ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার কুটি ইউনিয়নের মাইজখার গ্রামে অবৈধ মাটি উত্তোলনের দায়ে ড্রেজার মালিক ইউপি সদস্য আলমগীর হোসেনকে গত রোববার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে ভ্রাম্যমান আদালতে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করে পুলিশের গাড়ীতে করে থানায় নিয়ে আসার সময় তার সমর্থকরা ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের গাড়ির গতিরোধ করে আসামী ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য পুলিশ ১২ রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষন করে। এসময় হামলার দায়ে এক যুবককে আটক করে পুলিশ।
কসবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ উল আলম জানান; আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এমপি নির্দেশে গত রোববার ৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুরো উপজেলায় ড্রেজারের বিরুদ্ধেঅভিযান চালানো হয়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রশান্ত বৈদ্য ও সালেক মুহিত’র নেতৃত্বে উপজেলার মাইজখার এলাকায় অভিযান চালানো হয়। সেখানে কসবা পশ্চিম ইউনিয়নের সদস্য আলমগীর হোসেনের অবৈধ ড্রেজার জব্দ করে ধ্বংস করেন। পরে তাকে ১ লাখ টাকা জরিমানা ও ১ বছরের কারাদন্ড নিয়ে আসার সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ী ও পুলিশের গাড়ীর গতিরোধ করে আসামী আলমগীরকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে তার লোকজন। এ সময় শামীম নামে এক যুবককে পুলিশের গাড়িতে হামলার অভিযোগে আটক করা হয় । এ ব্যাপারে কসবা থানা ওসি তদন্ত আসাদুল ইসলাম জানান; থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ লোকমান হোসেন জেলা সদরে আছেন। তিনি আসার পর মামলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রশান্ত বৈদ্য জানান; কুটি ইউনিয়নের মাইজখার এলাকায় আলমগীর হোসেনের ৩টি ড্রেজারের পাইপ ও যন্ত্রাংশ ধ্বংস করেন। অপরদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ উল আলম কুটি ইউনিয়নে ২টি ড্রেজারের পাইপ ও যন্ত্রাংশ ধ্বংস করেন এবং সোহাগ মিয়া নামক এক ড্রেজার মালিককে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। কসবা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো.জাহাঙ্গীর হোসেন মেহারী গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মো.নোয়াব মিয়াকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন এবং ৭টি ড্রেজার মেশিনের পাইপ ধ্বংস করেন। অপরদিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লা আল বাকী নেতৃত্বে মূলগ্রাম এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৭টি ড্রেজারের পাইপ ও বিপুল পরিমান পাইপ ধ্বংস করেন। পুলিশ জানায় মোট ২৪ হাজার ফুট অবৈধ ড্রেজারের পাইপ ধ্বংস করা হয়। ইতিপূর্বে গত ২২ অক্টোবর কসবা উপজেলা বিনাউটি ইউনিয়নের তিনলাখপীর এলাকার ২৫ বিঘা খাস সম্পত্তি থেকে ৪টি ড্রেজার মেশিন সহ কয়েক হাজার ফুট পাইপ ধ্বংস করা হয়। সর্বদলীয় প্রভাবশালী মহল কোটি কোটি টাকার মাটি বিক্রি করলেও সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরন মামলা না করায় জনমনে অসন্তোষ বিরাজ করছে। ২৫ বিঘা সরকারী খাস সম্পত্তির পাশ্ববর্তী ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিক বাছির মিয়া জানান তিনি ওই সকল প্রভাবশালী মহলের বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া দেওয়ানী আদালতে ৩ কোটি টাকার ক্ষতিপুরন মামলা করে নিরাপত্তাহীনতায় ভ’গছে। তিনি আরো জানান সরকারের পক্ষ থেকে সরকারী সম্পদের রক্ষনাবেক্ষনে উদাসিনতায় অবৈধ ড্রেজার মালিকরা আসকারা পাচ্ছে।