আসক্তির উপাদান এখন মিডিয়া

এইতো ডিজিটাল যুগের কল্যাণে এবং উন্নয়ন ও উন্নত ইন্টারনেট এর সুফল ভোগ করার নিমিত্ত্¦ে আজ আমরা নেশার, পেশার এমনকি জিবনের সকল প্রয়োজনের বিসর্জন দিতেও প্রস্তুত হয়ে আছি। জানেন তো সবাই তারপরও বলব এই আসক্তির নামটি কি? তা হলো সকল প্রকার মিডিয়া তবে এই মুহুর্তে¦ স্যোসাল মিডিয়াই প্রধান্য পাচ্ছে আমাদের জনজীবনে। এই মিডিয়া প্রিতীর কারণে নষ্ট হচ্ছে আমাদের অজ¯্র সময় ও সম্পদ, বিপন্ন হচ্ছে জীবনের উর্বর সময়গুলো। বিনষ্ট হচ্ছে পারিবারিক বন্ধন। জড়িয়ে পড়েছি নানাবিধ অনৈতিক কর্মকান্ডে।

এহেন পরিস্থিতিতে এই স্যোসাল মিডিয়ার দ্বারা কল্যাণের চেয়ে অকল্যানই বেশী হচ্ছে। ভাল কাজগুলো এমনকি সত্য ও সত্যের দৃষ্টান্তগুলো খুব কমই প্রসারিত এবং প্রচারিত হচ্ছে। মিথ্যা এবং এর দোসরগুলো বা সকল অপসংস্কৃতিগুলোই বেশী প্রধান্য পাচ্ছে এবং জনমনে ভীতির কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। সমাজে ছড়াচ্ছে বিভ্রান্তি। ভীতি ও বিভ্রান্তিগুলো এমনকি অপসংস্কৃতির আগ্রাসী মনোভাবের বহি:প্রকাশ দ্রুতই ছড়িয়ে পড়েছে সারা দুনিয়া। ভাল কাজ বা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিও যতই পরিবর্তন হউক না কেন; তার প্রচার ও প্রসার খুবই কম। কিন্তু নেতিবাচক সকল দৃষ্টিভঙ্গির প্রভাব এখন সমগ্র দুনিয়া জুড়ে চষে বেড়াচ্ছে আমাদের এই ডিজিটাল উন্নয়নের কল্যাণে। কেউ কি দেখার আছেন ঐ সকল নেতিবাচক বিষয়গুলো?

অতিরিক্ত কথন, লিখন ও পোষ্টের কারণে এখন সকল নেতিবাচক বিষয়গুলোই ইতিবাচক বিষয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে। আর ইতিবাচক বিষয়গুলো এক এক করে হারিয়ে যেতে বসেছে। হয়ত এখন আমাদের চোখের রঙ্গিন ও মোটা পর্দার কারণে দেখতে না পেলেও এমনকি উপলব্দিতে স্থান দিয়ে বিশ্বাস করাতেও পারি না। তাই সময় আসছে যার জন্য আমাদেরকে চরম মূল্য দিতে হবে। তখন মায়াকান্না বা গভীর উপলব্দি করে কোন লাভ হবে না বরং এই সব বিষয় নিয়ে ভেবে ভেবে গুরুত্বপূর্ণ সময়ই নষ্ট হবেই বৈকি।
সবাই আমরা লেখক, বিশ্লেষক এবং উপদেশক। সেই জন্যই এখন সমাজে ঘরের খুনসুটি থেকে শুরু করে সমস্ত বিষয়গুলো এই অগ্রসরমান মিডিয়ার কল্যানে মানুষের নখদর্পে। কিন্তু কি এই হওয়ার কথা ছিল? কেন আমরা বুঝতে পারিনা এই বিষয়টি? একটু ভাবুনতো একটি ঘটনার বর্ণনা বা বাস্তব কি আমাদের সম্মান বৃদ্ধি করছে, না আসম্মানের পাল্লা ভারি করে যাচ্ছে। দিন দিন ক্ষুদ্র থেকে বৃহৎ সকল ব্যাপারই আমরা শেয়ার করি; আর এই শেয়ারই ছড়িয়ে পড়ে আমাদের সমগ্র বিশ্বে। খুব অল্প সময়েই সারা বিশ্বে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। যদি ইতিবাচক হয় তাহলে মহা আনন্দ কিন্তু নেতিবাচক হলে খুবই দু:খের।

আমাদের ভাবার সময় এসেছে… কোন ছবি বা কোন গল্পটি বা তথ্যটি এই বহুল প্রচারিত জনবহুল মিডিয়ায় উপস্থাপন করব। আর এতে করে কার কার উপকার ও অপকার হবে। কিভাবে এর ফলপ্রসুতা ঘরে তুলতে পারবো। আমাদের গুরুত্বপূর্ণ সময়কে উৎপাদনমুখী এমনকি উন্নয়ন কর্মকান্ডে অংশীদারী মনোভাবে ব্যবহার করতে পারবো। যদি এখন এই পরিবর্তন আনয়ন করতে না পারি তাহলে হয়তো অতি অল্প সময়ই আমরা প্রতিযোগীতার সঙ্গে টিকে থাকতে না পেরে উন্নয়নের সিড়ি থেকে বিচ্যুত হবো।

যদি এই যুগের চাহিদা বুঝে এগিয়ে যেতে না পারি তাহলে আমাদের সামনে আরও কঠিন অন্ধকার অপেক্ষা করে আছে। আমরাই পারি এবং পারব ও করে দেখাবো বলার আর কোন সুযোগ অবশিষ্ট থাকবে না। তাই সকল কাজের কাজি এবং কাজ ফুড়োলে পাজির ভুমিকায় না থেকে উপযুক্ত বিষয়ের দিকে দৃষ্টি দেয়া আবশ্যক।

আমরা কত উন্নত যুগে আজ পৌঁছে গেছি তার খবর রাখেন কি? না হলে আজই রাখুন। এখনই সব শেষ হচ্ছে না হবে হয়ত আগামীতে। একটি পরিবারের পাতিলে পাতিলে টক্কর বা ধাক্কা লাগা থেকে শুরু করে বাসর রাতের গল্প বা নতুন বৌ এর দাম্পত্য জীবনের ছবি এমনকি ভিডিওও আজ চাউর হচ্ছে এই স্যোসাল মিডিয়ায়। পৃথিবীর এই প্রান্ত হয়ে ঐ প্রান্ত গিয়ে পৌঁছে যাচ্ছে। কারন একটি রয়েছে এর মধ্যে; সেই কারণটি এখনো উদঘাটিত হয়নি। হয়েছে মাত্র ভাষাগত জটিলতার। এই জটিলতার অবসান ঘটেছে ছবি ও ভিডিউর চুলছেড়া বিশ্লেষণে। তবে ভাষার প্রাচুর্যতা এবং বর্বরতাও এখন এগিয়ে যাচ্ছে সমান তালে। তবে অনুবাদের ভুমিকার যারা; তারাও কি কম?

আসুন দেশ গঠনে, নিজের ভবিষ্যৎ সাজাতে এমনকি নিজের চরকায় তেল দিতে প্রস্তুতি নেই। চিলে কান নিয়েছে ভেবে কানে হাত না দিয়ে চিলের পিছে না দৌঁড়াই। সামনে এগিয়ে যাওয়ার সময় এখনই। ইতিবাচক হই এবং এই ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির চর্চা করি। কারো পিছনে না লেগে সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় লিপ্ত থাকি। অন্যের সমালোচনা না করে নিজের সমালোচনায় জোড় দেই। অতিতের ন্যায় স্যোসাল মিডিয়া বিমুখ না হয়ে প্রয়োজনীয় বিষয়ের অনুসন্ধান করি এবং প্রয়োজনকে নিয়ে অগ্রসর হই। সমাজ, দেশ, জাতি এবং বিশ্ব যে দায়িত্ব দিয়েছে সেই দায়িত্বের ন্যুন্যতম পালন করতে চেষ্টা করি। সর্বপরি সৃষ্টিকর্তার অভিপ্রায় বাস্তবায়নে অগ্রসর হই।

Leave a Reply

Your email address will not be published.