সমসাময়ীক বিষয়ে কূটনীতিক হস্তক্ষেপ

সমসাময়ীক বিষয়ে বিদেশী হস্তক্ষেপ বা নাক গলানো এখনো বন্ধ হয়নি। বন্ধ হওয়ার যথেষ্ট উপকরন এমনকি বাস্তব প্রমান থাকা সত্ত্বেও বন্ধ না হয়ে বরং নতুন নতুন ছকে এমনকি দুরভীসন্ধিমূলক পরিকল্পনায় মাকড়সার জালের ন্যায় অগ্রসর হচ্ছে। তবে এতে সবচেয়ে বেশী দায়ী দেশীয় নালিশকারীরা। ব্যক্তিস্বার্থ্য অথবা দলীয় স্বার্থ এমনকি পারিবারিক স্বার্থের জন্য তাদের ইচ্ছেমাফিক নালিশ দাখিল হচ্ছে প্রতিনিয়ত। তবে ঐ নালিশের ভিত্তি খুবই কম তবে সত্য ও মিথ্যার বেসাতি দিয়েই সাজানো ঐ নালিশগুলো। তবে মন-মানুষিকতার পরিবর্তনের জন্য আমরা নিজেরায় দায়ী আমাদের আত্ম অসম্মানের জন; আমাদের উপর খবরদারীর বেসামাল অবস্থার জন্য। তবে এর থেকে রেহাই পাওয়ার উপর নতুন করে গুরুত্ব দিয়ে উপায় বের করা দরকার অথবা আমাদের সমস্যা আমরাই সমাধান করব এই প্রবিধান তৈরীতে মনযোগী হতে হবে। এখনই কাজে নেমে পড়তে হবে যে, আমরা আর নালিশ করব না এবং নালিশী ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে যাবো না। নিজেরাই নিজেদের সমস্যা সমাধান করব এবং একে অন্যের উপর বিশ্বাস ও আস্থা রেখে দেশের কল্যাণ সাধনে মনোনিবেশ করব। দেশের স্বার্থ্য এবং জনগনের অধিকার খর্ব করে এমন কোন কাজে মনোনিবেশ করার আগে সাতবার ভেবে দেখব কি করছি এবং কাদের জন্য করছি অথব এতে আমার বা পরিবারের অথবা দেশের কি লাভ বা ক্ষতি; বর্তমানের কি ক্ষতি বা লাভ আর দীর্ঘমেয়াদীভাবে দেশের বা আমার কি লাভ অথবা ক্ষতি।
বিদেশী রাষ্ট্র বা কূটনৈতিক মহল বিশেষভাবে দেশীয় রাজনীতি বা রাষ্ট্র পরিচালনায় নাক গলায় বা হস্তক্ষেপ করে। যা দীর্ঘদিনের চর্চায় পরিণত হয়েছে। আমাদের মত দেশগুলোতে রাষ্ট্রের পট পরিবর্তনের জন্য; ক্ষমতার পালাবদলের জন্য অগ্রণী ভূমিকা রেখে আসছিল। কিন্তু বর্তমান শেখ হাসিনার সরকার ঐ কর্মকান্ডে পানি এবং ঘি ঢেলে সর্বশান্ত করে শুন্যের কোটায় নামিয়ে দিয়েছে। আর এই নামিয়ে দেয়া থেকে টেনে তুলতে এখন মরিয়া বিদেশী রাষ্ট্রের কুশীলবরা। তাদের চরিত্র, আচরণ এবং চর্চায় শুধূ সন্ধেহের ভাবনির্ভর কার্যক্রমই পরিলক্ষিত হচ্ছে। তবে দেশের জনগন ও সরকার এবং দেশীয় সংস্থাগুলো ঐ ষঢ়যন্ত্রের ফাঁদে পা না দিয়ে উল্টো সরকারের সঙ্গে একাঙ্গ হয়ে দেশেপ্রেমে নিমজ্জ্বিত থেকে দেশ গঠনে এমনকি দেশের মঙ্গলের জন্য সার্বক্ষণিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তাই বিদেশী ও দেশীয় ষড়যন্ত্রকারীদের ষঢ়যন্ত্র আলোর মুখ দেখছে না বরং মুখ থুবরে পড়েছে। বিদেশীরা তাদের স্বার্থ উদ্ধার এবং স্বার্থ হাছিলের জন্য এখন মরিয়া। কখনো সরকারের সঙ্গে হাত মিলাচ্ছে আবার কখনো সরকার বিরোধীদের সঙ্গে হাত মিলাচ্ছে; কখনো কখনো আবার সুশিল নামে কুচক্রিদের সঙ্গেও হাত মিলিয়ে উন্নয়ন ও অগ্রগতির প্রতিবন্ধকতা তৈরীতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখে যাচ্ছে। দেশের ভিতরে আভ্যন্তরিন বিষয়ে নাক গলাচ্ছে এমনকি মাঝে মাঝে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির দৃশ্যমানতায় উষ্কে দিয়ে দুতিয়ালী করছে। অর্থ ও পরিকল্পনা দিয়ে সহায়তা করে সফলতার আশা জিইয়ে রাখছে। মাঝে মাঝে মুখ ফসকে ষড়যন্ত্রের মুখোশ উন্মোচন করছে। আর সরকারও শুকুনের চোখের চেয়ে তিক্ষ ক্ষ্ন দৃষ্টি রেখে কর্মকান্ড পরিচালনা করে যাচ্ছে।
কুটনীতিকরা তাদের কুটুনীতি ইতিবাচক নয় বরং নেতিবাচকভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। অবস্থাদৃষ্টে এটাই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে আর তাদের বেপোরোয়াপনা প্রকাশিত হচ্ছে। সরকার মাঝে মাঝে হুশিয়ারী দিচ্ছে আবার মাঝে মাঝে সমঝোতায় বা আপসকামীতায় দেশ পরিচালনায় টিকে থেকে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে সমঝোতা বা আপসকামীতা সরকারের ইচ্ছা থেকে নয় বরং পরিস্থিতি থেকে মুক্ত হতে অথবা কুচক্রিমহলের নেতিবাচক সকল কর্মকান্ডের ফল থেকে বের হতে গিয়েই করে থাকে। তবে এর জন্যও দায়ী আমরা যা নালিশকারী এমনকি কুচক্রি হিসেবে চিহ্নিত। লক্ষ্য স্থির রেখে সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য যা যা প্রয়োজন তার সবটুকুই সরকার করে যাচ্ছে তবে মাঝে মাঝে ঐ আপসকামীতা বা সমঝোতা আমাদেরকে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতিতেও পরিণত করছে। এইখানে একটু ভেবে দেখে নতুন করে চিন্তা ও পরিকল্পনা করার সময় এখন। তবে নেতিবাচকতার ক্ষেত্রে এখন বর্তমানের কিছু কর্মকান্ড একশতভাগ দায়ী আর ঐ কর্মকান্ডের জন্য দায় গিয়ে পড়েছে সরকারের উপর। তাই সরকারকে এখন ঐ সকল কর্মকান্ড বন্ধে ব্যবস্থা নিয়ে এগুতে হবে। কিভাবে দুর্নীতি হয় এবং কাদের দ্বারা দুর্নীতি হয় এবং কিভাবে এইসকল বহি:বিশ্বে প্রকাশিত তা ভেবে দেখবেন কি? হ্যা এইক্ষেত্রে আমার ক্ষুদ্র অভিজ্ঞতা হয়েছে বিভিন্ন ফোরামে এবং স্বয়ং নিজে কাজে জড়িয়ে। এনজিও এবং সিকিউরিটি আর টিন ও টেক্স ক্লিয়ারেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রে। এনজিও ব্যুরোর গুরুত্ব দিন দিন বিলুপ্তির পথে কারণ যারা ঐখানে কর্মরত তারা শুধু বখশিশ এবং উপরি আয়ের জন্য; সরকারের কর্মকান্ডকে এগিয়ে নেয়ার জন্য নয়। কোন একটি কাজ টাকা ছাড়া হয়নি এবং কোন ধরনের সহযোগীতাও পাওয়া যায়নি ঐ সকল কর্মকর্তাদের কাছ থেকে। তবে যেহেতু বিদেশী দাতা ও কর্মীরা জড়িত ঐ ব্যুরোর সঙ্গে সেইহেতু ঐ জায়গাটি হওয়ার কথা ছিল স্বচ্ছ এবং নিজঞ্জাল। এই বিদেশীরাই দেশের নৈরাজ্য সম্পর্কে জেনে গিয়ে মাকড়সার জাল বোনার বিস্তৃতি ঘটাচ্ছে। বিভিন্ন ভাল এনজিও বন্ধ হচ্ছে ব্যুরোর সহযোগীতা না পেয়ে এমনকি সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স না পেয়ে। তবে যারা অবৈধ নীতি অনুসরন করছে তাদের সবই হচ্ছে কিন্তু সততা এবং স্বচ্ছতা অনুসারীদের ব্যবসা এবং এনজিও বন্ধ হচ্ছে; কারো কারো কর্মী বা শিক্ষক অথবা অর্থ সংগ্রহকারীর ভিসা বা নিরাপত্তা ছাড়পত্রের জটিলতায়। যারা জ্ঞানের আলো বিলাচ্ছে বিনা স্বার্থে এবং যারা মানুষের অন্য,বস্র, শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থানের যোগান দিচ্ছে তাদের কর্মকান্ড বন্ধ হচ্ছে সংস্থার কর্মকতা ও কর্মচারীদের ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য যা দেশের ও সরকারের বিরাট ক্ষতির কারণে পরিণত হচ্ছে। তাই এই জায়গাগুলোতে কাজ করার এখন উপযুক্ত সময়। কোন কোন ক্ষেত্রে টিন খোলা বা ট্যাক্স ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট পাওয়ার ক্ষেত্রে অনৈতিক লেনদেন করতে হয় তাই এই জায়গাটুকুতেও পরিবর্তন আবর্শক। এই প্রত্যেকটি বিষয়ের সঙ্গে আমি সরাসরি জড়িত। তবে এতে সরকারের উপকার ছাড়া অপকারই হচ্ছে তাই সরকারের কাছে করজোরে মিনতি করছি এই বিষয়গুলো গুরুত্বের সাহিত বিবেচনায় এনে পদক্ষেপ নিয়ে কার্যকর করণের যাবতীয় ব্যবস্থা দৃশ্যমান রাখুন। আমি স্বল্পপরিসরে উপস্থাপন করলাম কিন্তু এর বিশদ ব্যাপ্তি আমার ভান্ডারে রক্ষিত আছে সরকারের প্রয়োজনে সর্বাধিক সহযোগীতার আশ্বাস ও ভরসার শতভাগ নিশ্চয়তা দিচ্ছি। এইসকল বিষয়গুলোও ঐ নাক গলানোতে সহায়তা করে যাচ্ছে। তার এই নৈরাজ্যনামক লোভ-লালসার লাগাম টানাতে মনোনিবেশ করুন।
বিদেশীরা এখন বলতে শুরু করেছে ৭২’র সংবিধানের আলোকে নির্বাচন হতে হবে। তাই বলতে চাই আপনারা কি জানেন ঐ সংবিধানে কি ছিল আর ঐ সংবিধান ও বর্তমান সংবিধানের মধ্যে পার্থক্য কি? আমি আমার পরিচিত কয়েটি বিদেশী দুতাবাসে কুটনীতিক বন্ধুর সঙ্গে আলোচনা হয় এবং তাদেরকে সঠিক অবস্থা বুঝাতে অনেক কষ্ট হয়। তারা অনেক নেতিবাচক বিষয় বেশী জানেন এবং সেই অনুযায়ীই কথা বলেন। তবে বুঝালে বুঝতে চাই কিন্তু বোঝানোর লোকের সংখ্যা খুবই কম বরং নেতিবাচক বক্তব্য দেয়ার লোকই বেশী। এখানে নতুন করে ভাবতে হবে এবং সেই অনুযায়ী কাজ করতে হবে। বিদেশী দুতাবাসের কর্মকর্তারা ব্যতিব্যস্ত তাদের দেশীয় স্বার্থ রক্ষায় এবং কিভাবে ঐ স্বার্থ খাসিল করা যায় এমনকি ব্যবসায়ীদের জন্য মরনপণ চেষ্টা চালিয়ে ব্যবসা পাইয়ে দিতে মরিয়া থাকে। আমি তাদের সঙ্গেও বিভিন্ন সময়ের আলাপচারিতায় ঐ বিষয়গুলো লক্ষ্য করি এবং বিভিন্ন সংগঠনে জড়িত থাকার সুবাদে ঐ বিদেশীদের ব্যবসায়ী তৎপরাতা লক্ষ্য করি। ব্যবসায়ী মহলের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে ব্যবসায়ীক ফায়দা হাসিলে ব্যস্ত থাকেন। পক্ষান্তরে আমাদের কুটনীতিকরা কি এরকমই করেন? না আমার চোখে পড়ে না বরং বিপরীত দিকটুকুই পড়ে। ভাব নেয়া এবং নিজস্ব ভাবনা এমনকি সুযোগ সুবিধার চিন্তায় ব্যস্ত সময় পার করাই তাদের লক্ষের প্রাধান্য থাকে। তাই ঐ জায়গাগুলোতেও কাজ করা প্রয়োজন। দেশের স্বার্থের জন্য দেশীয় ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন নতুন দরজা খোলা এবং ব্যবসার প্রসার লাভে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার ব্যবস্থা উন্মোচন করতে সবিনয় অনুরোধ রাখছি।
পরিশেষে বলতে চাই সময় এখনও আছে এবং সুযোগ এখনো হাতছাড়া হয়নি তাই মাকড়সার জাল আর বিস্তৃত হতে দেয়া যাবে না বরং এর রোধকল্পে স্ব স্ব অবস্থান থেকে কাজে নেমে পড়তে হবে। সরকার এবং এর অধিন্যস্ত সংস্থাগুলি এমনকি সাধারণ জনগন এই ব্যবস্থার সঙ্গে একাঙ্গ হয়ে কাজ করতে যাবতীয় ব্যবস্থা উন্মুক্ত করুন এবং কাজের চলমান ধারাবাহিকতা দৃশ্যমান রাখুন। পৃথিবীতে কেউ চিরস্থায়ী নয় বরং অল্পদিনের পরবাসী হয়েই সকলের বিচরন। এই পৃথিবী আমার ও আপনার নয় বরং আমরা সবাই এই পৃথিবীতে বিদেশী হিসেবে স্বীকৃত। পৃথিবী আমাদের কাউকেউ নির্ধারিত দিনের বেশী এক সেকেন্ডও রাখবে না এমনকি রাখেওনি। অনেক শক্তিশালী এমনকি জ্ঞানী ও গুণীজন এসেছিল এবং চলেগিয়েছে আর তাও নিজের ইচ্ছায় নয় বরং পৃথিবীর ইচ্ছায় সৃষ্টিকর্তার ইশারায়। তাই আমাদেরকেও যেতে হবে নিশ্চিত। তাই যাওয়ার আগে নিজের জন্য নয় বরং পৃথিবীর সকল সৃষ্টির জন্য কাজ করে যাই যা সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টিপূর্ব অভীপ্রায়। আর এই কারণেই সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। আসুন আমরা ধর্ম, ইতিহাস, সংস্কৃতি ও পারিপাশ্বিক দৃশ্যমান অবস্থা থেকে শিক্ষা নিয়ে নাগরিকত্ববীহিন জীবনের অবসানকল্পে মানব কল্যাণ বা সৃষ্টির কল্যাণে নিয়োজিত হই। যাতে “যা সত্য, যা উপযুক্ত, যা সৎ, যা খাঁটি, যা সুন্দর যা সম্মান পাবার যোগ্য, মোটকথা যা ভাল এবং প্রশংসার যোগ্য সেইদিকে তোমরা মনদাও।” হ্যা পারিপাশ্বিক অবস্থার ইতিবাচক নিরসনকল্পে আমরা এই উক্ত বক্তব্যের আলোকেই দিনাতিপাত করি। জয় আমাদের সুনিশ্চিত। আল্লাহ আমাদের সহায় ও ভিত্তি, উৎস এবং অনুপ্রেরণা আর তাঁর পরিচালনা ও সুরক্ষা আমাদে সফলতার নিশ্চয়তা।

Leave a Reply

Your email address will not be published.