একটি সেতুর অভাবে ২০ হাজার মানুষের দুর্ভোগ

নাটোর প্রতিনিধি ॥ একটি সেতুর অভাবে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের ১০ গ্রামের বাসিন্দারা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। দীর্ঘদিনের দাবি সত্ত্বেও সেতু না হওয়ায় এসব এলাকাররু প্রায় ২০ হাজার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকোতে চলাচল করছেন। আত্রাই নদীতে সেতু নির্মাণে অনেকবার প্রতিশ্রুতি মিললেও বাস্তবায়ন হয়নি। নদী পাড়ের ১০টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ একটি ব্রিজের জন্য বছরের পর বছর আশায় থাকলেও তাদের দুঃখ-দুর্দশার দিকে আজ পর্যন্ত কেউ ফিরেও তাকায়নি। বর্ষায় নৌকা আর শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার হন স্থানীয়রা।
সরেজমিন দেখা যায়, আত্রাই নদী পারাপারে বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়েছে। সাঁকো উঁচু-নিচু হওয়ায় বয়স্ক মানুষ, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী ও রোগীদের দুর্ভোগের শেষ নেই। কোনো নারীর প্রসব বেদনা দেখা দিলে অথবা জরুরি প্রয়োজনে কাউকে হাসপাতালে নিতে হলে পোহাতে হয় অনেক দুর্ভোগ। নদীপাড়ের গ্রামগুলোতে দুই জেলার মানুষের বসবাস ছাড়াও প্রচুর ধান চাষ করে স্থানীয় কৃষকরা। কিন্তু যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো না থাকায় প্রতি বছর অনেক ফসল নষ্ট হয়ে যায়। নিরুপায় হয়ে ঝুঁকি নিয়েই সেতু দিয়ে প্রতিনিয়ত পারাপার হচ্ছেন মানুষ। উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের বিলহরিবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা আবদুল হান্নান (৭৩) বলেন, সেতু নির্মাণে অনেকবার প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেলেও বাস্তবে তা আর হয়নি। এতে বিপাকে পড়েছেন হাজারো মানুষ।
নদীর পূর্ব পাশের একটি গ্রামের বাসিন্দা আবদুর রাজ্জাক জানান, আত্রাই নদীতে সেতু না থাকায় তাদের গ্রামে পাকা সড়ক হয়নি। নদীটি খরস্রোতা হওয়ায় খেয়া নৌকায় পারাপার হতে সময় লাগে প্রায় ২০ মিনিট। ছেলে-মেয়েদের স্কুল-কলেজে যাতায়াত, ফসল পরিবহনসহ উপজেলা সদরে যেতে হয় আত্রাই নদী পার হয়ে। ভরা বর্ষায় নৌকা ও শুকনো মৌসুমে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপারে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সাবগাড়ী বাজারের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, চলনবিল অধ্যুষিত এলাকাটি কৃষি প্রধান। সাবগাড়ী বাজার সংলগ্ন ঘাট হয়েই নদীর উত্তর পাশের গুরুদাসপুর উপজেলার বিলহরিবাড়ী, কারিগরপাড়া, হরদমা এবং সিংড়ার কৃষ্ণনগর, কাউয়াটিকিরি, পানলি ও ডাহিয়া গ্রামের মানুষ তাদের উৎপাদিত ফসল পরিবহন করেন। এছাড়া নদীর পশ্চিম পাশের সাবগাড়ী, রাবার ড্যাম, যোগেন্দ্রনগর ও ভিটাপাড়া গ্রামের মানুষও ফসল পরিবহনে দুর্ভোগে পড়েন।
খেয়া নৌকার মাঝি সাদেক আলী বলেন, প্রায় ২৮ বছর যাবৎ নৌকা দিয়ে মানুষ পারাপার করছি। এজন্য বছরে সবার কাছ থেকে নির্দিষ্ট টাকা এবং ধান নিয়ে থাকি। বর্ষা মৌসুমে নৌকা থাকলেও শুকনো মৌসুমে বাঁশের সাঁকো তৈরি করি। তবে এখানে একটি সেতু হলে মানুষের কষ্ট অনেক লাঘব হবে। এ বিষয়ে স্থানীয় সাংসদ মো. আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘শিগগিরই আত্রাই নদীর ওই স্থানে একটি সেতু নির্মাণ করে মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published.