এক ধাক্কায় দল ছাড়লেন বিজেপির ৮০ মুসলিম নেতা

প্রশান্তি ডেক্স॥ সমপ্র ভারতজুড়ে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন প্রতিষ্ঠা করতে মরিয়া বিজেপি। বিরোধীদের দাবি উড়িয়ে নতুন এই আইনকে ‘মানবতার’ প্রতীক বলেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
কিন্তু, তার ফল হলো উল্টো। এতদিন দেশটির সাধারণ জনগণ ও বিরোধীরা এটি নিয়ে বিক্ষোভ করলেও সিএএ নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিজেপি ছাড়লেন মধ্যপ্রদেশের ৮০ জন মুসলমান নেতা। এই আইনকে ‘বিভেদের হাতিয়ার’ বলে দাবি করেছেন বিজেপি ত্যাগী সংখ্যালঘু নেতারা।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে বলা হয়েছে, সিএএ-এর উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে দলত্যাগীরা নেতারা বিজেপির প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন।
পদ্ম বাহিনী থেকে দলত্যাগী রাজিক কুরেশি ফারসিওয়ালা বলেছেন, ‘বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডার কাছে বৃহস্পতিবারই ৮০ জন সংখ্যালঘু নেতা ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দিয়েছি। ধর্মের ভিত্তিতে বিভেদের উদ্দেশ্য নিয়ে সিএএ তৈরি করা হয়েছে।’
বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ধর্মীয় নীপিড়নের শিকার হয়ে যেসব হিন্দু, পার্সি, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ, জৈন ও শিখ ২০১৪ সাল পর্যন্ত ভারতে প্রবেশ করেছেন, তাদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। গত ডিসেম্বরেই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন তৈরি করেছে মোদী সরকার। এরপরই দেশজুড়ে বিদ্রোহ শুরু হয়। সেই বিরোধীতায় এবার শামিল মধ্যপ্রদেশেরে এইসব বিজেপি ত্যাগী মুসলমান নেতারাও।
রাজিক কুরেশি ফারসিওয়ালার দাবি, ‘সিএএ হওয়ার পর থেকেই আমাদের সমাজে থাকা দায় হয়ে দাঁড়াচ্ছিল। মানুষ আমাদের কটাক্ষ করছিল। এই বিভেদকামী আইন আমরা আর কতদিন মেনে নেব তা জানতে চাইছিল জনগণ।’ তাঁর সংযোজন, ‘নীপিড়িত সব শরনার্থীরই ভারতের নাগরিকত্ব পেতে পারেন। এতে ধর্ম দেখা উচিত নয়। ধর্মের ভিত্তিতে কাউকে অনুপ্রবেশকারী বা সন্ত্রাসবাদী তা দেগে উচিত নয়।’
নাড্ডাকে লেখা ইস্তপত্রে দলত্যাগী ৮০ নেতা জানিয়েছেন, ‘ভারতীয় সংবিধান অনুশারে দেশের সকল নাগরিকের সাম্য, স্বাধীনতার অধিকার রয়েছে। কিন্তু, বিজেপির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার ধর্মের ভিত্তিতে সিএএ তৈরি করেছে। বিভেদের এই আইন সংবিধানের মূল ধারার বিরোধী।’
জানা গেছে দলত্যাগীদের মধ্যে অনেকেই বিজেপি নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয়ের ঘনিষ্ট। এই প্রসঙ্গে বিজয়বর্গীয় বলেন, ‘ইস্তফার বিষয়টি আমার জানা নেই। কিন্তু, কেউ যদি সিএএ নিয়ে বিভ্রান্ত হন বা ভুল বুঝে থাকেন তবে তাকে এই আইনের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করা হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published.