বিশাল বিজয় ও বিশাল দায়িত্ব

Vector-Smart-Object-1-300x127[1]টানা তৃতীয়বার ও চতুর্থবারের মত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে সরকার পরিচালনায় এগিয়ে যাচ্ছে। এই বিশাল দায়িত্বে শেখ হাসিনা চমকের পর চমক দেখিয়ে যাচ্ছেন। সরকার পরিচালনা দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি বিশ্ব দরবারেও শান্তি, স্থিতিশীলতা ও পরিকল্পনায় প্রাজ্ঞতার ছাপ রেখে যাচ্ছেন। হয়েছেন বিশ্বে চিন্তাবিদদের তালিকায় প্রথমদের একজন এবং এশিয়ায় গ্রহনযোগ্য নেতাদের তালিকায় প্রথম। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর বিশ্ব নেতাদের পাশাপাশি দেশীয় রাজনীতির ঘুণেধরাদেরও শিখিয়েছেন শান্তির বানি নিয়ে পথচলার জলন্ত ও জিবন্ত সবক। স্বার্স্থ্য ও শিক্ষাক্ষেত্রে যে বৈপ্লবিক উন্নয়ন সাধন করেছেন তা ধরে রাখার জন্য নতুন নতুন কৌশল নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে সরকার। নতুন সরকারের গতিশীলতার সাথে সাথে সরকারী অফিসগুলোতেও কাজের গতিশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
হয়রানী বলে একটি কথা প্রচলিত রয়েছে, আর সেই হয়রানির জায়গাগুলো চিহ্নিত করে এখনই পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে গেলে দুর্নামের গতিশীলতায় লাগাম টানা যাবে এবং দেশের ও সরকারের ভাবমূর্তী সমুজ্জ্বল থেকে আরো সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নেয়া যাবে। বিশেষ করে বিদেশী কর্মীদের নিরাপত্তা ছাড়পত্রের ক্ষেত্রে এবং ভিসা সংক্রান্ত পুলিশ ভ্যারিফিকেশনের ক্ষেত্রে জটিলতা দূর করে আরো সহজিকরণের ব্যবস্থা নিতে হবে। খরচের কথা বলে যে, অবৈধ টাকার লেনদেন হয় তা বন্ধ করতে হবে। নতুবা দুর্নীতির দুর্নাম বহি:বিশ্বে ঘুচানো সম্ভব হবে না। সরকারের আন্তরিকতায় ছেদ ঘটার সমুহ ক্ষেত্রের একটি হলো এই ভিসা এবং সিকিউরিটি ক্লিলিয়ারেন্সের ব্যবস্থায়। এসবি ও এন এস আইকে যদি খরচের টাকা দেয়া না হয় তাহলে নেগেটিভ বা আপত্তি দিয়ে রিপোর্ট দেয়া হয়। সেই ক্ষেত্রে সততা এবং সৎ মানুষগুলি বিপদে পড়ে এমনকি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এর বিরূপ প্রভাব বিস্তার করে। যার থেকে দেশী ও বিদেশী মিলে দেশ এবং সরকারের দূর্নামের আওয়াজ তুলে। সেই জন্যই এই জায়গাগুলি চিহ্নিত করে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নিয়ে এগুতে হবে।
ভিসা অফিসের বেহাল দশার অসহায়ত্ব থেকে মুক্ত করতে হবে। কারণ অবৈধ ব্যবসার প্রসার সাজিয়ে বিদেশীদের হয়রানী করে টাকা কামানোর পায়তারায় বিসর্জিত হচ্ছে সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডের সুনাম। আর তৈরী হচ্ছে দুর্নিতির বিশাল ফর্দ যা, দেশ ও সরকারের জন্য বিব্রতকর অবস্থার মূল কারণ। সুতরাং এই জায়গাগুলি ঠিক করার জন্য এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে। আমাদের সহায়তা অব্যাহত থাকবে এবং প্রয়োজনে ক্ষেত্রগুলো প্রমানসহ উন্নয়নের রাস্তা দেখানো হবে।
তৃণমূলের কথা ভাবনায় এনে কাজ করার যে প্রত্যয় দৃশ্যমান তা চলমান রাখার জন্য তৃণমূলের সমন্বয় ও সম্পৃক্ততা অতিব জরুরী। সেই ক্ষেত্রে মন্ত্রী, এমপিগণই এর সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করে এগিয়ে যেতে হবে। বাস্তবে দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখাতে হবে যাতে জাতি আশ্বস্ত হতে পারে যে, কথায় ও কাজে মিল রয়েছে। নতুবা বিরুপ আবহাওয়ায় পতিত হওয়ার সম্ভাবনাও জাগতে পারে। দুদকের অভিযান চলছে এবং চলবে কিন্তু পথিমধ্যে খেয় হারিয়ে ফেললে চলবে না। এর গতি সঞ্চার করে ধারাবাহিক ফলোআপ প্রয়োজন। যেখানে সমস্যা সেখানেই সমাধান এবং এর পিছনে জোরালো সমন্বয়ক ও ফলোআপ সংযুক্ত রেখে গতি তরান্বিত করতে হবে। কারো রোশের স্বিকার যেন কোন নিরীহ এবং নিরপরাধ ব্যক্তি না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
সামনে আসছে ঢাকা সিটি ও উপজেলা নির্বাচন। ঐ নির্বাচনেও বর্তমানের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হবে। নতুবা উন্নয়নের গতিশীলতায় ভাটা পড়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়ে যাবে। দলীয় শৃঙ্খলা, উপযুক্ত প্রার্থী বাছাই, ন্যায় পরায়নতার বৃত্তিতে নিরূপন করতে হবে। কর্মীবান্ধব নেতা হিসেবে স্বীকৃত হওয়ার লক্ষ্যে কর্মী ও সমর্থকদের সহায়তা এবং ভালবাসার বন্ধনে জড়িয়ে রাখতে হবে। অতি কথনের স্বীকারে পরিণত হওয়া থেকে নেতা কর্মী সমর্থক ও মন্ত্রী, এমপিদেরকে সতর্ক থাকতে হবে। জনগণ চায় কাজ এবং চিন্তার সমন্বয় ও উন্নয়নের সুফল। সুতরাং কথায় নয় কাজে বড় হতে হবে। নির্বাচনী মেনুফেষ্টে যা রয়েছে তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে এবং আগামীর দেশ পরিচালনার ভার এখনই পাকাপোক্ত করতে হবে।
অংশগ্রহনমূলক নির্বাচন হয়েছে এবং একটি ঐক্যফ্রন্ট নামে খ্যাত বিজয়ীরা এখনো সংসদে যায়নি। কিন্তু সামনে সুযোগ রয়েছে তাদের সংসদে যাওয়ার। সেক্ষেত্রে সরকার এবং বিরোধী দলের সদস্যরা মিলে তাদেরকে সংসদে নেয়া উচিত। কারণ তারা লজ্জায় মাথা নিচু করে আছে, আর ঐ লাজ লজ্জার কারণেই সংসদে যেতে পারছে না। তাই আবোল তাবোল বকে জ্বরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করছে। তবে সুযোগ খুজছে সংসদে যাওয়ার। জনগণ তাদের ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করেছে সুতরাং তাদের সংসদে গিয়ে জনগণকে সম্মান দেখানো উচিত নতুবা জররোষে পড়ে সবই শেষ হয়ে পথে বসা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে বলে মনে হয় না।
দেশ এখন পাতাল যুগে প্রবেশ করেছে। দুনিয়া কাপানো প্রযুক্ত এখন বাংলাদেশে উদ্ভাবিত হতে যাচ্ছে। এই প্রযুক্তি এবং এর ব্যবহারের মাধ্যমে আগামী বিশ্ব পাবে শান্তির এবং স্থিতিশীলতার দিশা। অশান্তি, নৈরাজ্য ও হয়রানী, হানাহানি, বিবেধ দুর হবে। শেখ হাসিনার কল্যাণের অমীয় বানীতে ধুয়ে যাবে সকল অকল্যাণ এবং শয়তানের শয়তানি। দলীয় নেতা ও কর্মীদের আরো সংযমী আচরণ এবং সেবাপরায়নতা দৃশ্যমান করতে হবে। ভালবাসা এবং সু-শাসন প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে জীবনের সবটুকু উজাড় করে দিতে হবে। আগামী কল্যাণের তরে বিশাল এই বিজয়কে বিশাল দায়িত্বের বোঝা হিসেবে গ্রহণ করে এগিয়ে নিতে হবে উন্নয়নের সুতিকাগারে। এই হউক আমাদের বিশাল জয়ের বিশাল চ্যালেঞ্জ।

Leave a Reply

Your email address will not be published.