‘জানো, হু ইজ মাই ড্যাড? মাহী বি চৌধুরীর ছেলে আমি’

প্রশান্তি ডেক্স॥ ট্রাফিক পুলিশের তিন সদস্যকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিকল্প ধারা বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ সদস্য মাহী বি চৌধুরীর ছেলে আরাজ বি চৌধুরীর বিরুদ্ধে। গত বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর সময় আটকানোয় বনানী কবরস্থান এলাকায় এটিএসআই (অ্যাসিস্ট্যান্ট টাউন সাব-ইন্সপেক্টর) মো. আলমগীর এবং কনস্টেবল তোফায়েল ও ফজলুর ওপর চড়াও হন আরাজ। এটিএসআই আলমগীর জাগো নিউজকে বলেন, ‘বনানী কবরস্থান সংলগ্ন সড়কে আমি বেপরোয়া গতিতে চালানো গাড়ির ভিডিও করছিলাম। তখনই ওই যুবকের (আরাজ) গাড়িটি খুব দ্রুত প্রবেশ করে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়।’ ‘ওই ঘটনার পর তাকে (আরাজ) গাড়ি থেকে নামতে বলা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন আরাজ। তার সঙ্গে আরও এক যুবক ছিলেন। তারা গাড়ি থেকে নেমে আমাকে এবং উপস্থিত ট্রাফিক পুলিশের দুই কনস্টেবল তোফায়েল ও ফজলুকে মারধর করেন। পরিস্থিতি বুঝে নিকট দূরত্বে ডিউটিরত সিনিয়র সার্জেন্ট নাজমুল স্যারকে কল করে বিষয়টি জানালে তিনি ছুটে আসেন। এর মধ্যেই হাতাহাতি চলে।’ সহকারী সার্জেন্ট আলমগীর বলেন, ‘দুই যুবককেই নেশাগ্রস্ত মনে হওয়ায় আমি তাদের বলি- আপনি তো নেশাগ্রস্ত। এই কথা বলাতেই আরাজ বি চৌধুরী আমার গায়ে ফের হাত তোলেন এবং শার্টের কলার ধরে টানাটানি করেন। এক পর্যায়ে আমার শার্টের বোতাম ছিঁড়ে যায়।’ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা মোবাইল ক্যামেরায় ভিডিও ধারণ করতে গেলে আরাজ চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘স্টপ ভিডিও, স্টপ ভিডিও। তুমি জানো আমি কে? হু ইজ মাই ড্যাড? আমি মাহী বি চৌধুরীর ছেলে।’ সিনিয়র সার্জেন্ট নাজমুল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে আরাজ ও তার সঙ্গীকে পুলিশ বক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ বক্সের ভেতরে গিয়েও বেপরোয়া আচরণ করতে থাকেন আরাজ। আরাজ চিৎকার করে ট্রাফিক পুলিশের সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলতে থাকেন, ‘আমাকে টাচ করবা না। আমার বাবা আসছে। আমার বাবার সঙ্গে কথা হচ্ছে।’ এক পর্যায়ে পুলিশের একটি দল এসে আরাজ ও তার সঙ্গীকে বনানী থানায় নিয়ে যেতে চায়। কিন্তু আরাজ যেতে অস্বীকৃতি জানান। খানিকবাদেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন মাহী বি চৌধুরী। তিনিসহ সবাই মিলে তখন বনানী থানায় যান। তারপর আরাজকে নিয়ে যান মাহী বি চৌধুরী। এ ব্যাপারে বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আজম মিয়ার সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। ডিএমপির ট্রাফিক উত্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-কমিশনার গোবিন্দ চন্দ্র পাল বলেন, ‘একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। সেটা মিটে গেছে।’ পুলিশ সদস্যের গায়ে হাত তোলার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে, পুলিশের গায়ে হাত তোলার বিষয়টি কীভাবে দেখছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ রকম কিছু ঘটেছে বলে বনানী থানা পুলিশ আমাদের জানায়নি। এরপরও এমন কিছু ঘটে থাকলে আমরা ব্যবস্থা নেব। ভুক্তভোগী ও বনানী থানা পুলিশে ফের যোগাযোগ করা হবে।’ মারধরের ঘটনা কীভাবে সমঝোতা হলো জানতে চাইলে এটিএসআই (অ্যাসিস্ট্যান্ট টাউন সাব-ইন্সপেক্টর) মো. আলমগীর বলেন, ‘ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখলে ক্ষমা করাই যায়। কিন্তু বিষয়টি আমার হাতে ছিল না। সিনিয়রা হ্যান্ডল করেছেন। তাই আমার কিছু বলার ছিল না।’

Leave a Reply

Your email address will not be published.