বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের জন্য আওয়ামী লীগ সরকার স্থায়ী বাসস্থান ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বা আ॥ অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ও প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য ৮ বিভাগে স্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৫তম বিশ্ব অটিজম সচেতনা দিবস ২০২২ উপলক্ষে আজ শনিবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে তিনি এ কথা জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি জানি প্রত্যেকের ওই ধরনের চিন্তা, বাবা-মা ওইভাবে ভাবে যদি সে না থাকে তার শিশুর কী হবে। সে চিন্তা আমাদেরও আছে। সে জন্য আমাদের একটা উদ্যোগ আছে, আমরা যে ট্রাস্ট গঠন করেছি তার মাধ্যমে যদি আমরা এমন ব্যবস্থা করে ফেলি যখন কোনো গার্ডিয়ান থাকবে না, দেখা-শোনার কেউ থাকবে না তখন তারা সেখানে বসবাস করতে পারে। ট্রাস্টের মাধ্যমে আমরা এ ধরনের হোস্টেল বা ডরমিটরি নির্মাণ করতে পারি।

আর তাদের সুরক্ষা বা দেখাশোনার জন্য লোক থাকবে। সেখানে আপনারা যারা বিত্তশালী আছেন, ডোনেশন দিতে পারবেন। যার মাধ্যমে ওটা চলবে। আর সরকারের পক্ষ থেকে অন্তত আমি যতক্ষণ আছি, এটুকু বলতে পারি সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা আমরা করবো। শুধু ঢাকা শহর না, প্রত্যেকটা বিভাগীয় শহরে বা বড় বড় শহরগুলোতে এ ধরনের পদক্ষেপ আমাদের নেওয়া উচিত। কারণ এটা বাস্তবতা বাবা-মা না থাকলে তাদের কে দেখবে? সবাই তো আর আন্তরিকতার সঙ্গে দেখে না। কিছু কিছু মানুষ এত বেশি স্বার্থপর হয়ে যায়, নিজের বাবা-মাকেও দেখে না। সম্পত্তি নিয়েও মারামারি করে। সে ক্ষেত্রে এই শিশুদের কে দেখবে! সে জন্য এ ধরনের ব্যবস্থা আমরা করবো। চিন্তা-ভাবনা আছে, অবশ্যই আমরা করবো—বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার পরে আমাদের ১৯টি জেলা ছিল বড়, সব জেলায় সমাজ কল্যাণের জন্য বিশাল বিশাল জায়গা দিয়ে গিয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। সেখানে এতিমখানা বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠান আছে কিন্তু আমরা প্রতিবন্ধীদের জন্য কিছু করতে চাই। প্রতিবন্ধী ও অটিজমের শিকার শিশুদের যত্ন নেওয়া সব সুস্থ মানুষের দায়িত্ব। কেউ যেন এদের অবহেলা না করে। আমরা ছোটবেলায় শিখেছি, কানাকে কানা বলিও না, খোঁড়াকে খোঁড়া বলিও না। এটা যেন ছোটবেলা থেকেই শিশুরা শেখে। আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি, এই এগিয়ে নিয়ে যাওয়াটা হচ্ছে আমাদের সর্বস্তরের মানুষের জন্য। সবাই সুন্দর জীবন পাবে, উন্নত জীবন পাবে। সুন্দরভাবে বাঁচবে। সেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা রাষ্ট্র পরিচালনা করে যাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা কোনো একটা স্থায়ী আবাসন বা কর্মসংস্থান করা যায় সে ধরনের প্রতিষ্ঠান আমরা গড়ে তুলবো। সমাজকল্যাণমন্ত্রীকে বলবো, এর ওপর একটি প্রকল্প নিয়ে আসতে। প্রথমে ৮টি বিভাগে করে দেবো, পর্যায়ক্রমে প্রতি জেলায় আমরা করে দেবো। এ ক্ষেত্রে যারা বিত্তশালী আছেন তাদের আমি বলবো, অনেক টাকা-পয়সা অনেকের হয়ে গেছে। আমাদের অর্থনীতি যত বেশি শক্তিশালী হচ্ছে, দারিদ্র্য বিমোচন হচ্ছে। গ্রামের মানুষ আর্থিক সচ্ছলতা পাচ্ছে। কিছু এখানে ব্যয় করলে সেটা দেশের কাজে লাগবে। যথাযথ কাজে লাগবে। ট্রাস্টের মাধ্যমে এ ধরনের আবাসন ব্যবস্থা, প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, সেইসঙ্গে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা যাতে করে ইনশাল্লাহ আমি করে দেবো।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি সরকারে আসার পর থেকে সব সময় এ দেশের প্রতিবন্ধীদের জন্য কিছু করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। তবে সে সময় অটিজম সম্পর্কে সচেতনতাটা আমাদের ছিল না। কিন্তু প্রতিবন্ধীদের জন্য আমরা তখন ব্যবস্থা নিই। ১৯৯৯ সালে জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করি এবং সেটা পরিচালনার জন্য সিড মানিও আমি দিয়েছিলাম। নিউরো ডেভলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার অ্যান্ড অটিজম বিষয়ে জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির সভাপতি সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুলের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় দেশে ও বিদেশে অটিজমের গুরুত্ব ও সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। মূলত তার কাছ থেকেই এটা শিখেছি-জেনেছি। সে যখন ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করতো, তখন আমি যেতাম। সে সময় কিছুটা ধারণা পাই।

সরকারের নানা উদ্যোগ তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা ২০১৪ সালে নিউরো-ডেভলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা করি। ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশের অটিজমসহ নিউরো ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী (এনডিডি) ব্যক্তিদের জীবনমান উন্নয়নে বিভিন্ন কার্যক্রমও আমরা গ্রহণ করি। এ ট্রাস্টকে ১৪৩ কোটি টাকা অনুদান প্রদান করেছি। ২০১৭ থেকে এই ট্রাস্ট থেকে এ পর্যন্ত ৫ হাজার ৭০১ জনকে ৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে। এনডিডি ব্যক্তিদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বঙ্গবন্ধু সুরক্ষা বীমাও চালু করা হয়েছে। পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে, এটা কার্যকর হলে সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। আমরা প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কিত সমন্বিত বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা, ২০১৯ প্রণয়ন করেছি। নীতিমালা অনুযায়ী, বিশেষ স্কুল স্থাপন ও অনুমোদনের কার্যক্রম চলমান আছে। সারা দেশে ৪৭টি বিশেষ বিদ্যালয় সরকারি অনুদানে পরিচালিত হচ্ছে। বিশেষ কারিকুলামও তৈরি হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী জানান, এনডিডি বৈশিষ্টসম্পন্ন ব্যক্তিদের যত্ন নিতে মাতা-পিতা, অভিভাবক ও শিক্ষকদের বিশেষ প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে। এই প্রশিক্ষণ ভবিষ্যতেও চালু থাকবে, সব সময় চালু থাকতে হবে। অটিজম বৈশিষ্টসম্পন্ন ব্যক্তির জন্য ‘স্মার্ট অটিজম বার্তা’ নামে অ্যাপ চালু হচ্ছে এবং ‘বলতে চাই’ নামে আরও একটি অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে যা উদ্বোধন করা হবে। যা মোবাইল অথবা ট্যাবের মাধ্যমে ব্যবহার উপযোগী করে অমৌখিক যোগাযোগ; যারা হয়তো কথা বলতে সক্ষম না, তারাও এটা ব্যবহার করতে পারবে এবং তারা এর সুফল পাবে। এনডিডি ব্যক্তিদের জীবনচক্রব্যাপী বিভিন্ন সেবা প্রদানের জন্য ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজিক অ্যাকশন প্ল্যান ২০১৬-২০৩০ প্রণয়ন করা হয়েছে। এর আলোকে প্রথম পর্যায়ে ১৪টি অটিজম ও এনডিডি সেবা কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে। পরবর্তীতে এসব কেন্দ্র আরও বাড়ানো হবে। আমরা ২০ লাখ ৮ হাজার প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে মাসিক ৭৫০ টাকা করে ভাতা দিয়ে যাচ্ছি। যারা শিক্ষার্থী, তাদের জন্য বিশেষ ভাতার ব্যবস্থা করেছি। যারা ছাত্র-ছাত্রী তাদের ৭৫০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা পর্যন্ত বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে যাতে তারা লেখা পড়াটা করতে পারে।

তিনি বলেন, আমরা সরকারে আসার পর থেকে আমাদের সরকার সামাজিক সুরক্ষার কথা চিন্তা করে আমরা বয়স্কভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, বিভিন্ন ভাতা আমরা প্রদান করে যাচ্ছি। প্রায় ১ কোটি ২ লাখ মানুষ এটা ভোগ করছে। সেখানে প্রতিবন্ধীর জন্য বিশেষ ভাতা এবং তাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি। প্রতিবন্ধী শনাক্তকরণ জরিপ কর্মসূচির মাধ্যমে প্রতিবন্ধীদের সুবর্ণ নাগরিক কার্ড দেওয়া হচ্ছে। অতীতে যখন সেন্সাস রিপোর্ট করা হতো, তখন সুনির্দিষ্টভাবে রিপোর্টে রাখা হতো না। আমরা সেখানে আলাদাভাবে হিসাব রাখছি। তাদের জন্য আলাদাভাবে তালিকা করছি এবং সেখান থেকেই সুযোগ-সুবিধা ও সুরক্ষা ব্যবস্থা করে দিই। সরকারি চাকুরিতে প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ কোটা নির্দিষ্ট এটা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবই করে দিয়ে গেছেন। এবার বাজেটে আমরা আরেকটা ব্যবস্থা করেছি, প্রতিবন্ধী বা তৃতীয় লিঙ্গ সমাজের এক সময় অবহেলিত শ্রেণি ছিল তাদের যদি কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান চাকরি দেয়, তাহলে এদের বেতন দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা পাবে।

ঢাকার মিরপুরে জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনে ২০১০ সালে একটি অটিজম রিসোর্স সেন্টার চালু করা হয়েছে।
মিরপুরে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আবাসিক চিকিৎসা, প্রশিক্ষণ সুবিধা, শিক্ষা প্রদানের জন্য একটি মাল্টিপারপাস প্রতিবন্ধী কমপ্লেক্স (সূবর্ণ ভবন) নির্মাণ করা হয়েছে। এ কমপ্লেক্সে এনডিডিসহ বিভিন্ন শ্রেণির প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের শিক্ষা, চিকিৎসাসহ ২৭৫ জন প্রতিবন্ধী ও অটিজম ব্যক্তির জন্য শেল্টার হোমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে এটা আমরা ভবিষ্যতে আরও বাড়াবো এবং বিভিন্ন এলাকায় করবো সে ধরনের চিন্তা আমাদের আছে। আমাদের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন খেলোয়াড়রা আমাদের জন্য অনেক সম্মান নিয়ে আসে। যেমন স্পেশাল অলিম্পিকে স্বর্ণ ও রৌপ্য পদক বিজয় তারাই করেছে। যেটা হয়তো আমাদের সুস্থরা পারে না কিন্তু আমি দেখি প্রতিবন্ধীরাই আমাদের জন্য বেশি সম্মান নিয়ে আসে। তাই তাদের খেলাধুলার দিকে আমরা বিশেষ দৃষ্টি দিচ্ছি। তাদের খেলাধুলা অনুশীলনের জন্য আলাদা জায়গা করে দিচ্ছি, একাডেমি করে দিচ্ছি—বলেন তিনি।

অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ব্যক্তিদের জাতীয় জীবনের মূলধারায় নিয়ে আসার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনস্টিটিউট ফর প্যাডিয়েট্রিক নিউরো-ডিসঅর্ডার অ্যান্ড অটিজম (ইপনা) প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। অর্থাৎ অটিজম আছে কি না শুরুতেই যদি চিহ্নিত করা যায়, তাহলে তাদের উপযুক্ত ট্রেনিং দিয়ে বা তাদের সঙ্গে সেভাবে ব্যবহার করে সুস্থ করে তোলা যায়। সেই চেষ্টা আমাদের রয়েছে। প্রতিবন্ধী শিশুদের একীভূত শিক্ষা কার্যক্রম সম্প্রসারণে একাডেমি ফর অটিজম অ্যান্ড নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅ্যাবিলিটিস নামে একটি একাডেমি স্থাপনের কাজ চলছে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এবং আমাদের নানামুখী কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে অদূর ভবিষ্যতে অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ব্যক্তিদের জাতীয় জীবনের মূলধারায় নিয়ে আসা সম্ভব এটা আমি বিশ্বাস করি। কারণ আমাদের মনে রাখতে হবে এটা কোনো রোগ নয়। এক সময় ছিল কোনো শিশু যদি প্রতিবন্ধী হতো পরিবার তাকে লুকিয়ে রাখতো।

আমি এটুকু বলবো, সায়েমা ওয়াজেদ যখন শুরু করল এই অটিজম নিয়ে কার্যক্রম, মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা, রেজ্যুলেশন নেওয়া—এ ধরনের কার্যক্রম নেওয়ার ফলে আজ শুধু আমাদের দেশে নয়, সারা বিশ্বে এই বিষয়টা মানুষ সহজভাবে গ্রহণ করে নিয়েছে এবং এটা কোনো রোগ না, এটা কোনো অসুস্থতা না। একটা মানুষের জন্ম যেভাবে হয়েছে, তাকে তো আমরা অবহেলা করতে পারি না, ফেলে দিতে পারি না। তাদের আপন করে নিতে হবে। এক সময় আমাদের দেশে পরিবারগুলো বড় ছিল, যৌথ পরিবার ছিল। এই যৌথ পরিবারে যখন একটা শিশু এ ধরনের সমস্যা নিয়ে জন্মগ্রহণ করতো, তারা অনেক ভাই-বোন, আত্মীয় পরিবার-পরিজন সবার সঙ্গে চলতে-ফিরতে অনেক সময় এই সমস্যাগুলো স্বাভাবিকভাবে দূর হয়ে যেত। এখন ছোট পরিবার, সুখী পরিবার হয়ে যেয়ে হয়তো একা একা তখন ওই ক্ষেত্রে এদের মেধা বিকাশের সুযোগ হয় না। সুস্থ হওয়া সম্ভব না। আমি মনে করি, যেসব শিশুদের মধ্যে অটিজম একটু কম আছে বা যারা মিশতে পারে বা যারা প্রতিবন্ধী তাদের সাধারণ স্কুলে একসঙ্গে ছোটদের সঙ্গে বড় করা যায় তাহলে সবার সঙ্গে বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে থেকে থেকে নিজে থেকে অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠবে। কারণ তারা একে অপরের সঙ্গে শেয়ার করতে শেখে, ঝগড়া করুক-বন্ধুত্ব করুক বা মারামারি করুক তার মধ্য দিয়ে তাদের ভেতর আত্মবিশ্বাস গড়ে উঠে। শুধু আলাদাভাবে পড়াশোনার ব্যবস্থা করলেই চলবে না সবাইকে। হ্যাঁ, যারা মিশতে পারে না তাদের জন্য থাকবে কিন্তু যত বেশি আমরা অনেক মানুষের সঙ্গে তাদের মিশতে সুযোগ করে দেবো তত দ্রুত তারা সুস্থতা লাভ করবে বলে আমার বিশ্বাস, বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অটিজম বা এনডিডি বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশু ও ব্যক্তিরা অন্যান্য প্রতিবন্ধী ব্যক্তির চেয়ে একটু আলাদা এটা ঠিক। কিন্তু তাদের যথাযথ থেরাপি ও চিকিৎসা সেবা দিতে হবে। এটা যদি আমরা দিতে পারি তাহলে আস্তে আস্তে তাদের জীবন অনেকটা সহজ হয়ে আসবে। এনডিডি সুরক্ষা ট্রাস্টের আওতায় সেবা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে এদের জীবনমান উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং সমাজে তাদের অন্তর্ভুক্তির ব্যবস্থা দ্রুত করার জন্য আমি আহ্বান জানাচ্ছি। আমি যতক্ষণ আমি আছি এ ব্যাপারে সব ধরনের সহযোগিতা করে যাব। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় অটিজম বৈশিষ্টসম্পন্ন ব্যক্তিসহ কেউ পিছিয়ে থাকবে না। সবার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমার দৃষ্টিতে সমাজের যারা অনগ্রসর বা অবহেলিত পড়ে আছে তারা সমাজের একটি অঙ্গ। তাদেরও যে কর্মদক্ষতা আছে, মেধা আছে সেটা বিকাশের সুযোগ করে দিচ্ছি। অটিজমসহ অন্যান্য প্রতিবন্ধীব্যক্তিদের জন্য উন্নত আধুনিক শিক্ষা পদ্ধতি ও পরিচর্যায় নতুন বিষয়বস্তু প্রবর্তনের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মানের যে কোনো পদ্ধতি বা টুলস বা কেয়ার গিভিংওয়ে বা অ্যাপস কী করে অনুসরণ করা যায় বা কাজে লাগানো যায় সে বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা আমরা করে যাব। যে কোনো প্রয়োজনে আপনাদের সবার পাশে আছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.