দুই আ’লীগ নেতার বাসা থেকে ২৬ কোটি টাকাসহ স্বর্ণালঙ্কার জব্দ

প্রশান্তি ডেক্স॥ রাজধানীর পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রুপন ভূঁইয়ার বাসার ৫টি সিন্দুক থেকে নগদ ২৬ কোটি ৫৫ লাখ ৬০০ টাকা পেয়েছে র‌্যাব। গত মঙ্গলবার দুপুরে র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল রকিবুল হাসান সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের জানান, ওই বাসা থেকে সোয়া পাঁচ কোটি টাকার এফডিআরের বই, এক কেজি সোনা, ৯ হাজার ২০০ ইউএস ডলার, ১৭৪ মালয়োশিয়ান রিংগিত, ৩৫০ ভারতীয় রুপি, ১ হাজার ৫৯৫ চায়নিজ ইয়নে, ১১ হাজার ৫৬০ থাই বাথ ও ১০০ দিরহাম জব্দ করেছে র‌্যাব। তিনি জানান গত সোমবার রাতে পুরান ঢাকার লালমোহন সাহা স্ট্রিটের ওই বাসায় অভিযান শুরু করেন র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম। সরু গলির ওই বাসায় পাঁচটি সিন্দুকভর্তি টাকা ও পাঁচ কোটি টাকার এফডিআরের বইয়ের পাশাপাশি ক্যাসিনোর সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। বাসাটি খুব ছোট আকারে। এখানে মাত্র একটি চৌকি আছে। এটি ছয়তলা ভবনের নিচতলার একটি বাসা। ধারণা করা হচ্ছে, এ বাসায় টাকা রেখে কেউ এর পাহারায় থাকতেন। তবে এখান থেকে কাউকে আটক করা যায়নি। লে. কর্নেল রকিবুল হাসান বলেন, এনামুল হক ও রূপন ভূঁইয়া এখন কারাগারে। ক্যাসিনো কারবারি এই দুই ভাইকে গত জানুয়ারি মাসে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গত বছর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর এই দুই ভাই আলোচনায় আসেন। শুরু থেকেই তাঁরা পলাতক ছিলেন। পুরান ঢাকার ওই এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত র‌্যাব-৩ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফয়জুল ইসালাম জানান, ক্যাসিনো কান্ডের জড়িত দুই ভাইয়ের ঢাকায় বহু ফ্ল্যাট-বাড়ি রয়েছে। এখন পর্যন্ত তাঁরা ২৪টি বাড়ির খোঁজ পেয়েছেন। অনুসন্ধানের একপর্যায়ে তাঁরা পুরান ঢাকার এ বাড়ির খোঁজ পান। এর পরপরই এখানে অভিযান চালিয়ে এসব সম্পদ জব্দ করা হয়। গত ছয় থেকে সাত বছরে তারা পুরান ঢাকায় বাড়ি কিনেছেন কমপক্ষে ১২টি। ফ্ল্যাট কিনেছেন ৬টি। পুরোনো বাড়িসহ কেনা জমিতে গড়ে তুলেছেন নতুন নতুন ইমারত। স্থানীয় লোকজন জানান, এই দুই ভাইয়ের মূল পেশা জুয়া। আর নেশা হলো বাড়ি কেনা। গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর এনামুল ও রূপনের বাসায় এবং তাঁদের দুই কর্মচারীর বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। সেখান থেকে পাঁচ কোটি টাকা এবং সাড়ে সাত কেজি সোনা উদ্ধার করা হয়। এরপর সূত্রাপুর ও গেন্ডারিয়া থানায় তাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়। এদিকে টাকা দিয়ে ২০১৮ সালে এনামুল পান গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও আর রূপন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ ভাগিয়ে নেন বলে অভিযোগ আছে। এছাড়াও তাদের পরিবারের পাঁচ সদস্য, ঘনিষ্ঠজনসহ মোট ১৭ জন আওয়ামী লীগ ও যুবলীগে পদ পান।

Leave a Reply

Your email address will not be published.