বাস্তবের একটি উপলব্ধি …

সুমি রোজারিও॥ পরিচিত একজন মেয়ে ভালো চাকরি করা অবস্থায় নিজের পছন্দে বিয়ে করল, একটি মধ্যবিত্ত এবং শিক্ষিত ফ্যামিলিতে যাওয়ার জন্য বেশি ভাবতে হয়নি তাকে, কিন্তু বিয়ের কিছু দিনের মাথায় ভ্রম কাটলো তার …ছেলে আর তার মায়ের মাঝে যোজন যোজন দূরত্ব যা কিনা তার অন্য সন্তানদের সাথে নেই …স্বভাবতই মা ছেলের ওই দূরত্বের বলি হয় বৌ নামের মেয়েটি …সকল দিক থেকে হাজার গুন ভালো হয়েও নিজের পরিবার খুঁজে পায়না সেই মেয়ে , কোথায় যেন তারছেড়া, হাজার চেষ্টায় জোড়া লাগাতে পারে না, চাকরির সুবাদে দেশের প্রথম সারির নাগরিক হওয়া স্বত্তেও ক্রমাগত অপমান, অবহেলা আর অত্যাচার তাকে দিশাহীন করে তোলে …এক সময় সে উত্তর খুঁজতে থাকে কেন এমন হল , উত্তর খুঁজে পায় সে —
তার শ্বাশুড়ি নামক মায়ের বিয়ে হয়েছিল অনেক ছোট বয়সে এবং তার চেয়ে বয়সে অনেক বড় এক আপাদমস্তক ভালো মানুষের সাথে কিন্তু পুতুল খেলার বয়সে তাকে হাড়ি পাতিল আর যৌথ সংসারের খেলায় মেতে উঠতে হয়েছিল, তার ছি বুড়ি খেলার বয়সে ছেলের কাঁথা শুকাতে হয়েছিল আর তার বাবার এমন চরম ভুলের যাঁতাকলে পড়ে একটা মেয়ে তার শৈশব হারায় আর একটা ছেলে মায়ের আদর হারায় …না ছেলেটির মা মরে যায়নি কিন্তু তার সমস্ত হেরে যাওয়া , না পাওয়ার ক্ষোভ পরে ওই বাচ্চাটির ওপর কারণ সেই তার একমাত্র কেউ যার ওপর আর কারো অধিকার নেই … সুতরাং ছেলেটির ছোট বয়সের দুরন্তপনা মা মেনে নিত না কিছুতেই, বাচ্চার ওপর মায়ের শাররীক নির্যাতন, মানসিক নির্যাতন ছেলে আর মাকে দূরে সরিয়ে দেয় এতোই দূরে যা আজো ঘোঁচেনি…এভাবেই বেড়ে ওঠা বাচ্চাটি পরিবার থেকে ধীরে ধীরে দূরে সরে যায়
এই গল্পের অবতারণা এই জন্যে যে আজকের ষোলো বছরে বিয়ে হয়ে যাওয়া মেয়েটি কিন্তু বিশ বছর পরে এই রকম মা বা শ্বাশুড়ী ই হত শুধু …এই বিয়ের দায়ভার কি তার? নাকি তার পরিবারের? পনেরো ষোলো বছরের একটা বাচ্চা কতটুকু খারাপ হতে পারে ? বাল্যবিবাহ কি শাস্তিযোগ্য নয়, যে বিয়ের আইনি বৈধতা নেই তার জন্য কাউকে বিবাহিত বলা যায়?
মেয়ে তোমার মানসিক শক্তিকে আমি সাধুবাদ জানাই, আশা রাখি জীবনের এই বাঁক থেকেও তুমি শিক্ষা নিবে এবং ভালো কাজে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবে ….।

Leave a Reply

Your email address will not be published.