যে কারনে ব্রিটেন থেকে বিতাড়িত হচ্ছেন তারেক জিয়া

চপল লন্ডন থেকে ॥ শরণার্থী হিসেবে লন্ডনে থাকার শর্ত ভঙ্গ করেছেন তারেক জিয়া। এজন্য তদন্ত শুরু করেছে ‘স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড’ সহ ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা। সুনির্দিষ্ট পাঁচটি অভিযোগ নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। তদন্তে একটি অভিযোগ প্রমাণিত হলে যুক্তরাজ্য ত্যাগ করতে হবে তারেক জিয়াকে। ইতিমধ্যে ইন্টারপোলের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার তারেককে চেয়েছে।

তারেক জিয়া লন্ডনে চিকিৎসার জন্য গেলেও এখন আছেন শরণার্থী হিসেবে। ব্রিটিশ আইন অনুযায়ী শরণার্থীদের জন্য রয়েছে সুনির্দিষ্ট কিছু বিধি নিষেধ। এসব বিধি নিষেধের অন্যতম হলো, কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করা যাবে না। চলাফেরা থাকবে সীমিত। বিতর্কিত কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর সঙ্গে প্রকাশ্যে বা গোপনে কোনো বৈঠক করা যাবে না। অর্থ প্রাপ্তির উৎস সন্দেহের উর্দ্ধে থাকতে হবে। গত মে মাসে ব্রিটিশ সরকারের কাছে ১৫ জন এমপি তারেক রহমানের সন্দেহজনক চলাফেরা এবং অর্থায়নের বিষয়ে অভিযোগ করেন। তাঁরা অভিযোগ করেন, তারেক লন্ডনে এমন কিছু ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, যাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসীদের মদদ দেওয়া এবং অর্থনৈতিক সহায়তা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এদের মধ্যে অন্যতম হলো ব্রিটেনে নিষিদ্ধ ঘোষিত ‘মুসলিম ব্রাদারহুড’।

ব্রিটেনে মুসলিম ব্রাদারহুড জঙ্গি অর্থায়নের অভিযোগে অভিযুক্ত। এই সংগঠনের প্রধান জঙ্গি অর্থায়নের অভিযোগে দণ্ডিত। মুসলিম ব্রাদারহুডের অর্থ সিরিয়ায় আইএসকে পাঠানো হয় বলে ব্রিটিশ গোয়েন্দারা প্রমাণ পেয়েছে। মুসলিম ব্রাদার হুডের একাধিক নেতার সঙ্গে তারেক জিয়ার একাধিক বৈঠকের খবর পাওয়া গেছে। এছাড়াও লন্ডনে তারেক জিয়া পাকিস্তান দূতাবাসের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন। গত ১৪ আগস্ট ‘পাকিস্তান দিবস’ উপলক্ষে পাকিস্তানি দূতাবাসের অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত ছিলেন। একজন শরণার্থী এভাবে কূটনৈতিক দাওয়াতে যেতে পারেন না। এছাড়াও পাকিস্থান দূতাবাসের গোয়েন্দা কর্মকর্তা ফাহিমউল্লাহ আনসারী নিয়মিত তারেক জিয়ার সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করেন।

ব্রিটিশ গোয়েন্দারা, তারেক জিয়ার আয়-ব্যয়ের মধ্যেও বিস্তর ফারাক পেয়েছেন। তারেকের লন্ডনে কোনো বৈধ আয় নেই, অথচ তাঁর জীবনযাপন বিলাসবহুল। গত ৩১ জুলাই ব্রিটিশ সিকিউরিটি এ ব্যাপারে তারেক জিয়াকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে। ৩১ আগস্টের মধ্যে তারেককে এই নোটিশের জবাব দিতে হবে। এই জবাব যদি সন্তোষজনক না হয় তাহলে তারেক ব্রিটেনে থাকার অধিকার হারাবেন। আইন অনুযায়ী তাঁকে ব্রিটেন থেকে বহিষ্কার করা হবে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ মানি লন্ডারিং মামলায় তারেক ৭ বছরের কারাদণ্ড পেয়েছেন। আইনের চোখে পালাতক থাকায় এখনো তারেক ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.