ঈদের পরই মন্ত্রিসভায় রদবদল

নির্বাচনের আগে দলকে চাঙ্গা করতে ঈদের পরই মন্ত্রিসভায় রদবদল হচ্ছে। বিভিন্ন ইস্যুতে সরকারকে আরও গতিশীল করতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। গত বেশ কিছুদিন ধরেই মন্ত্রিসভায় রদবদলের কথা শোনা যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দু’দফায় মন্ত্রিসভার রদবদলের ইঙ্গিত করেছিলেন। কিন্তু শোকের মাস আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকার বড় ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নেয় না। এজন্যই ঈদের পরই মন্ত্রিসভায় রদবদল হবে বলে একাধিক নেতা জানিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো জানায়, অর্থ মন্ত্রণালয় পরিবর্তনের সম্ভাবনা প্রবল। অর্থমন্ত্রী নিজেই স্বপদে আর থাকতে চাইছেন না। তাঁর বদলে একজন টেকনোক্রাট মন্ত্রীকে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্ভাব্য দুজন প্রাক্তন আমলা ও অর্থনীতিবিদের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলেছেন।

ধর্ম এবং দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের পরিবর্তন আসছে স্পষ্ট। প্রধানমন্ত্রী নিজে ধর্মমন্ত্রী মতিউর রহমান এবং দুর্যোগমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার কার্যক্রমে অসন্তোষ জানিয়েছেন। এছাড়াও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্রাচনী অঙ্গীকার পূরণে দৃশ্যমান অগ্রগতি অর্জনই মন্ত্রিসভা পরিবর্তনের অন্যতম লক্ষ্য বলে জানা গেছে।
গত ২৮ আগস্ট কয়েকজন সাংবাদিক নেতা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একান্তে সাক্ষাৎকার করেন। তাঁরা তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর ব্যাপারে তাঁদের নেতিবাচক মনোভাব জানান। ইনুকে তথ্য থেকে সরিয়ে দেওয়া অথবা একজন প্রতিমন্ত্রী যুক্ত করার ব্যাপারে তাঁরা প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন। এছাড়াও খাদ্যমন্ত্রীকে নিয়ে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নিজেই তাঁর অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এদের বদলে, সংগঠনিকভাবে দক্ষ, কর্মঠদের মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করার চিন্তাভাবনা চলছে, যারা নির্বাচনের আগে সরকারের ইমেজ বৃদ্ধিতে কাজ করতে পারবেন।
এসব বিবেচনায় শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ডা. দীপু মনি, ড. হাছান মাহমুদ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মাহাবুবুল আলম হানিফের মতো মাঠের নেতাদের মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্তির সম্ভাবনা বেশি। ১৪ দল থেকেও মঈন উদ্দিন খান বাদল, শিরিন আক্তার, ফজলে হোসেন বাদশার মন্ত্রিসভায় অর্ন্তভুক্তির সম্ভাবনার কথা শোনা গেছে। তবে শেষ পর্যন্ত মন্ত্রিসভা রদবদল করা না করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর হাতে। তিনি তাঁর দল ও সরকারের জন্য যেটা ভালো মনে করবেন, সেটাই করবেন। ইতিমধ্যে তিনি যে, এ ব্যাপারে হোমওয়ার্ক শুরু করেছেন, তাঁর কিছু আলামত পাওয়া গেছে। এ কারণেই, মন্ত্রিসভার রদবদলের গুজব নতুন করে শুরু হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.