আসামের সঙ্গে সড়ক-রেল-নৌ-বিমান যোগাযোগ বাড়াতে ঐকমত্য

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ভারতের আসাম রাজ্যের গভর্নর (রাজ্যপাল) জগদীশ মুখী ও মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বৈঠকে আসামের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ও যোগাযোগ বৃদ্ধিতে সড়ক, রেল, নৌ ও বিমান যোগাযোগ উন্নয়নে বাস্তব পদক্ষেপ নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়। ত্রিপুরা ও আসাম সফররত মন্ত্রী হাছান মাহমুদ গত বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে প্রথমে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে ও পরে গভর্নরের ‘রাজ ভবনে’ তাদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন।
বৈঠকে বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের লক্ষ্যে পারস্পরিক যাতায়াত, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড ও বাণিজ্য বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা করেন আসামের গভর্নর ও বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে ক্রমবর্ধমান শিল্পায়ন ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বনায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তারা। এসময় উপস্থিত সংসদ সদস্য ও কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমের গুয়াহাটিতে লোকসংগীত উৎসবের প্রস্তাবেও আগ্রহ প্রকাশ করেন গভর্নর। এর আগে তথ্যমন্ত্রী আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় নৌপথে বাণিজ্য সুগম করতে নাব্যসহ চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা করেন তারা। একই সঙ্গে পর্যটন প্রসারে ঢাকা-গুয়াহাটি সরাসরি বিমান চলাচল পুনরায় চালু করা এবং গুয়াহাটি থেকে আগরতলা হয়ে কক্সবাজার বিমান চলাচল শুরুর বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়।
এছাড়াও দুদেশের যোগাযোগ বৃদ্ধিতে ভারতের আসামের ঐতিহ্যবাহী বিশাল রেলপথ নেটওয়ার্কের সঙ্গে বাংলাদেশের সংযোগ সাধন ও সড়ক যোগাযোগ উন্নয়ন নিয়েও আলোচনা হয়েছে। স্থল বন্দরগুলোকে আরও কার্যকর করতে অবকাঠামো সংস্কার এবং পণ্য আমদানি-রপ্তানি বিধি যুগোপযোগী করার বিষয়েও একমত হন তারা। এসময় বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ১৫ মুক্তিযোদ্ধাকে আসাম রাজ্য সরকার বিশেষ সংবর্ধনার জন্য আমন্ত্রণ জানাবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা।
আসামের গভর্নর ও মুখ্যমন্ত্রী দুজনেই বৈঠক শেষে টুইট করেছেন। গভর্নর তার টুইট বার্তায় লেখেন, ‘বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষত বনায়ন ও পরিবেশ নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে।’ মুখ্যমন্ত্রী এ সাক্ষাতকে আনন্দের বর্ণনা করে টুইট বার্তায় লেখেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে আসামের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যগত সম্পর্ককে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের মধ্য দিয়ে আরও গভীর করার প্রয়োজন রয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর উত্তর-পূর্ব ভারতের জলপথকে সুগম করার চাবিকাঠি। এবিষয়ে সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ।’ বৈঠকে বাংলাদেশের সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম ও সাইমুম সারওয়ার কমল, তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মো. মকবুল হোসেন, দিল্লিতে নিযুক্ত উপহাইকমিশনার নূরুল ইসলাম এবং গুয়াহাটিতে নিযুক্ত সহকারী হাইকমিশনার ড. শাহ মোহাম্মদ তানভীর মনসুর উপস্থিত ছিলেন। ২৩ থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি ভারতের ত্রিপুরা ও আসাম সফররত তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এর আগে ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের সঙ্গে বৈঠক করেন। এছাড়াও আগরতলা ও গুয়াহাটিতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব ও আসামের ডাউন টাউন বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে বঙ্গবন্ধু কর্নার ও জামদানি বিতান উদ্বোধন করেন মন্ত্রী।

Leave a Reply

Your email address will not be published.