মানবতাবাদী একবিংশ শতাব্দির ধর্মনেতা

popeসুচিত্রা বেহেরা॥ পোপের জন্য টিউশনিতে যেতে পারলাম না । কোন গাড়ি চলতে দিচ্ছে না শাহবাগ থেকে । লোকটা ভাল মানুষ বলে, কিছু কইলাম না । যখন মানুষের গলা কেটে বেহেস্তে যেতে উঠেপড়ে লাগা জিহাদি মোল্লা, রামরাজ্য কায়েমের ধান্দায় উন্মাদ হয়ে ওঠা ত্রিশুল ধারি গেরুয়া পুরোহিত, মানুষের মাংস খাওয়া বর্ণবাদী বার্মিজ বৌদ্ধ ভিক্ষু, লম্পট ইভাঞ্জেলিকাল প্রটেস্টাণ্ট নেতা ট্রাম্পের ক্রমাগত উস্কানিতে, ধর্ষক ইসরাইলি ইহুদি রাব্বি দের বর্বর কর্মকান্ডে পৃথিবী যখন হুমকির মুখে, তখন শতকোটি ক্যাথলিক খ্রিস্টানকে সঠিক পথে রাখতে সবচেয়ে বড় ভুমিকা এই মানুষটির। তার অসাধারণ লিবারেল ভুমিকায়-ই সিরিয়ান শরণার্থীরা ইউরোপে জায়গা পেয়েছে (অনেক জনগন মানতে চায় নি, পোপ ছিলেন শরণার্থীদের পক্ষে, এঞ্জেলা মারকেল কে প্রবল ভাবে সমর্থন দেন ১০ লাখ সিরিয়ান কে আশ্রয় দেয়ার কাজে, যেটা ইউরোপের অনেক জনগন ভালভাবে নেয়নি), মেক্সিকো -আমেরিকার মাঝে দেয়াল ওঠে নাই (তিনি বলেছিলেন দেয়াল তোলা খ্রিস্টানের কাজ না, দেয়াল ভেঙ্গে দেয়াই আমাদের দায়িত্ব ) । ফ্রান্স বা স্পেনের মত ক্যাথলিক দেশে এত বড় জঙ্গি হামলার পরও মুসলিমরা দাঙ্গার শিকার হয় নাই, যেখানে জনগন মুসলিম দেখলেই ফুঁসে উঠছিল।, কিন্তু ফ্রান্সিস বললেন জঙ্গিবাদ ধর্মীয় না, সন্ত্রাস ধর্মীয় না, অর্থনীতি-ই সন্ত্রাসের জনক। বাংলাদেশে যদি এই কাজটা খ্রিস্টানরা করতো, দেখা যেত কোন এক গ্রাম্য মোল্লার উস্কানিতে জনগন খ্রিস্টানদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে, আর কিছু লোক দাঙ্গাবাজদের প্রকৃত মুসলিম না বলে এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করছে। পোপ ষোড়শ বেনেদিক্ত এর মত একজন পোপ থাকলেই যে কি হত, সেটা উপরওয়ালা-ই জানেন, মুসলিমদের আর ইউরোপে থাকা লাগত না । যখন ইউরোপে অভিবাসী বিরোধী ঘৃণা চরমে, তখন তাকে দেখা গেল, কৃষ্ণাঙ্গ, সিরিয়ান, অবৈধ অভিবাসীদের পা ধুয়ে দিয়ে চুমু দিচ্ছেন। এর আগেও তিনি এমন করেছেন, আর্জেন্টিনায় এইডস রোগীদের ঘৃণা করা হত, কিন্তু তিনি ওইসব হতভাগ্য মানুষের পায়েও চুমু দিয়েছেন। ভিক্টর হুগোর লা মিজারেবল বা আঙ্কেল টম কেবিনের কথা মনে পড়ে যায়। কিছু মানুষ সত্যিই স্বর্গীয় অনুভুতির জন্ম দেন ।
একবিংশ শতাব্দির একজন যথার্থ দায়িত্বশীল ধর্মনেতা, এবং তার চাইতেও বেশি মানবতাবাদী ।

Leave a Reply

Your email address will not be published.