পাওয়া না পাওয়ার বেদনা

২০১৯ বছরটি ছিল আলোচিত ও সমালোচিত এবং বিভিন্ন ঘটনাবহুল বিচিত্র জীবনের ছায়াসঙ্গি হিসেবে। যা দির্ঘদিন মনে রাখার খোরাক হিসেবে কাজে লাগা বা দৃশ্যমান থাকার চলমান ও বহমান ইঙ্গিতবাহীও বটে। নেতিবাচক দিক থেকে বছরটি ছিল বাহারী গুণের বিস্ফোরন্মুখ যেমন, খুনে, ধর্ষণে, ঘুমে, রাহাজানিতে, অন্যায্যতাতে, ক্যাসিনোতে, ব্যবসায়ীক অনৈতিক ফায়দা হাসিলের অসম প্রতিযোগীতাতে, ধমবন্ধ হওয়ার পরিস্থিতিতে এমনকি চুরি-ডাকাতি ও মূল্যাবোধের অবক্ষয়ে ভরপুরতা দৃশ্যমান হিসেবে। অপরদিকে ইতিবাচক দিকে বছরটি ছিল বহুগুণের বহি:প্রকাশের; প্রথমত সর্বস্তরে শৃঙ্খলায়নের, ধারাবাহিক ক্রমোন্নতিতে, নীতি ও আদর্শের কঠোর অবস্থানের, রাজনীতি ও দলনীতির আদর্শগত গুনাগুন বিকাশের, সরকারের সাফল্যের এবং বাংলাদেশের উন্নয়নের মাপকাঠি সঠিক অবস্থানে দৃশ্যমান রাখার দৃষ্টান্তে, সরকার এবং ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষার, দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার লড়াইয়ে জয়ি হওয়ার মূলমন্ত্রের দৃশ্যমানতার, স্বদেশী থেকে ভিনদেশী হয়ে বিশ্ব মানবতার মানদন্ড স্থায়ীরূপে বাস্তবে দৃশ্যমান রাখার প্রত্যয়ের, জাতীগত, নীতিগত এবং সমষ্টীগত ঐক্য ও ঐক্যের জাগরণ বিরাজমান রাখার, নানান ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় পারদর্শীতা অর্জন এবং প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট প্রতিকুলতা বা সংক্রমনের হাত থেকে বেঁচে থাকার অভিজ্ঞতা অর্জন ও কার্যক্রম দৃশ্যমান রাখার, আন্তর্জাতিক গ্রহনযোগ্যতা বৃৃদ্ধি এবং এর ধারাবাহিক ক্রমোন্নতি সাধন, সর্বোপরি বাংলাদেশকে ও জাতি হিসেবে বাঙ্গালীকে সু-উচ্চ সম্মানের আসীনে অধিষ্ঠিত করানো। এই সকলের মাঝে আরো কতকিছুই না প্রস্ফুটিত ও প্রজ্জ্বলিত এবং লুকায়িত রয়েছে। এই ১৯ সালেই অনেক বিচারের সমাপ্তী ঘটেছে, অনেক নতুন আশার সঞ্চারিত হয়েছে, আনেক নতুন আইনের বাহারী ব্যবহার ঘটেছে। এতে কেউ স্বীকারে পরিণত হয়েছে আবার কেউ কেউ যথোপযুক্ত ব্যবস্থায় বিচার পেয়েছে আবার বিচার পরাজিত হয়েছে। তবে কেউ কেউ আবার ঘটনার প্রবাহে বা অন্যের অতি ভালবাসার স্বিকারে পরিণত হয়ে আক্রমনে পতিত হয়েছে এবং বিচারের কাঠঘড়ায় দাঁড়িয়ে অন্যের স্বীকারে নিজের জীবন বিপন্ন করেছে এবং করে যাচ্ছে। সবই কিন্তু আইন এবং এর যথোপযুক্ত বাস্তবায়নে হয়েছে। এই বছরই বিচারকদেরও বিচার হয়েছে, ক্ষমতাধরদেরও ক্ষমতা খর্ব হয়েছে এবং বিচারের আওতায় এসেছে। তবে সব মিলিয়ে বছরটি একটি চমকশুণ্য বহুলায়িত ব্যবহারে ও স্বীকারে এবং কঠোরতা বাস্তবায়নের মাধ্যমে পার হয়েছে। এই বছরেই জাতি দেখেছে নিজের এবং নিজ ঘরের শাসন এবং বিচার করার বাস্তবতা এবং ঝিকে মেরে বউকে শাসনের দৃষ্টান্ত।
সর্বোপরি এই বছরটি বাঙ্গালী জাতির জন্য একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্তেরই হবে; তবে নেতিবাচকতাগুলো এই বছরের শেষাংশে এসে হাওয়ায় মিশে বিতারিত হওয়ারই নামান্তর মাত্র। তবে এর বাইরে থেকেও বছরটির গুরুত্ব কম নয়। মসার রাজত্ব, ব্যবসায়ীর চক্রান্তে সরকারের নাবিশ্বাস এবং জনগণের উদ্ধশ্বাস; সবই কিন্তু বছরের গুনাগুনের উৎকর্ষে সাধিত হয়েছে। তবে বছরকে সমিহ করে জনগণ কিন্তু তাদের সর্বোচ্চটা দিয়ে ভালবেসেছে এবং সরকারকে সর্বোচ্চটা দিয়ে সহযোগীতা করেছে। যাতে সরকার তাদের পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন করে আগামীর উন্নতী সাধনে এগিয়ে যেতে পারে এবং অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে জাতিকে নিশ্চয়তার বাস্তবায়নে আবদ্ধ করতে পারে। বর্তমানে এই বছরটিকে মূল্যায়ন বা অবমূল্যায়ন করার কোন সুত্র বা ভাষা আবিস্কৃত হয়নি তবে আগামীতে আবিস্কৃত হবে বলে বিশ্বাস। আর তখনই এই বছরের মূল্যায়ন করা সম্ভব হবে। ততদিন শুধু পাওয়া না পাওয়ার হিসেব – নিকেশে মগ্ন থেকে আগামীর উন্নতি তরান্বিত করতে হবে। দেশের ও জাতির উন্নয়ন হয়েছে এবং আগামীতে আরো হবে। তবে এই উন্নয়ন এবং উন্নতি নিয়ে জাতিকে গর্ব করার সুযোগ করে দিবে আগামীর সকল স্বচ্ছ দৃষ্টান্তগুলো। নতুন মন্ত্রিসভা, নতুন প্রশাসনিক কাঠামোর ছক, নতুন দলীয় পদায়ন এবং করনীয়, অঙ্গিকার বাস্তবায়নে পরিচ্ছন্ন দৃশ্যমান ব্যবস্থা, সদ্য শুরু হওয়া নির্বাচন এবং এর আমেজ। দল এবং অঙ্গ সংগঠন এর ভারসাম্যতা, পরিচ্ছন্নতা এখন বিরাজমান ও সময়ের যোগান’র উপযুক্ত দাবী। আজ আমরা এই সময়ে এসে উপনিত হয়েছি যে, আমাদের সামনে ভাল ও মন্দ দুটোই দিক খোলা; তবে ভাল দিকে এগিয়ে গেলে এবং নিলে দেশের আদী আকাঙ্খা পরিপূর্ণ হবে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা সত্যিকার ও বাস্তবে রূপায়িত হবে। স্বচ্ছ মানুষগুলোকে সামনে এনে দেশ ও সমাজ গঠনে কাজে লাগালে বা সুযোগ করে দিলে অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছা সম্ভব দ্রুত হবে বলে আমার বিশ্বাস। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিগুলোকে সমুজ্জ্বল রাখতে হলে আরো মনোযোগী হয়ে কাজ করতে হবে এবং এই অবস্থানের স্তর আরো উঁচুতে উঠাতে হবে আর আগামীর জন্য আরো স্বীকৃতি অর্জনের পথ প্রসস্থ করতে হবে। নিজেদের মধ্যে বিভেদে জড়ানো থেকে বের হয়ে আসতে হবে। বিভেদ যত কমবে ততই মঙ্গল সাধিত হবে এবং দেশ ও জাতির উন্নতি সুনিশ্চিত হবে। তবে সার্বজনিন বিভেদ; যেমন দল-মত ও পথের ভিন্নতা থেকে বের হয়ে এসে দেশের কল্যাণে একযোগে কাজ করতে হবে। ব্যক্তি, দল ও মথের পার্থক্যকে পাশ কাটিয়ে বৃহত্তর ঐক্য সুপ্রতিষ্ঠিত করে আগামীর কল্যাণের সু ব্যবস্থা সু-নিশ্চিত করতে হবে। আর তা করার সময় এখনই শুরু। এই বছরের বিদায়ে নতুন বছরকে সাম্য ও ঐক্যের আলিঙ্গনে আবদ্ধ করতে হবে। যে উন্নয়ন চলছে সেই উন্নয়নের গতিকে সুদৃঢ় ঐক্যেও ভিত্তিতে গতিশীলতা দিয়ে এগিয়ে নিতে হবে। পথ হারালে চলবে না; ক্ষুদ্র স্বার্থ, দলীয় স্বার্থ বা ব্যক্তি স্বার্থেও জন্য উন্নয়ন জলাঞ্জলি দিলে চলবে না। বরং ফিওে আসতে হবে আমাদেও বাঙ্গালীর শীকড়ে। ৫২, ৬৯ ও ৭১ এর চেতনা জাগ্রত রেখে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। তাই ১৯এর খারাপ অভিজ্ঞতা ভুলে ভাল অভিজ্ঞতা ও অর্জনগুলোকে সামনে এনে কাজ চলমান রাখতে হবে এবং সামনের দরজা প্রসস্থ করার যাবতীয় ব্যবস্থা সুসম্পন্ন করতে হবে। সবাইকে আগামীর অগ্রগামী ভালবাসা ও শুভ কামনা জানিয়ে নতুন ইংরেজী বৎসর ২০২০কে স্বাগতম। ২০২০ হউক সকলের মঙ্গল ও কল্যাণের নিমিত্তে এবং উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার উন্নতশীরে পৌঁছার গোছানো এক দেবদুত বাহন হিসেবে। জয় আমাদের সকলের এবং কল্যাণ বিশ্ব বিবেকের এবং শান্তিকামী সকল মানুষের। ২০২০ হউক নতুন ছন্দ্রে, নতুন আনন্দে উদ্বেলীত হওয়ার সকল উপকরণে ভরপুর একটি দৃষ্টান্তের বছর। সেই কামনাতেই আগামীর ভাবনা নিয়ে এগুতে প্রস্তুত বাংলাদেশী ও বাংলা ভাষা-ভাষি মানুষজন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.