রাশিয়ার বিদায়ী কনস্যূল জেনারেলকে চসিক মেয়র নাছিরের সংবর্ধনা

রায়হান, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি॥ বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু রাশিয়া। ১৯৭১ সনে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে রাশিয়া বাংলাদেশের মানুষের কাছে চিরস্মরণীয় রাষ্ট্র। স্বাধীনতার পর দেশ পুর্নগঠন এবং বন্দর সচল করার ক্ষেত্রে বন্ধু প্রতীম রাশিয়ার ভূমিকা বাংলাদেশ চির স্মরনীয় করে রেখেছে। গত ১৭ সেপ্টেম্বর দুপুরে আন্দরকিল্লাস্থ নজির আহমদ সড়কস্থ মেয়রের বাসভবনে চট্টগ্রামস্থ রাশিয়ার কনস্যূল জেনারেল মান্যবর ওলেগ পি বয়কো গৎ. ঙষবম চ. ইড়ুশড় কে বিদায়ী সংবর্ধনা দিল চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন। এতে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মুহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান। অনুষ্ঠানে রাশিয়ান দূতাবাসের কর্মকর্তা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন স্থপতি আশিক ইমরান, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা মিসেস নাজিয়া শিরিন, মেয়রের একান্ত সচিব মো. মঞ্জুরুল ইসলাম, নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মিসেস সনজিদা শরমিন, স্পেশাল ম্যাজিষ্ট্রেট মিসেস জাহানার ফেরদৌস, ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ শফিকুল মন্নান সিদ্দিকী, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আলী, জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবদুর রহিম সহ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বিভাগীয় প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন বিদায়ী রাশিয়ার কনস্যূল জেনারেল মান্যবর ওলেগ পি বয়কো গৎ. ঙষবম চ. ইড়ুশড় কে ফুল, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মনোগ্রাম খচিত ক্রেষ্ট ও উপহার সামগ্রী দিয়ে বিদায় জানান। বিদায়ী রাশিয়ার কনস্যূল জেনারেল মান্যবর ওলেগ পি বয়কো (গৎ. ঙষবম চ. ইড়ুশড়), রাশিয়ার কিছু উপহার সামগ্রী মেয়রকে প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, রাশিয়া বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু। মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে আজোবধি রাশিয়া বাংলাদেশের মানুষের পাশে আছে। তিনি বলেন, বন্ধুপ্রতিম দেশ হিসেবে রাশিয়ার সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা-চিকিৎসা সহ নানা বিষয়ে পারস্পরিক গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান। এছাড়াও তথ্য প্রযুক্তিসহ নানা বিষয়ে রাশিয়ার সাথে বাংলাদেশের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনে রাশিয়ার অবদান স্মরনীয় হয়ে থাকবে। রেডিমেন্ট গার্মেন্টস্ রাশিয়ার বাজারে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে রয়েছে। এছাড়াও চট্টগ্রাম থেকে রাশিয়ায় অসংখ্য শিক্ষার্থী লেখাপড়ার সুযোগ পাচ্ছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের পর দেশ পুর্নগঠনে এবং বন্দর সচল করার ক্ষেত্রে রাশিয়ার অবদান বাংলাদেশ চিরদিন কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরনে রাখবে। দীর্ঘ সময় চট্টগ্রামে কূটনৈতিক এর দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে চট্টগ্রামস্থ রাশিয়ার কনস্যূল জেনারেল মান্যবর ওলেগ পি বয়কো গৎ. ঙষবম চ. ইড়ুশড়, এর সাথে চট্টগ্রামের মানুষের মধ্যে গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। যা কোনদিন ভুলার নয়। অবসর জনিত কারনে বাংলাদেশ ছেড়ে গেলেও ওলেগ পি বয়কো বাংলাদেশের মানুষের কথা স্মরন করবে বলে মেয়র আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বিদায়ী চট্টগ্রামস্থ রাশিয়ার কনস্যূল জেনারেল মান্যবর ওলেগ পি বয়কো গৎ. ঙষবম চ. ইড়ুশড় বলেন, ১৮ বছর থেকে দু’বছর বাধ্যতামূূলক সামরিক বাহিনীতে থাকাকালীন সময় থেকে তিনি বাংলাদেশ সম্পর্কে জানতে পারেন। তিনি চট্টগ্রামের মেয়রকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, নানা প্রতিকুলতায় দায়িত্বপালন করে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ইতোমধ্যে নগরবাসীর নজর কেড়েছেন। অসুস্থতা স্বত্বেও নিজ বাসভবনে তাঁকে সংবর্ধনা দেয়ায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, এতেই রাশিয়ার সাথে বাংলাদেশের চিরস্থায়ী বন্ধুত্বের গভীরতা প্রমানিত হয়। রাশিয়ার কনস্যুল জেনারেল তাঁর জীবনের বিচিত্র অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, তাঁর কূটনৈতিক জীবনের দীর্ঘ সময়ে ৩৭ বছর চাকুরী জীবনে ৬০ টি দেশ ঘুরে দেখেছেন। বাংলাদেশের চট্টগ্রামে আসার পূর্বে কানাডায় দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশে থেকে দায়িত্ব পালনকালীন সময়কে তাঁর জীবনে স্মরনীয় বলে অবহিত করেন। প্রসঙ্গক্রমে এ রাষ্ট্রদূত বলেন, ১৯৭১ সনে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি পুতিন এর অবদান সম্পর্কে তিনি জানতেন। তিনি বলেন, আজ থেকে ২৫ বছর পূর্বে রাশিয়া বিভক্ত হলেও তার শক্তি বিন্দু পরিমান কমেনি। পৃথিবীর জটিল পরিস্থিতিতে রাশিয়া ধৈর্য্যের সাথে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে। কোন রাষ্ট্রের উপর রাশিয়ান নীতি চাপিয়ে দেয়া হয় না বা জবর দখল করার নীতিতে বিশ্বাস করে না। রাশিয়া পৃথিবীর বিপদগামী মানুষের পাশে থেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। তিনি রূপপুর পারমানবিক বিদ্যূৎ কেন্দ্র প্রসঙ্গে বলেন এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ১২ শত মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হবে। ২০২২ সনের মধ্যে বাংলাদেশের এ প্ল্যান্টটি চালু হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.