অনেক ব্যথা-বেদনা বুকে চেপে দেশটাকে এগিয়ে নিচ্ছি: প্রধানমন্ত্রী

প্রশান্তি ডেক্স ॥ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী মুজিব বর্ষকে সামনে রেখে দেশের চলমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা।তিনি বলেছেন, কারোর প্রতি বিদ্বেষ নিয়ে চলি না বা প্রতিশোধ নিতেও যাইনি। যেখানে অন্যায় হয়েছে, সেখানে ন্যায় করার চেষ্টা করেছি।গত রোববার(১৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলেনাচনা এবং সংসদের অধিবেশনের সমাপ্তি ভাষণে তিনি এসব কথা বলেনপ্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক কষ্ট, ব্যাথা-বেদনা বুকে চেপে দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। যাতে বাংলাদেশের মানুষ যেন একটু সুখের মুখ দেখে, তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটে- সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে চলেছি। বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, ইনশাল্লাহ এগিয়ে যাবে।স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় তিনি জঙ্গী-সন্ত্রাস ও ধর্ষণকারীদের বিরুদ্ধে তাঁর সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির কথা তুলে ধরেন।তিনি বলেন, ধর্ষকদের ধরিয়ে দিন। কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধর্ষণকারীরা পশুর চেয়েও খারাপ। আমরা সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছি। আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছি, কাউকে-ই ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘আমি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাই, ধর্ষণকারীদের যেখানেই পাওয়া যাবে, তাদের ধরিয়ে দিন। এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে কেউ জড়িত থাকলে ধরিয়ে দিন। আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেবো।আগামী রোজায় দ্রব্যমূল্য নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রমজান এলেই অনেকেই দ্রব্যমূল্য নিয়ে খেলায় মেতে ওঠার চেষ্টা করে। আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।‘কেউ কোনো সঙ্কটের গুজব ছড়ালে তাতে কেউ আতঙ্কিত হবেন না। আতঙ্কিত হয়ে পণ্য মজুদ করবেন না,’ যোগ করেন তিনি। সংসদ নেতা বলেন, দেশে রিজার্ভ ৩২ বিলিয়নের ওপরে রয়েছে, দেশের অর্থনীতিও অনেক শক্তিশালী। ব্যাংকে টাকার কোন সমস্যা নেই। প্রণোদনা দিচ্ছি বলেই ১৮ বিলিয়ন রেমিটেন্স এসেছে। সামাজিক নিরাপত্তা, অবকাঠামো উন্নয়ন ব্যাপকভাবে হচ্ছে। টাকা যদি নাই থাকতো তবে এতো উন্নয়ন হচ্ছে কীভাবে? ১ কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দিয়ে যাচ্ছি। দারিদ্র্যের হার ৪০ ভাগ থেকে ২০ দশমিক ৫ ভাগে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। দুর্যোগ মোকাবেলায় আমরা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছি। এটাও দেশের জন্য একটা বড় অর্জন।বরোধী দলের নেতার বক্তব্যের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, কিছু ক্ষেত্রে তিনি হতাশা প্রকাশ করেছেন। কিন্তু রাষ্ট্রপতির ভাষণ যদি উনি ভাল করে পড়েন, তবে হতাশ না হয়ে উজ্জীবিত হবেন। আমরা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করেছি, তথ্যপ্রযুক্তি বিদেশে রফতানিও শুরু করেছি।কর্মসংস্থানের জন্য নতুন নতুন ক্ষেত্র তৈরি করে দিচ্ছি। কর্মসংস্থানের জন্য স্বপ্রণোদিত কর্মদ্যোক্তায় পরিণত করতে বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রেখেছি। বিদেশে অনেকে বিপুল টাকা খরচ করে বিদেশে যায়, কিন্তু চাকুরির গ্যারান্টি নেই। যারা ভুল পথে যায়, দালালের খপ্পরে পড়ে তারাই বিপদে পড়ে। এতো টাকা খরচ করে বিদেশে না গিয়ে দেশেই বিনিয়োগ করে একেকজন কর্মদ্যোক্তায় পরিণত হতে পারে।
বিএনপি-জামায়াত-জাতীয় পার্টি সরকারেরও সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, যখনই যারা ক্ষমতায় এসেছে তারা আওয়ামী লীগকে নির্যাতন করেছে। জেনারেল এরশাদ ক্ষমতায় থাকতে ’৮৮ সালে আমাদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকতে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়েছে। অগ্নিসন্ত্রাস করে শত শত মানুষকে হত্যা করেছে। এসব বৈরী অবস্থা মোকাবেলা করে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.