কসবা উপজেলায় অবৈধ করাতকলের ছড়াছড়ি

ভজন শংকরাচার্য কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি:- ব্রাহ্মণবাড়িয়া সীমান্তবর্তী কসবা উপজেলার অবৈধ করাতকলের ছড়াছড়ি। কেউই মানছেন না নীতিমালা বা আইন। যে যেভাবে পারছেন বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই নামে-বেনামে গড়ে তুলছেন করাতকল।

উপজেলা বন কার্যলয়ের তথ্যমতে, কসবায় বৈধ ও অবৈধ মিলিয়ে চল্লিশটি করাতকল গড়ে উঠেছে এর মধ্যে বৈধ কাগজপত্র প্রয়োজন মাত্র পাঁচটি করাতকলের। এগুলো হলো মেসেজ রুবেল এন্টারপ্রাইজ এন্ড স’মিল, মেসেজ সজিব টিম্বার এ্যান্ড স’মিল , আমান স মিল, আল-মক্কা মিল ও হাজী সোলায়মান স মিল। এছাড়া বাকি সবগুলোই চলছে অবৈধভাবে।

জানা গেছে, অবৈধ করাত কল গুলোতে সরকার নির্ধারিত কোন আইন ও নীতিমালা মানার কোনো বালাই নেই। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাঝেমধ্যে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়ে থাকে। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারবার লাইসেন্স করতে বলা হলেও প্রশাসনের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দেদারছে চলছে অবৈধ করাত কল। সীমান্তঘেঁষা পাহাড় থেকে শুরু করে সমতল ভূমিতে লাগানো সব ধরনের গাছ কেটে সাবাড় করছে করাতকলের মালিক ও অসাধু ফড়িয়া কাঠ ব্যবসায়ীরা। এতে করে হুমকির মুখে পড়ছে এলাকার পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য। কমছে অক্সিজেনের ভারসাম্য। এসব কারণে দ্রুত এ সকল অবৈধ করাত কল বন্ধের দাবি জানিয়েছে স্থানীয় সচেতন মহল।

বন কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে রয়েছে সরকারে সংরক্ষিত ও অর্পিতা বিশাল বনাঞ্চল।  সরকারের আইন অনুযায়ী সরকার ও সুরক্ষিত বনাঞ্চল এবং সর্বনিম্ন পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে কোন ধরনের কোনো নির্দেশনা থাকলেও আইন না মেনে গড়ে উঠেছে অনেক করাতকল। সীমান্তবর্তী গোপীনাথপুর ও বায়েকসহ কয়েকটি ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রাম গড়ে উঠেছে বেশ কিছু করাতকল।এসব কলে নির্বিচারে কাটা হচ্ছে পাহাড়ি গাছ।

উপজেলা ফরেস্টার মোঃ শাহজাহান সরকার বলেন, বিভিন্ন সময়ে অবৈধ করাতকলের মালিকদের লাইসেন্স করতে বলা হলেও তারা খুবই উদাসীন। ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হলেও জনবল সঙ্কট ও কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির হস্তক্ষেপে বা সহযোগিতায় লাইসেন্স না করেই মালিকেরা চালাতে থাকে করাতকল।

তিনি আরো বলেন, ‘বৈধ লাইসেন্স না দেখে বিদ্যুৎ সংযোগ না দেওয়ার নির্দেশনা থাকলেও কোন অদৃশ্য ইশারায় অবৈধ করাতকলে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হচ্ছে । মন্ত্রনালয় থেকে অবৈধ করাতকলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশনা এসেছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ উল আলম, বলেন মানুষের জীবন-জীবিকা ও পরিবেশ এবং জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় বন, বন্যপ্রাণী ও বনভূমি সংরক্ষণ অপরিহার্য। অবৈধ করাতকলের মালিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে লাইসেন্স করার জন্য। কিছু আবেদন এসেছে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লাইসেন্স না করলে প্রচলিত আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.