রাষ্ট্রের বিকাশ ও উন্নয়নের শত্রু সাম্প্রদায়িক অপশক্তি; তথ্যমন্ত্রী

প্রশান্তি ডেক্স ॥ সাম্প্রদায়িক অপশক্তি মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্ন, তথা রাষ্ট্রের বিকাশ ও উন্নয়নের শত্রু বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের দল মনে করে, আমাদের সরকার মনে করে, সাম্প্রদায়িকতা, সাম্প্রদায়িক অপশক্তি রাষ্ট্রের বিকাশের ক্ষেত্রে শত্রু, রাষ্ট্রের উন্নয়নের ক্ষেত্রে শত্রু, আমাদের পূর্বসূরি মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে শত্রু, এই রাষ্ট্রের শত্রু।’ গত শুক্রবার ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির প্রাঙ্গণে মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই মাটিতে আপনারা জন্মগ্রহণ করেছেন, আপনাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সরকার আপনাদের পাশে আছে। আমি যেহেতু দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, আমাদের দল আওয়ামী লীগ আপনাদের পাশে আছে।’ তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘গত দুর্গাপূজার সময় যখন পরিকল্পিতভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হয়, বিভিন্ন পূজামন্ডপে ও হিন্দু সম্প্রদায়ের সম্পত্তিতে হামলা চালানো হয়; আমাদের অনেকেই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন। আমাদের দলের নেতা-কর্মীরা আপনাদের পাশে ছিলেন। যেকোনো সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে নির্মূল করার জন্য আমরা বদ্ধপরিকর।’
এদিকে সম্মেলনে পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি জে এল ভৌমিক অভিযোগ করে বলেন, ‘বলা হয়, আওয়ামী লীগ অসাম্প্রদায়িক। যত জায়গায় অত্যাচার হয়েছে, তিনবার গিয়েছি কুমিল্লায়, নোয়াখালীতে গিয়েছি। ঘটনার সময় কিংবা ঘটনার পরবর্তী সময় একজন আওয়ামী লীগ নেতাও আসেননি। আমরা যাওয়ার পর তাঁরা এসে দুঃখ প্রকাশ করেন; যা ক্ষতি হওয়ার সব হয়ে গেছে। বিষয়টা এমন, তাঁরা (হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ) যেন আস্তে আস্তে এ দেশ থেকে চলে যান।’
সাংসদ বীরেন শিকদার বলেন, ‘একটি নির্বাচন যখন আসে তখনই হিন্দু সম্প্রদায়ের সবাই অত্যন্ত দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, আমরা এখনো একটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি না হয়ে কোনো নির্বাচন এখানে হয় না।’ তিনি আরও বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক সংবিধানকে আবার অসাম্প্রদায়িকে পরিবর্তন করার যে প্রচেষ্টা তা সম্পূর্ণভাবে সফল হয়নি। রাষ্ট্রধর্ম, রাষ্ট্রের চরিত্র যে পাল্টানো হয়েছে, তা এখনো পরিবর্তন করা সম্ভব হয়নি। বাস্তব প্রেক্ষাপটে এটা কতটা সম্ভব, তা আপনারা অনুমান করতে পারেন।’ সাংসদ পঙ্কজ দেবনাথ বলেন, হিন্দুরা চলে গেলে এই দেশ আফগানিস্তান, পাকিস্তান হয়ে যাবে। সমাজ হচ্ছে জাতি-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে পারস্পরিক নির্ভরশীলতা। সমাজের ভারসাম্য রাখার জন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব।
এ দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা সুখে নেই বলে সম্মেলনে উল্লেখ করেন মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির সহসভাপতি মণীন্দ্র কুমার নাথ। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর আস্থা রাখতে চাই। আমরা এ দেশের নাগরিক। আমরা সম্মান নিয়ে বাঁচতে চাই।’
সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রনাথ পোদ্দার, মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি শৈলেন্দ্রনাথ মজুমদার প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published.