ভাঙনের ঝুঁকিপূর্ণ ৫৪ এলাকা চিহ্নিত: পানিসম্পদ উপমন্ত্রী

ফরিদপুর প্রতিনিধি ॥ পানিসম্পদ উপমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম এনামুল হক শামীম বলেছেন, দেশের ২২টি জেলায় ভাঙনের ঝুঁকিপূর্ণ ৫৪টি এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব এলাকায় যেহেতু স্থায়ী প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বাংলাদেশের মানুষ অনেকাংশে জলাবদ্ধতা ও নদী ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে। আর এর সুফল কয়েক বছরের মধ্যে মিলবে। গত বৃহস্পতিবার (১২ মে) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ফরিদপুর নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট পরিদর্শন এবং কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশে বন্যা ও নদী ভাঙনের ঝুঁকির বিষয়টি তুলে ধরে পানিসম্পদ উপমন্ত্রী বলেন, এ বন্যা অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ওপর নির্ভর করে না। এটা ভারতের আসাম, জলপাইগুড়ি, নেপাল ও চীনের অঞ্চলগুলোর ওপরেও নির্ভর করে। তাই সারাদেশে তীব্র নদী ভাঙনকবলিত ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে স্থায়ী সমাধানের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার কারণেই গত ১৩ বছরে সারাদেশে নদী ভাঙনের পরিমাণ সাড়ে ৯ হাজার হেক্টর থেকে সাড়ে ৩ হাজার হেক্টরে নেমেছে। হাওড় অঞ্চলেও ভাঙন রোধে কাজ করা হয়েছে। এ কারণে সেখানকার কৃষকরা ফসল ঘরে তুলতে পেরেছেন। দুর্নীতি যাতে না হয় এবং কাজের ক্ষেত্রে যাতে গুণগত মান বজায় থাকে, সেজন্য নিয়মিত মনিটরিং করা হয়। কাজের ব্যাপারে কোনো প্রকার গাফিলতি, অনিয়ম ও দুর্নীতি সহ্য করা হবে না বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ভাঙণ রোধে স্থায়ী প্রকল্প করা হচ্ছে। উপকূল অঞ্চলে প্রতিটি বাঁধ প্রশস্ত ও উঁচু করা হচ্ছে, বনায়ন করা হচ্ছে। আর এসব স্থায়ী প্রকল্পে নদী খনন বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে এবং তা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জনবলও বাড়ানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী প্রজন্ম নিয়ে ভাবেন, সেজন্য তিনি আগামীর বাসযোগ্য বিশ্বমানের সুবিধা সম্বলিত বাংলাদেশ গড়তে চান। এজন্য তিনি দূরদর্শী পদক্ষেপ নেন। সেজন্য তিনি ডেল্টাপ্লান-২১০০ বাস্তবায়নেরও ঘোষণা দিয়েছেন। আর এই মহাপরিকল্পনার সিংহভাগ কাজই পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করবে। এ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে সারাদেশে নদী ভাঙন ও জলাবদ্ধতার কোনো সমস্যাই থাকবে না। এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে বলেও জানান পানিসম্পদ উপমন্ত্রী।
সেখানে অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মো. আলিমউদ্দিন, পাউবো ফরিদপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবদুল হেকিম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সৈয়দ সাহিদুল আলম, ফরিদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা, শরীয়তপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম আহসান হাবীব, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপ-কমিটির সদস্য জহির সিকদারসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published.