রাশিয়া বিশ্বকাপে দেহ ব্যবসার ভয়াবহ বর্ণনা দিলেন এক কল গার্ল

আন্তর্জাতিক ডেক্স॥ রাশিয়ায় কিভাবে নারীদের পাচার করে নিয়ে যৌন ব্যবসায় নামানো হয় তার ভয়াবহ এক বর্ণনা দিয়েছেন মস্কো ভিত্তিক দাসত্ব বিরোধী সংগঠন অলটারনেটিভা’র ইউলিয়া সিলুয়ানোভা। বিশেষ করে এবার বিশ্বকাপ ফুটবল উপলক্ষ্যে এমন যৌন ব্যবসায় রাশিয়াতে বিপুল সংখ্যক নারীকে নেয়া হয়েছে পাচার করে এমনটা বিশ্বাস করেন অধিকার কর্মীরা।world cup prostitute
তাদের কেউ কেউ পেশাদার দেহব্যবসায়ী। আবার কিছু আছেন ফাঁদে পড়ে পাচারের শিকার হয়েছেন। ইউলিয়া একজন নারীর দুর্দশার কথা তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন, ওই নারীকে তিন দিন আটকে রাখা হয়েছিল একটি বাথরুমে।
এ সময় তাকে কোনো খাবার বা পানি দেয়া হয় নি। এমন পরিণতির শিকার হয়ে অনেক নারী বাধ্য হয়ে যৌন ব্যবসায় নামতে বাধ্য হচ্ছেন। গত বছর রাশিয়ায় কনফেডারেশনস কাপ চলাকালীন নাইজেরিয়া থেকে অনেক নারীকে পাচার করে নেয়া হয়েছে রাশিয়ায়।
এ বছরের শুরু থেকে এমন কমপক্ষে ২০ জন নারীকে মুক্ত করতে সহায়তা করেছে ইউলিয়ার সংগঠন অলাটারনেটিভা। এমনই একজন মুক্ত যুবতীর নাম প্রিসিয়াস। তিনি মস্কোর একটি স্থানীয় পত্রিকাকে বলেছেন, ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি রাশিয়া গিয়েছেন। নাইজেরিয়ার রাজধানী লাগোসে একজন নারীর সঙ্গে তার সাক্ষাত হয়েছিল।
তিনি তাকে বুদ্ধি দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, যদি তুমি রাশিয়া যাও তাহলে কলেজ ডিগ্রিটা নিতে পারবে। সে জন্য তোমাকে ৬ মাসের জন্য পতিতাবৃত্তি করতে হবে। এ থেকে যে অর্থ আয় হবে তা দিয়ে তোমার সব খরচ মেটাতে পারবে। ব্যস ওই কথায় রাজি হয়ে যান প্রিসিয়াস।
তিনি কয়েক বছর আগে কলেজের পড়াশোনা বাদ দিয়েছিলেন। কারণ, তিনি তখন সিঙ্গেল মা। চার সন্তানের মা। ফলে তাকে আয়ের পথেও নামতে হয়েছিল। বর্তমানে তার বয়স ২৬ বছর। তিনি ভেবেছিলেন রাশিয়া গেলে কোনো একটা জ্যাকপট রাউন্ডে বিজয়ী হবেন। তিনি বলেন, আমি দ্রুত একটি ভাল সমাধানের জন্য উদগ্রীব ছিলাম। এখন আমি সব স্বীকার করি।
প্রিসিয়াস এখন দৃশ্যত অনেকটাই হতাশ। তিনি পিছনের দিনগুলোতে ফিরে যান। বলতে থাকেন কিভাবে মস্কো পৌঁছার পর তার পাসপোর্ট কেড়ে নেন ওই নারী, যিনি তাকে মস্কোতে নিয়ে গিয়েছেন। তার পাসপোর্ট কেড়ে নিয়ে ওই নারী প্রিসিয়াসকে নিয়ে যান একটি এপার্টমেন্টে।
সেখানে আগে থেকেই ছিলেন ৬ জন নারী। সেখানে ঢুকিয়ে দেয়া হয় প্রিসিয়াসকে। তাকে বলা হয়, পাসপোর্ট ফেরত পেতে হলে তাকে ৪৫ হাজার ডলার উপার্জন করে দিতে হবে। তারপরই তাকে ফেরত দেয়া হবে পাসপোর্ট। এরপর তাকে যিনি রাশিয়া নিয়ে গিয়েছেন সেই নারী নিয়মিত তাকে প্রহার করতেন।
প্রিসিয়াস বলেন, ওই সময় আমাকে বাধ্য করা হয় দেহ ব্যবসায়। ভয় হতো। ভয় হতো আরো বেশি খদ্দেরের মনোরঞ্জন করতে হবে হয়তো। মাঝে মাঝেই আমাকে প্রহার করা হতো। কনডম ছাড়া শারীরিক সম্পর্ক গড়তে রাজি না হলে খদ্দেররাই তাকে প্রহার করতো।
তাকে যৌন নির্যাতন করতো। আবার এমনও আছে, তাদের মনোবাসনা পূরণ করার পর তারা তাদের দেয় অর্থ ফেরত নিয়ে নিতো। একবার প্রিসিয়াস প্রতিবাদ করার সাহস দেখান। এর জবাবে তার ওই খদ্দের তার সব পোশাক কেড়ে নেয়। তাকে শীতের ভিতরে ধাক্কা দিয়ে বাইরে পাঠিয়ে দেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published.