বিদ্যুৎ বিভাগের আরইওআই বিজ্ঞপ্তি নিয়ে বেসিসের প্রতিবাদ

তাজুল ইসলাম নয়ন॥ বিদ্যুৎ বিভাগের অধীন পাওয়ার সেলের এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্ল্যানিং (ইআরপি) সিস্টেম সরবরাহ ও ইনস্টলেশনের জন্য ইআরপি সরবরাহকারী এবং বাস্তবায়নকারী হিসেবে অন্তর্ভুক্তির জন্য গত ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে দুটি শর্তের বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)।
পাওয়ার সেলের প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে ৮ ও ৯ নম্বর শর্তে রয়েছে, ইআরপি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে বিগত ১০ বছর ধরে প্রতিবছর কমপক্ষে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় থাকতে হবে ও কমপক্ষে ১ বিলিয়ন ডলারের তারল্য সম্পদ (লিকুইড অ্যাসেট) থাকতে হবে।
পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে বেসিস জানিয়েছে, সরকার ২০২১ সাল নাগাদ বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাত থেকে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, সেখানে মাত্র একটি ইআরপি সফটওয়্যার সরবরাহকারীর জন্য ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের আয় দেখানোর শর্ত অবান্তর। বাংলাদেশে বিশ্বমানের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ইআরপি সফটওয়ার তৈরি ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান থাকা সত্ত্বেও  বর্ণিত দুটি শর্ত পূরণ করে স্থানীয় সফটওয়্যার কোম্পানির পক্ষে সরবরাহকারী ও বাস্তবায়নকারীদের হিসেবে আরইওআই’তে অংশ নেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব হবে না। এই ধরনের শর্তাবলী বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সমপ্রতিযোগিতার সুযোগ দিচ্ছে না। এই ধরণের শর্তের কোনো প্রয়োজনীয়তাই নেই। বেসিস মনে করে, বিদেশি কোনো প্রতিষ্ঠানকে বাড়তি সুবিধা দেয়ার জন্যই উক্ত দুটি বিষয় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।
চিঠিতে বেসিস আরও জানায়, বাংলাদেশ সরকার ও দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের প্রধান লক্ষ্য ও অঙ্গীকার হলো স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে তথা ২০২১ সাল নাগাদ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলা। সরকারের সকল মন্ত্রণালয়, বিভাগ এবং অন্যান্য দপ্তর ডিজিটাইজেশন বা অটোমেশনের মাধ্যমেই কেবলমাত্র সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে। বেসিসের সহস্রাধিক সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের সরকারি-বেসরকারি সকল ডিজিটাইজেশন ও অটোমেশন করার প্রয়োজনীয় সকল দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা রয়েছে। কেবলমাত্র বিদেশি কোম্পানিকে দিয়ে সরকারের অটোমেশন বা ডিজিটাইজেশন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হলে দেশীয় সফটওয়্যার শিল্পের প্রকৃতপক্ষে কোনো প্রবৃদ্ধি ঘটবে না।  সেক্ষেত্রে ক্রমবিকাশমান এ শিল্পের উন্নয়ন মারাত্মকভাবে বাঁধার সম্মুখীন হবে।
তাই দেশিয় কোম্পানি যাতে সম-প্রতিযোগিতার মাধ্যমে অংশগ্রহণ করতে পারে সেজন্য উপরোক্ত শর্তাবলী বাতিল করে নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য পাওয়ার সেলকে অনুরোধ জানিয়েছে বেসিস। ইতিমধ্যেই চিঠির অনুলিপি বিদ্যুৎ, জালানি এবং খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী, আইসিটি প্রতিমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ঠ কয়েকটি সরকারি দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.