তৌহিদুল ইসলাম টিপু॥ নিবন্ধন পরিদপ্তরের অনলাইন ব্যাংকিং সিস্টেমে নিবন্ধন ট্যাক্স ও ফি গ্রহণে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, ইনস্টলেশন ও ব্যবস্থাপনার জন্য সফটওয়্যার কোম্পানি থেকে ইওআই জমাদানের জন্য গত ২৬ সেপ্টেম্বর একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে পাঁচটি শর্তের বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ইওআই প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে কমপক্ষে ১০০টি সরকারি খাতে অনলাইন কম্পিউটারাইজড ট্যাক্স, রেভিনিউ সংগ্রহ এবং কমপক্ষে ৫০টি অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ডিস্ট্রিক্ট-এ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে বা চলমান থাকতে হবে। একইসাথে একটি কনট্যাক্টে কমপক্ষে ১০০ কোটি টাকার কাজ করতে হবে। পাশাপাশি কমপক্ষে পাঁচটি শিডিউল ব্যাংকের সাথে চুক্তি ও কমপক্ষে ১০০ কোটি টাকার লিকুইড অ্যাসেট থাকতে হবে।
নিবন্ধন পরিদপ্তরের মহাপরিদর্শক নিবন্ধন বরাবর পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, সরকার ২০২১ সাল নাগাদ বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে থেকে ৫০০ কোটি টাকা রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, সেখানে উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে আরোপিত শর্তগুলো অবান্তর বলে মনে করে বেসিস। বাংলাদেশে বিশ্বমানের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সফটওয়ার তৈরি ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান থাকা সত্ত্বেও বর্ণিত শর্তগুলো পূরণ করে স্থানীয় সফটওয়্যার কোম্পানির পক্ষে ইওআইতে অংশ নেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব হবে না। এই ধরণের শর্তাবলী বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠানগুলোর সমপ্রতিযোগীতার সুযোগ দিচ্ছে না এবং প্রতিয়মান হচ্ছে যে, বিদেশি কোনো প্রতিষ্ঠানকে বাড়তি সুবিধা দেয়ার জন্যই অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। তাই বেসিস মনে করে এই ধরণের শর্তের কোনো প্রয়োজনীয়তাই নেই।
চিঠিতে বেসিস আরও জানায়, বাংলাদেশ সরকার ও দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের প্রধান লক্ষ্য ও অঙ্গীকার হলো স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে তথা ২০২১ সাল নাগাদ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলা। সরকারের সকল মন্ত্রণালয়, বিভাগ এবং অন্যান্য দপ্তর ডিজিটাইজেশন বা অটোমেশনের মাধ্যমেই কেবলমাত্র সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে। বেসিসের সহস্রাধিক সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের সরকারি-বেসরকারি সকল ডিজিটাইজেশন ও অটোমেশন করার প্রয়োজনীয় সকল দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা রয়েছে। কেবলমাত্র বিদেশি কোম্পানিকে দিয়ে সরকারের অটোমেশন বা ডিজিটাইজেশন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হলে দেশীয় সফটওয়্যার শিল্পের প্রকৃতপক্ষে কোনো প্রবৃদ্ধি ঘটবে না। সেক্ষেত্রে ক্রমবিকাশমান এ শিল্পের উন্নয়ন মারাত্মকভাবে বাঁধার সম্মুখীন হবে।
তাই দেশিয় কোম্পানি যাতে সম-প্রতিযোগিতার মাধ্যমে অংশগ্রহণ করতে পারে সেজন্য উপরোক্ত শর্তাবলী বাতিল করে নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য অনুরোধ জানিয়েছে বেসিস। ইতিমধ্যেই চিঠির অনুলিপি আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী, সিপিটিইউ মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ঠ কয়েকটি সরকারি দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।