ইউক্রেনে হামলার অজুহাত খুঁজছে রাশিয়া; যুক্তরাষ্ট্র

আন্তজর্তিক ডেক্স ॥ ইউক্রেনে হামলা চালাতে রাশিয়া অজুহাত খুঁজছে বলে দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেছেন, কয়েক দিনের মধ্যেই এই হামলা চালানো হতে পারে। খবর বিবিসির। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউস প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় এসব কথা বলেন বাইডেন। একই সঙ্গে ইউক্রেন-রাশিয়া সংকটের কূটনৈতিক সমাধান এখনো সম্ভব বলে জানিয়েছেন তিনি।
রাশিয়া যে ইউক্রেনে হামলার পথে হাঁটছে এমন দাবি আগে থেকেই করে আসছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো। তবে এসব দাবিকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে মস্কো। সম্প্রতি ইউক্রেন সীমান্ত থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলেও ঘোষণা আসে দেশটির পক্ষ থেকে। তবে এ ঘোষণাকে ‘মিথ্যা’ বলে দাবি করেছে পশ্চিমারা।
সাংবাদিকদের বাইডেন বলেন, রাশিয়া সাজানো হামলা চালিয়ে ইউক্রেনে অভিযানের অজুহাত খুঁজছে—এমনটি বিশ্বাসের কারণ রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে। এর পরপরই একই দাবি করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। কী অজুহাতে রুশ অভিযান শুরু হতে পারে তা পরিষ্কার করেননি ব্লিঙ্কেন। তবে কিছু সম্ভাবনা তুলে ধরেছেন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রাশিয়ার অভ্যন্তরে সাজানো সন্ত্রাসী বোমা হামলা, গণকবরের আবিষ্কার, বেসামরিক লোকজনের ওপর সাজানো ড্রোন হামলা এমনকি রাসায়নিক অস্ত্রের মাধ্যমে হামলা’ চালিয়ে অজুহাত তৈরি করতে পারে মস্কো। রাশিয়ার অজুহাত তৈরির পরের পরিণামও তুলে ধরেছেন ব্লিঙ্কেন। তিনি বলেন, ক্রেমলিন ইউক্রেনে বসবাসকারী রুশ জাতিসত্তার লোকজনকে রক্ষার কথা বলে ‘নাটকীয়ভাবে’ একটি বৈঠক ডাকবে। এরপর ইউক্রেন লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ও বোমা হামলা শুরু করবে। চলবে সাইবার হামলাও।
এসব দাবির পক্ষে অবশ্য কোনো প্রমাণ সামনে আনেনি যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে কথা উঠলে কিছু লোক প্রমাণ চাইবে এ কথা স্বীকার করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘খোলাখুলিভাবে বলি, আমি যুদ্ধ শুরু করতে আজ এখানে আসিনি, বরং তা ঠেকাতে এসেছি। শুধু যুক্তরাষ্ট্রই না, ইউক্রেনে হামলা চালাতে রাশিয়া সাজানো হামলা চালাতে পারে—এমন দাবি অনেক পশ্চিমা নেতারও। তাঁদের মধ্যে রয়েছে সামরিক জোট ন্যাটোর প্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ থেকে শুরু করে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রস ও প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও। ইউক্রেন ঘিরে রাশিয়ার সেনা সমাবেশকে ঘিরে ইউরোপে যুদ্ধের উত্তেজনা বেড়েই চলেছে। বিভিন্ন পক্ষের দফায় দফায় আলোচনার পরও আশার আলো তেমন দেখা যায়নি। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবারেই ইউক্রেনের পূর্বে দেশটি সেনাদের সঙ্গে মস্কো সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জন্য দুই পক্ষই একে-অপরকে দায়ী করছে।
এদিকে ইউক্রেন ন্যাটোয় যোগ দেবে কি না সেই প্রশ্নে জবাবে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ন্যাটোর সদস্য পদ তাঁর দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। এ ইস্যুতে সমঝোতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। এর আগে সংকট সমাধানে সমঝোতার পথে হাঁটার ইঙ্গিত দিয়েছিল ইউক্রেন। চলতি সপ্তাহে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত জানিয়েছিলেন, ভাদিম প্রাইস্তাইকো বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে না জড়াতে প্রয়োজনে ন্যাটোয় যোগ দেওয়া থেকে বিরত থাকবে দেশটি। রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটের মূলে রয়েছে ন্যাটো। ন্যাটোতে যোগ দিতে বেশ এগিয়েছে ইউক্রেন। তবে এ নিয়ে মাথাব্যথা রয়েছে মস্কোর। ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদানকে নিজেদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে করে দেশটি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.