ফুলেল শ্রদ্ধায় স্থপতি রবিউলকে শেষ বিদায়

প্রশান্তি ডেক্স ॥ একুশে পদকজয়ী কবি ও স্থপতি রবিউল হুসাইনের মরদেহ বুধবার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে নেয়া হলে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সর্বস্তরের মানুষ ফুল দিয়ে তাকে শ্রদ্ধা জানান একুশে পদকজয়ী কবি ও স্থপতি রবিউল হুসাইনকে ফুলেল শ্রদ্ধায় শেষ বিদায় জানিয়েছেন তার শুভানুধ্যায়ীসহ সর্বসাধারণ। গত বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় তার মরদেহের কফিন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হয়। সেখানে তার মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন ও সাধারণ মানুষ। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, বাংলা একাডেমি, শিশু কিশোর সংগঠন কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচার মেলা, জাতীয় কবিতা পরিষদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর, বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউট, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়, বেঙ্গল ফাউন্ডেশন, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন, বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানান তার বিশেষ সহকারী বিপস্নব বড়ুয়া ও আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ। এরপর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘স্থপতি রবিউল হুসাইন দেশের সকল প্রগতিশীল আন্দোলনে সাংস্কৃতিক কর্মীদের সঙ্গে ছিলেন; তাদের প্রেরণা জুগিয়েছেন। তিনি বঙ্গবন্ধু জাদুঘরের সাথেও সম্পৃক্ত ছিলেন। আমরা তাকে অসময়ে হারালাম।’ তিনি রবিউল হুসাইনের পরিবারের শোকসন্তপ্ত সদস্যদের গভীর শোক ও সমবেদনা জানান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, রবিউল হুসাইন কবি হিসেবে বিশিষ্টজন ছিলেন, তার নিজের যে বিদ্যা, স্থাপত্যবিদ্যা, সেখানেও তার একটা ভূমিকা ছিল। রবিউল হুসাইন সব সময় মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে চলেছেন। রবিউল হুসাইনকে ‘বহুমাত্রিক’ ও ‘নিরহংকারী’ হিসেবে বর্ণনা করে নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার বলেন, তার বহুমুখী কাজের মধ্য দিয়ে তিনি আমাদের মাঝে পরিচিত হয়ে থাকবেন। তিনি আমাদের সাথে সকল প্রগতিশীল আন্দোলনে ছিলেন, নেতৃত্ব দিয়েছেন। সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, তিনি (রবিউল) স্বাধীন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সমুন্নত রাখার জন্য সারাজীবন কাজ করে গেছেন। এছাড়া তিনি সব ধরনের সামাজিক-সাংস্কৃতিক আন্দোলনে থেকে প্রেরণা জুগিয়েছেন আমাদের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, রবিউল হুসাইন বাংলাদেশে সত্য ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সংরক্ষণের সকল উদ্যোগের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। তার মৃত্যুতে এদেশের প্রগতিশীল ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক আন্দোলনে এক অপূরণীয় শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে। অসাধারণ স্থাপত্য ও সাহিত্য কর্মের জন্য তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। চিত্রশিল্পী মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘রবিউল মানুষ হিসেবে বিরাট মাপের ছিল। তার একটি বিরাট গুণ ছিল- সে যেখানে যেত সেখানেই একটি শান্তির ছায়া নেমে আসত। সে রসিক মানুষ ছিল কিন্তু কখনোই অন্যায়ের প্রশ্রয় দেননি।’ শহীদ মিনারে বেলা ১২টা পর্যন্ত রেখে তারপর রবিউল হুসাইনের মরদেহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজার জন্য নেওয়া হয়। পরে তার কফিন নেওয়া হয় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে। সেখান থেকে রবিউলকে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published.