“অন্তঃসত্ত্বা নারীর পরিবারের কেউ তাঁকে নিতে আসেনি”

প্রশান্তি ডেক্স॥ “অন্তঃসত্ত্বা নারীর পরিবারের কেউ তাঁকে নিতে আসেনি”। সৌদি আরব থেকে ফিরে আসা নারী জানালেন। তাঁর সঙ্গে কী করা হতো তিনি জানতেন না !
বছরের শুরু থেকে হিসাব করলে এই নারীর সংখ্যা প্রায় ১ হাজার ৪০০। সৌদি আরব থেকে গত শনিবার রাতে দেশে ফিরে পরিবারের কাছে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এক নারী গৃহকর্মী। এর কারণ, তিনি পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তিনি ধারণা করছেন, পরিবার কিছুতেই তাঁকে গ্রহণ করবে না। আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী—া সবাই তাঁকে ‘খারাপ মেয়ে’ বলবে।pragnent wimen family are not received
ওই নারীর সঙ্গেই দেশে ফেরা আরেকজন বাংলা প্রায় ভুলেই গেছেন। তবে আরবিতে যা বলছেন, সেটিও সম্পূর্ণ বাক্য হয় না। বেশির ভাগ সময় অসংলগ্ন কথা বলছেন তিনি। কাছে যাকে পাচ্ছেন, তাকেই জড়িয়ে ধরছেন। মানসিক ভারসাম্য প্রায় হারিয়ে ফেলা এই নারী বলছিলেন, তিনি আবার সৌদি আরব যাবেন এবং ওই দেশের মানুষকে ভালো করবেন। আবার কখনো বলছিলেন, তিনি কোনো অপরাধ করেননি। অন্যরা তাঁর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছে। এ রকম অসংগলগ্ন অনেক কথার ফাঁকে বারবার বলছিলেন, তাঁর কোমরে ইনজেকশন দেওয়া হতো। তাঁর সঙ্গে কী করা হতো তা জানতেন না তিনি।
সৌদি আরব থেকে ফেরত আসা আরেক নারী পাবনার রেহানা। তিনি বললেন– ভাগ্য ভালো, কেউ তাঁর ‘সম্মান’ নষ্ট করেনি।
গত রোববার দুপুরে রাজধানীর আশকোনায় বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের লার্নিং সেন্টারে গিয়ে সৌদিফেরত ওই তিন নারীর সঙ্গে কথা বলে প্রথম আলো। তাঁরা ৩ জনসহ ৪৩ জন নারী শনিবার রাতে সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছেন। মানসিক ভারসাম্যহীন নারী পরিবারের ঠিকানা বলতে পারছিলেন না। পরে তাঁর বাড়ির ঠিকানা খুঁজে বের করে পরিবারকে খবর দেন ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচির কর্মীরা। অন্তঃসত্ত্বা নারীর পরিবারের কেউ তাঁকে নিতে আসেনি। আর্থিকভাবে অসচ্ছল পরিবারের নারীরা ভাগ্য পাল্টানোর জন্য সৌদি আরবে গৃহকর্মীর কাজ করতে যাচ্ছেন। বিভিন্ন নির্যাতনের শিকার হয়ে এমনকি কেউ কেউ অন্তঃসত্ত্বা এবং মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় দেশে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন। এই নারীদের পাশে পরিবার, সমাজ, বেসরকারি সংস্থা ও রাষ্ট্রকে সমন্বিতভাবে দাঁড়াতে হবে।
অবাক করা তত্ত হচ্ছে, ফেরত আসার খবর পরিবারের সদস্যরাও অনেক সময় জানতেও পারেন না। সরকারের কোনো সংস্থা এখন পর্যন্ত এই নারীদের পাশে দাঁড়াচ্ছে না।
অভিবাসন খাতের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা বলছেন, বিদেশে গিয়ে কোনো নারী নির্যাতনের শিকার হলে তার দায় ওই নারীর নয়। পরিবারের সদস্যরাই ওই নারীকে কাজের জন্য বিদেশ পাঠিয়েছেন। কোনো কারণে ওই নারী দেশে ফেরত আসতে বাধ্য হলে পরিবারে সহযোগিতা সবচেয়ে বেশি দরকার।।
হায়রে বাংলাদেশ! আমাদের চাপা কান্না ছাড়া আর কিইবা করার আছে! আছে কি ?

Leave a Reply

Your email address will not be published.