন।
খবর পেয়ে আইন,বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হকের নির্দেশে মন্ত্রীর একান্ত সহকারী সচিব এডভোকেট রাশেদুল কাউসার জীবন ও আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ১৩ আগস্ট সকালে থেকে বন্যাদূর্গত এলাকায় ত্রান সামগ্রী নৌকাযোগে বাড়ি বাড়ি গিয়ে পানিবন্দি মানুষের মাঝে বিতরন করছেন। বায়েক ইউপি চেয়ারম্যান আল মামুন ভুইয়া জানান, তার এলাকায় প্রায় ১হাজার হেক্টর জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। সালদা নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহীত হচ্ছে। শুধু একটি গুচ্ছগ্রাম ছাড়া সকল গ্রাম পাহাড়ি ঢলে তলীয়ে গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে পাহাড়ি ঢলে বায়েক ইউপির ছোট-বড় ১০টি কালভার্ট পানির ¯স্রোতে  ভেসে গেছে। এদিকে স্থানীয় কৃষি অফিস এবং মৎস অফিস এখনো পর্যন্ত সঠিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নির্নয় করতে পারেনি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার  জানান বন্যায় পানি কমে গেলে ক্ষতির পরিমান নির্নয় করা হবে। উপজেলার পুটিয়ার স্লুইস গেটটি  উপরে গেছে পাহাড়ি ঢলের পানির স্রোতে। সম্প্রতি তৈরি পাকা সড়ক গুলো বিধ্বস্ত হয়ে গেছে । বায়েক ইউপি চেয়ারম্যান আরো জানান তার ইউনিয়নের ক্ষয়ক্ষতির পরিমান ১০০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে। রেনু, পোনা ও হ্যাচারি শিল্প প্রসিদ্ধ এলাকায় ব্যক্তি মালিকানায় মৎস খামারগুলো ঢলের পানিতে নিমজ্জিত হলে হ্যাচারি মালিকরা সর্বশান্ত হয়ে গেছে।
একই অবস্থা গোপিনাথপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামগুলোতে। গোপিনাথপুর ইউপি চেয়ারম্যান এসএম মান্নান জাহাংগীর তার ইউনিয়নের গ্রামে গিয়ে চিড়া,গুড় সহ বিভিন্ন প্রকার শুকনো খাবার সহ ত্রান সামগ্রী বিতরন করছেন। ত্রান বিতরন কালে তিনি বলেন তার ইউনিয়নেও প্রায় ৭০ কোটি টাকার মৎস সম্পদ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ত্রিপুড়ার পানির তোড়ে এ ইউপির প্রায় ২০ গ্রাম প্লাবিত হয়ে অধিকাংশ মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। চন্ডিদ্বার, ধ্বজনগর  সড়কের বিভিন্ন স্থান ঢলের পানিতে ডুবে একাকার হয়ে গেছে। সরকার থেকে যে সাহায্য পাওয়া গেছে তা অপ্রতুল। তাই আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ এলাকায় পানিবন্দি মানুষের পাশে দাড়িয়েছেন বলে জানান ।
এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান ত্রান মন্ত্রনালয় থেকে দূর্গত এলাকার জন্য ৩০ টন চাউল দিচ্ছেন। আগামীকাল ১৪ আগষ্ট মধ্যে এই চাউল পানিবন্দি মানুষের মধ্যে বিতরন করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.