আগামীর দিকদর্শন: বর্তমান ও আতীত

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সম্মেলনে স্লোগান উঠল দেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং যাবে। দেশের কর্মকান্ডের ধারাবাহিক দৃশ্যমানতাও তাই প্রকাশ করে। কিন্তু মানুষের মনেবৃত্তি এবং কু-বাসনাও কিন্তু একই গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। তাই যুগের সাথে পাল্লা দিতে গিয়ে যেন আমরা তাল হারিয়ে না ফেলি সেদিকেও লক্ষ রাখা দরকার। চারিদিকে যেভাবে ফুসে উঠেছে অন্ধকারাচ্ছন্নতা তা দেখে এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়াটাই শ্রেয় বলে প্রতিয়মান। তবেযে দেশেই শুধু এর বিরুদ্ধাচারন তা কিন্তু নয় বরং ভাল কাজের বিরুদ্ধে মন্দরা জোটবেধে জেগে উঠবে এটাই স্বাভাবিক। তবে এর থেকে পরিত্রানের জন্যও ভালরা একজোট হয়ে কাজ করে যেতে হবে। কাজ থামালে চলবে না বরং কাজের গতি আরো বাড়াতে হবে।
প্রতিবেশি দেশ ভারতেও কিন্তু রাজনৈতিক দাবানল প্রবাহিত এবং এই দাবানলের ছোয়া কিন্তু যে কোন দিকেই ঝুকে যেতে পারে। মধ্যপ্রাচ্যেতো এর বিষবাষ্প লেগেই আছে। যার থেকে বের হয়ে আসরা খুবই কঠিন সমিকরণের সামষ্টিক হিসেবে পরিগণিত। শুধু কি তাই পৃথিবীর কোন দেশে নেই এর কালো থাবার ছোবল বলতে পারনে কি? পর্যালোচনা করে দেখা যায় সব দেশেই এর ছোবল রয়েছে বহমান। সদ্য আমেরিকাতে ঘটে যাওয়া ইমপিছমেন্ট একটি নির্বোধ ও হাস্যকর ছেলে খেলায় পর্যবসিত হয়েছে। এই ইমপিছমেন্ট বিরোধী দলীয় কোন দাবি নয় বরং নিজ দলীয় দাবির নিছক সমর্থনই এর পতনের জন্য দায়ী। নি¤œ কক্ষ যে রায় দিয়েছে তা উচ্চ কক্ষ্যে বাতিল হয়ে ঐ রায়ের বা অভিশংসনের অপমৃত্যু ঘটবে। স্বপদে বহাল থাকবেন জনাব ট্রাম্প। আর নিজেরা নিজেদের কথিক ও আইনিক ফ্যাসাদের ঘ্যারাকলে রাজনীতি কলুষিত ও বিলুপ্তির ইঙ্গিতবাহি হবে। এই একই ভাবনা কিন্তু পৃথিবীর সব দেশের শাসন ও শাসকদের বেলায় ঘটে থাকে।
আওয়ামী রাজনীতির একটি সত্য কথা প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যা ছিল সাধারন বঙ্গবন্ধুপ্রেমীদের দীর্ঘদিনের অপ্রকাশিত এক অবলা দাবি ও প্রশ্ন। কিন্তু সেই কথার কোন উত্তর কি বর্তমান প্রজন্মের কোন নেতার কাছে আছে? না নেই কারন তারা প্রত্যেকেই ছিল আপোষকামী এবং নিজের অস্তিত্ব, রাজত্ব কায়েমের স্বার্থবাদিতার দায়িত্বরত কর্তব্যপরায়ন এক নীতির কাছে পরাজিত সৈনিক মাত্র। সাধারন মানুষ এবং কর্মীসকল দিকবিদিক যখন ছোটাছোটি করেছিন তখন নেতা এবং নের্তৃত্ব নিশ্চুপ থেকে প্রকারান্তরে দেশ বিরোধী চক্রকে রাষ্ট্রপরিচালনায় সুযোগ করে দিয়েছে। যা ঐ সময়কার রাষ্ট্রনায়কদের জন্য ছিল বিশাল পাওয়া। তারা যেখানে ভয়ে তটস্থ ছিলো সেখানে সেই ভয়ের বিন্দুমাত্র লেসও তাদের ভুগতে হয়নি বরং অনায়াসে সোনার বাংলা কয়লার বাংলায় পরিণত হয়ে বাংলাকে বিপরীত ¯্রােতে দ্রুত এগিয়ে নিতে সহায়তা করেছিল।
সেদিন যারা আওয়ামী লীগের দায়িত্বে ছিল তারা কিন্তু কোন সদোত্তর দিতে পারেনি এবং পারবেও না কিন্তু সাধারণ জনগণ ঠিকই গোমরে গোমরে কেঁদেছে এবং আজও কেঁদে যাচ্ছে। তবে বর্তমানের নের্তৃত্ব কিন্তু সেদিনের সেই নের্তৃত্বই দেশ ও দলকে নের্তৃত্ব দিচ্ছে। পরিবর্তন শুধু একটি জায়গায় হয়েছে আর তা হলো বর্তমান আওয়ামী লীগের কান্ডারী জননেত্রী ও বিশ^ মানবতার মা শেখ হাসিনা। আর তিনি আছেন বলেই আওয়ামী লীগ আছে নতুবা আজ আওয়ামী লীগের কোন অস্তিত্ব খুজে পাওয়া যেত কিনা তারও রয়েছে যথেষ্ট সন্ধেহ। বিগত ওয়ান ইলাভেনেও আমরা দেখেছি শেখ হাসিনা বিহীন আওয়ামী লীগ কিভাবে বিভক্ত হয়ে নি:শেষ হয়। তবে সেদিন প্রয়াত জিল্লুর রহমান সাহেব দলকে এবং শেখ হাসিনাকে একসূত্রে গেঁথে রেখেছিলেন যা আজও জাতি এর উপকার ভোগ করে যাচ্ছে এবং আগামীর জন্য একটি দৃষ্টান্ত ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছে।
আমাদের দাবি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি দলকে সাজাতে ভুমিকা রাখুন এবং দলের আগাছা ও পরগাছা এমনকি নিরব ঘাতকরুপী মুখোশপড়াদের চিহ্নিত করে নতুন ও নব উদ্যমে আওয়ামী লীগ সাজিয়ে জাতির সেবায় মনোনিবেশ করতে সাহায্য করুন।
বর্তমান বিএনপির ও এই একই দশা। তারাও নেতিবাচকতাকে ভেদ করে ইতিবাচকতায় ফিরতে পারছে না এবং বর্তমান নেতারা ঘুপ্ত ঘাতক হিসেবে দেশের ও নিজ দলের বিরুদ্ধে যেন নিরব এক যুদ্ধে নেমেছে। আর এর ফলে তাদের দল এখন নিমজি¦ত এবং কর্মী ও সমর্থকরা এখন নতুন দিগন্ত উন্মোচনের নেশায় সত্যান্নেষনে ব্যতিব্যস্ত। আগামীতে তাদের মিথ্যা ও সত্যের পার্থক্য বুঝে এগিয়ে যেতে দিকদর্শন হবে প্রধানমন্ত্রীর সৃষ্টি সকল কর্মকান্ড। এই থেকে জাতি ও দেশ পাবে নব দিগন্তের এক ঐক্যসমেক জাতি এবং এর উন্নতির উন্নত শিখর।
বর্তমান এবং অতিতের মধ্যে যে বৈসাদৃশ্য তা কিন্তু লোকচক্ষুর অন্তরালে নয় বরং এখন প্রকাশিত ও দৃশ্যমান। অতিত এবং বর্তমানকে একত্রিত করে এগিয়ে যাওয়ার রসত খুজতে পর্যালোচনা এবং বিশ্লেষণ প্রয়োজন। পর্যালোচনা এবং বিশ্লেষণগুলোকে একত্রিত করে একটি নবদিগন্তের গতিশীল ক্রমোন্নতির ধারাবাহিকতা বের হবে বলে আমার বিশ^াস। বিশেষ করে মহিয়ান ও মহিয়সি ব্যক্তিরা কি করেছিল এবং কি করতে পারেনি এই দুইয়ের মাধ্যমে সামনে এগুনোর গতি পাওয়া যাবার বিশ^াস বহমান। তারা কিভাবে করেছিল এবং কি কারনে করতে পারেনি এই দুইয়ের মধ্যেও বিশালতা রয়েছে। আর ঐ বিশালতায় বিশ্লেষণ ও নিরীক্ষা জরুরী। যারা আজ হারিয়ে গেছে কিন্তু তাদের কিত্তিগুলো আর অতৃপ্ত বাসনাগুলোই আমাদেরকে পথ দেখাবে আগামীর সর্বোচ্চ চূড়ায় প্রবেশ করতে এমনকি আরো নুতন কিছু করতে।
অতিতে যে সকল কাজ দৃষ্টিকটু হয়েছে এবং এর পেছনের কারণ এমনকি কি কারনে এর দৃষ্টিকটুতা পরিলক্ষিত হয়েছিল তাও খোজে বের করা দরকার। কোন কোন কাজগুলো ভাল হয়েছিল তারও কারন বের করা দরকার। তাহলেই স্বস্তির নিশ^াসে যুক্ত হবে এক নিশ্চয়তা এবং বিরাজমান থাকবে এর বিশালতা। আমাদের দেশের তরে কাজ করতে গিয়ে যারা প্রাণ দিয়েছেন এবং যারা কলংকিত হয়েছেন তাদের স্ব স্ব গুনাবলীগুলো সংগ্রহ করে আগামীর জন্য দৃষ্টান্তস্বরূপ রেখে যাওয়াও কিন্তু একটি উন্নতির সোপান। বিজয়ের মাসে দল পরিচালনার দায়িত্ব অর্পিত করার পূর্বে সকল দিক বিবেচনায় নিয়েই এগুতে হবে এবং সরকার পরিচালনার জন্যও নতুন সুচক ও মাত্রা যুক্ত করে কঠিন ও কঠোরতা নিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছাতে অবিরত কাজ অব্যাহত রাখতে হবে।
রোহিঙ্গা এবং এনজিও কর্মকান্ড তদারকিতে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার জরুরী। কারণ ঐ রোহিঙ্গ ষড়যন্ত্র এখন বৈশি^ক ষড়যন্ত্রেরই একটি অংশ। যে কোন সময় রোহিঙ্গা সমস্যার মাধ্যমে জাতির অগ্রগতি বাধাগ্রস্থ হতে পারে। এমনকি আমাদের নেয়া শতবর্ষী পরিকল্পনায়ও ছেদ ঘটাতে পারে। তবে এনজিত তৎপরতা এমনকি কর্মকান্ডকে আরো কঠোর নজরদারীতে রাখাতে পারলে হয়তো আগামীতে আমরা ঐসকল প্রতিবন্ধক অবস্থা থেকে মুক্ত থাকতে পারবো। তবে এর জন্য সরকারের কর্মকান্ডকে আরো স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে এসে নীতি ও আদর্শ এবং আইন বাস্তবায়ন সঠিকভাবে করতে হবে।
চারিদিকে যে নেতিবাচক প্রতিবন্ধকতা দেখেছি তার থেকে বের হয়ে আসার জন্য রাষ্ট্রপতির হাস্যরসের ইঙ্গিতবাহিকতা এবং সহজ সরল উদাহরন এমনকি আদেশকে গুরুত্ব দেয়া জরুরী। প্রধানমন্ত্রী যে বিচক্ষণতায় এগুচ্ছেন ঠিক একই বিচক্ষণতায় এগুতে হবে সরকারের সকল স্তরের কর্মকর্তা এবং এমপি ও মন্ত্রীদের। দায়িত্ব নিতে হবে এবং দায়িত্ব দিতে হবে। নতুবা চলমান গতি ও লয়ে এগুনো সম্ভব হবে না। প্রতিবন্ধকতার বেড়াজাল ছেদ করাও দুস্কর হবে। পিয়াজ, চাল এমনকি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য অথবা নতুন অন্য কোন ষড়যন্ত্র ও ক্র্যু সবই কিন্তু ভাল কাজের গতিরোমন্থর করে খারাপিকে বিজিত করার লক্ষ্যে। আর এতে কিন্তু সায় যোগাচ্ছে আমাদের দলেরই লোকজন। যেমনি করে ৭৫এর ১৫ আগষ্ট এর ব্যবস্থা করে এমনকি তৎপরবর্তী সময়ে জনগণকে সুযোগ না দিয়ে শত্রুপক্ষের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আপোষকামীতায় নিমজ্জ্বিত থাকার ইতিহাস বলে স্বাক্ষী দেয়। পাঠ্যপুস্তক এবং মুক্তিযোদ্ধা তালিকা বা রাজাকারের তালিকা সবই এখন আমাদের সামনে হাতছানি দিচ্ছে জাতিকে সঠিক জায়গায় ফিরিয়ে নিয়ে যাবার। কিন্তু এর ব্যতিক্রম কিন্তু জাতির জন্য বিশাল এক অশনি শংকেতবাহী ইঙ্গিত বহন করে।
আমরা আশা করব দেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং যাবে কিন্তু চলমান ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। বিরাজমান থাকবে ইতিহাসের ধারাবাহিকতা এমনকি উন্নয়য়ের গতি সঞ্চারকারী মহিয়সী নারী যিনি বাংলা থেকে বিশ^কে জয় করে বিশে^র রোল মডেলে পরিণত হয়েছেন। বিশ^কে শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছেন বারংবার। ইতিহাসকে নতুন করে লিখাচ্ছেন জাতিয় উন্নয়ন ও উন্নতির সোপানে। কর্ম ও চিন্তার জাগরনের বাস্তব রূপদিয়ে। পরিশ্রম পারিশ্রমিকের ন্যায্য মূল্য দিয়ে। সবই সম্ভব হবে যদি শেখ হাসিনা কান্ডারী হিসেবে বহমান থাকেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.