করহার কমানোর পরামর্শ অর্থমন্ত্রীর

প্রশান্তি ডেক্স ॥ পার্শ্ববর্তী দেশের সঙ্গে সংগতি রেখে দেশের করহার কমিয়ে আনার পরামর্শ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। একই সঙ্গে কর আদায় অটোমেশন ব্যবস্থা প্রবর্তনের তাগিদ দেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার এনবিআর সম্মেলন কক্ষে ট্যাক্স কার্ড ও সম্মাননা স্মারক প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল আরও বলেন, এমনভাবে করহার নির্ধারণ করতে হবে যাতে রাজস্ব আদায় বাড়ে এবং করদাতারা ক্ষতিগ্রস্ত না হন। তিনি বলেন, করহার বেশি থাকলে সেটা করদাতারা গ্রহণ করতে চাইবে না। পার্শ্ববর্তী দেশের সঙ্গে সংগতি রেখে করহার নির্ধারণ করা যায়। করহার বেশি থাকলে কমাতে হবে। আর করহার কমানো হলে ট্যাক্স বাড়বে। তিনি বলেন, দেশের কর-জিডিপি অনুপাত পার্শ্ববর্তী দেশের তুলনায় কম। এটি বাড়াতে হলে ম্যানুয়াল সিস্টেম পরিহার করে ডিজিটাল সিস্টেমে যেতে হবে। কর নিয়ে মানুষের মাঝে অনেক ভয়ভীতি ছিল, যা অনেকটা দূর হয়েছে। এখন সিস্টেম উন্নত করা দরকার। এটা করতে পারলে জনগণ করের আওতায় চলে আসবে। তিনি বলেন, মানুষ কর দিতে চায়। সমন্বয় করতে পারলে করের আওতা বাড়বে। এ প্রজন্ম হলো ‘রেভিনিউ জেনারেশন’।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে আয়করের পরিমাণ ৭৩ হাজার ৪২০ কোটি টাকা, যা মোট আহরিত রাজস্বের ৩৪ ভাগ। চলতি অর্থবছরে সরকারের ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এ থেকে আমরা দেখতে পারছি-জনগণের মধ্যে কর দেওয়ার আগ্রহ বাড়ছে। এজন্য কর পরিশোধ সংক্রান্ত সেবা আরও সহজ করা প্রয়োজন। এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, করদাতা বাড়ানোর জন্য এনবিআর কাজ করছে। সেকেন্ডারি সোর্স থেকে তথ্য নেওয়ার জন্য বিআরটিএ ও সিটি করপোরেশনের কাছ থেকে তথ্য আদানপ্রদান করা হচ্ছে। আরও কিছু এজেন্সির সঙ্গেও সেকেন্ডারি তথ্য নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। করদাতাবান্ধব পরিবেশ তৈরি করা এবং করভীতি দূর করাই এনবিআরের মূল উদ্দেশ্য। তিনি আরও বলেন, করভীতি দূর করার বড় সমাধান হতে পারে অটোমেশন। সেজন্য অটোমেশন কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। অনুষ্ঠানে ট্যাক্স কার্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে পাঁচজন করে মোট ১০ জনকে সম্মাননা দেওয়া হয়। এগুলো হলো-কোম্পানি পর্যায়ে গ্রামীণফোন লিমিটেড, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, স্ট্যান্ডার্ড চার্টাড ব্যাংক লিমিটেড, ইউনিলিভার বাংলাদেশ ও আকিজ গ্রুপ। ব্যক্তি পর্যায়ে সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, রুবাইয়াত ফারজানা হোসেন, হোসনে আরা হোসেন, লায়লা হোসাইন এবং হাজী মো. কাউস মিয়াকে ট্যাক্স কার্ড দেওয়া হয়। সৈয়দ আবুল হোসেন বলেন, আমরা যে কর দিই, সেই টাকা দেশেই থাকে। দেশের উন্নয়নে ব্যবহার করা হয়। করের টাকা সেবা হয়ে আবার কোনো না কোনোভাবে আমাদের কাছে ফিরে আসে। জনগণের করের টাকায় পদ্মা সেতু হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.