বিএনপিতে ক্যু, ছেলের কাছে ক্ষমতা হারালেন খালেদা

বিশেষ প্রতিবেদক: বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার লন্ডন সফরের মধ্যেই নীরবেই ক্যু হয়ে গেল দলটিতে। খালেদা জিয়ার সব ক্ষমতা দখল করে নিলেন তারেক তারেক রহমান। সিদ্ধান্ত হলো এখন আর সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান থাকবেন না তারেক জিয়া। হবেন নির্বাহী চেয়ারম্যান অথবা কো চেয়ারম্যান। দলের সব সিদ্ধান্তই হবে তাঁর নির্দেশে।
জানা যায়, চিকিৎসার কথা বলে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া লন্ডনে গিয়েছিলেন আসলে পুত্র তারেক জিয়ার সঙ্গে সমঝোতা করতে। কিন্তু সমঝোতার বদলে তিনি ক্ষমতা হারালেন। বিএনপির শীর্ষ অঙ্গসংগঠনগুলো, যেমন ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল তারেক জিয়ার নিয়ন্ত্রণে। স্থায়ী কমিটিতে বেগম জিয়ার ক্ষমতা থাকলেও এই সব অঙ্গসংগঠনের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস স্থায়ী কমিটির নেতাদের নেই। কয়েকজন সিনিয়র নেতাকে বেগম জিয়া সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন, পুত্রকে বোঝাবার জন্য। কিন্তু তাঁদের পাত্তাই দেননি তারেক জিয়া। ফলে, সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে বেগম জিয়া দেশে ফিরলে, সেটাই করবেন, যেটি তারেক জিয়া চান। এর ফলে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সমঝোতার সম্ভাবনা অনেক কমে গেল বলে বিএনপি শীর্ষ নেতারা মনে করছেন। কারণ, তারেক জিয়া শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাবার ব্যাপারে একেবারেই রাজি নন। সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন, ষড়যন্ত্র, নাশকতা ইত্যাদি যেকোনো কৌশলে সরকারকে হটানোর নীতিতে বিশ্বাসী তিনি। তারেক লন্ডনে সিনিয়র নেতাদের বলেছেন, ‘নির্বাচন নিয়ে ভাবার দরকার নেই। আগে শেখ হাসিনাকে হটান।’ তারেক মনে করেন, ২০১৪ সালে বিএনপির অনেক সিনিয়র নেতা বেঈমানী করেছেন।, এজন্যই কাঙ্খিত বিজয় অর্জিত হয়নি। এবার তারেক সিনিয়র নেতাদের সাইড লাইনে বসিয়ে রেখে আন্দোলন করতে চান।
তারেকের সঙ্গে বৈঠক করে আসা বিএনপির একজন শীর্ষ নেতা বলেছেন, আদালত, আন্দোলন এবং ষড়যন্ত্র এই তিন কৌশল নিয়ে এগুতে চান তারেক জিয়া। তাঁর মতে, কিছুদিনের মধ্যেই এই কৌশলের বাস্তব প্রয়োগ দেখা যাবে। অক্টোবরে হাইকোর্ট খুললেই, সরকারের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হবে। আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়া হবে। আর দেশকে অস্থির করে তুলতে চালানো হবে নানা নাশকতা। বিএনপির ওই নেতা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এর ফলে বিএনপি অস্তীত্বের সংকটে পড়বে। একথা তারেক জিয়াকেও তিনি বলেছেন। উত্তরে তারেক বলেছেন, ‘এর চেয়ে খারাপ আর কি হতে পারে।’
বেগম জিয়া দেশে এসেই নির্দলীয় সরকার (অর্থাৎ শেখ হাসিনাকে বাদ দিয়ে) ছাড়া নির্বাচনে না যাওয়া সংক্রান্ত সহায়ক সরকারের রূপরেখা ঘোষণা করবেন। ওই রূপরেখায় প্রধান দাবি হবে, নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার সরে যাওয়া। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাও আহ্বান করা হবে, যেখানে গঠনতন্ত্র সংশোধন করে তারেক জিয়াকে নির্বাহী চেয়ারম্যান করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.