উন্নয়নে সফলতা আর রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা

উন্নয়ন এবং সফলতা এই দুটোই এখন সমানে সমান। কিন্তু রাজনীতিতে স্থিতিশীলতায় এখনও ঘাটতি রয়েছে। রাজনীতির নীতিতে এখনও ফাটল ধরে আছে এমনকি রাজনৈতিক বিভক্তি এখনও সমাজ, সংসার ও রাষ্ট্রকে জর্জরিত করে যাচ্ছে। তাই রাজনৈতিক সফলতা বা স্থিতিশীলতা আজ অভাবের তোরে ভেসে যাচ্ছে। রাজনৈতিক সফলতার স্থিতিশীলতা আনয়ন জরুরী হয়ে পড়েছে। শুধু যে আমাদেরই দেশেই এই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অভাব তা কিন্তু নয় সমগ্র বিশ্বেই আজ এর অভাব প্রখর হয়ে দৃশ্যমান হচ্ছে। বিশ্বের সর্ববৃহত গনতন্ত্রের দেশেও আজ ঐ একই অবস্থা বিরাজ করছে। আস্থার জায়গাই এই অনাস্থা বিরাজ করছে। তাই এই উপমহাদেশ তথা সমগ্র বিশ্বই এখন গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, স্থিতিশীলতা উন্নয়ন এবং রাজনীতিকে এক কাতারে নিয়ে আসতে হিমসীম হাচ্ছে। তাই এখনই সময় আমাদের উন্নয়ন, সফলতা, গণতন্ত্র, রাজনীতি, স্বাধীনতাসহ সকল মৌলিক কর্মকান্ডে রাজনীতিকে স্বচ্ছ এবং জবাবদীহিতায় আনয়ন এমনকি সেবার মানোন্নয়ন এর ব্যাপ্তি বৃদ্ধিকল্পে কাজ করতে হবে। পুরোনো ধ্যান ধারনা এবং সংস্কৃতি এমনকি ভাবনাগুলোতে নতুনত্ব আনয়নে কাজ করে যেতে হবে।
বাংলাদেশ অনেকদুর এগিয়েছে এবং এগিয়ে যাচ্ছে ও যাবে। এই এগুনোতেও বড়ধরনের বাধার সম্মুক্ষিন হচ্ছে, প্রতিবন্ধকতার বেড়াজালে আবদ্দ থেকেও এগুনোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তবে এই প্রতিবন্ধকতাগুলো কিসের এবং কাদের দ্বারা সৃষ্ট আর কিসের মাধ্যমে চলমান রয়েছে তা খুঁজে বের করে অপসারনে কাজ করতে হবে। এই আগাছা আর বেশীদিন বয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে না। প্রতিবদ্ধকতা রয়েছে রাজনীতিতে, আস্থা এবং বিশ্বাসে, পারস্পরিক সৌহাদ্যপূর্ণ সম্পর্কে; সততা এবং পরোপকারী জীবন-যাপনে, কল্যাণকর সকল কিছুতে, মতভেদের বেড়াজাল এখন পরিবার, সমাজ ও সংস্কৃতিতে আর সর্বোপরি রাষ্ট্রপরিচালনায়। দলীয় আনুগত্য এবং রাজনৈতিক আনুগত্যের শিষ্টাচারে, শুদ্ধাচারে, নীতি ও আদর্শের দ্বন্দে বিলিন হচ্ছে সমুহ সম্ভাবনাগুলো। একক প্রচেষ্টায় সকলকিছু করে সফলতা পাওয়া কষ্টকর। আর এই কষ্টকর অসাধ্য কাজটুকুই এখন চলছে। তবে দশের লাঠি একের বোঝা এই বাক্যের তাৎপর্য ও গুরুত্ব যে অপরিসীম তা হারে হারে টের পাওয়া যাচ্ছে। একা এবং একক প্রচেষ্টায় কোন কিছুই সম্ভব না তার জলন্ত এবং জীবন্ত শিক্ষা স্বয়ং আমাদের সৃষ্টিকর্তা। যা তিনি মানুষ সৃষ্টি করে বহু বংশ করে, বংশবৃদ্ধির ক্ষমতা দিয়ে পৃথিবীকে শাসনের অধিনে বা পরিচালনার অধিনে এমনকি দেখাশুনার ও সেবা করার কাজটুকু করে যাচ্ছেন। তাই ঐ আদী শিক্ষা এবং সৃষ্টিকর্তার অভিপ্রায়ে মনযোগী হতে অগ্রসর হওয়ার তাগিদ অনুভব করছি। একাকিত্বের বেড়াজাল থেকে বেড় হওয়ার জন্য আদমের যেমন সঙ্গির প্রয়োজন ছিল ঠিক তেমনি এখন আমাদেরও যুগোপযোগী এবং উপযুক্ত সঙ্গীর প্রয়োজন। সকল বিভেদ ও মতভেদ ভুলে গিয়ে একে অন্যের পরিপূরক হয়ে কাজ করার সময় এখন। রাজনীতিকে কুলুষমুক্ত করে নীতি ও আদর্শকে স্বচ্ছ ও শান্তির আবরণে ব্যবহার করার সময় এখন। সমালোচনা নয় বরং মজবুত ভিত্তির উপর গাথুনী দেয়ার সময় এখন।
উন্নয়ন আর সফলতা ধরে রাখতে হলে দরকার মজবুত রাজনৈতিক গাঁথুনী ও স্থীতিশীলতা। যার অভাবে বহুদেশ ও বহু সম্ভাভনার অপমৃত্যু ঘটেছে। তাই আগামীর অপমৃত্যু থেকে বেঁচে থাকার জন্য দরকার রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। অর্থনৈতিক মুক্তির জন্যও দরকার রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার। যেভাবে আগামীর স্থিতিশীলতা অস্থিতিশীলতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তার রহিতকরণে কাজ করতে হবে এবং ভুমিকা রাখতে হবে সর্বদলীয়ভাবে। একার পক্ষে এই ঢেউ বা ক্ষতির জোয়ারকে ভাটায পরিণত করা দুস্কর। বাংলাদেশে এই কয় বছরে অনেক উন্নয়ন হয়েছে যা দৃশ্যমান তবে এই উন্নয়নকে ধরে রাখতে হলে আগে উন্নয়নকে বিশ্বাস করতে হবে, ধারণ ও লালন করতে হবে, উন্নয়নে নিজেকে শরীক করতে হবে, স্বীকার করতে হতে উন্নয়ন হয়েছে এবং এই উন্নয়নের অংশীদার আমি নিজেও আর এর অগ্রগামীতায় আমিও একজন অতদ্রপ্রহরী। এর বাইরে নয়! তবে মতের অমিল, পথের পার্থক্য এবং চিন্তার ভারসাম্য থাকলেই হবে না তবে উন্নয়ন ও উন্নয়নকামীতায় ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। পৃথিবীর ক্ষমতাবদলের পালাবদলে যেন আমাদের উন্নয়ন বিঘ্নিত না হয়। পৃথিবীর চক্রান্ত যেন আমাদেরকে ঘ্রাস করতে না পারে সেইদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তোমরাই দুনিয়ার লবন এবং আলো এই কথার গুরুত্ব ও তাৎপর্য কাজে পরিণত করতে হবে। হ্যাঁ এই আলো ও লবন যেন সকল ক্ষেত্রে কার্যকরী থাকে সেই বিষয়ে সজাগ থেকে অগ্রসর হতে হবে। যোগাযোগ, রাস্তা-ঘাট, শিক্ষা, প্রযুক্তি, বিদ্যুৎ আর মৌলিক চাহিদার যোগানে উত্তম যোগানদার’র ভুমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার সময় এখন। পৃথিবী তার গতি হারিয়ে এখণ নতুন গতিতে রূপান্তরিত হতে চাচ্ছে। তাই আমাদের ঐ নতুনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে তাই বিভেদ ও বিসংম্বাদ এবং হিংসা ও লোভ আর যেন আগামীর পথে অন্তরায় না হয় সেইদিকে মনোযোগী হয়ে কাজ করতে হবে। শয়তানকে আর সুযোগ দেয়া যাবে না এমনকি গৃহপালিত শয়তানদেরকে সতর্কদৃষ্টিতে রেখে অগ্রসর হতে হবে। তবে সবচেয়ে বেশী ক্ষতি সাধিত হয় বা হয়েছে অথবা হবে এই গৃহপালিত শয়তানদের দ্বারাই।
পারিবারিক উন্নয়ন ঘটার পর সামাজিক উন্নয়ন আর তার পরের ধাপ হলো রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন এবং তৎপরবর্তী পরিবেশ ও প্রতিবেশীর উন্নয়ন। এই উন্নয়ণ ঘুর্ণিবার্তায়ই হচ্ছে এবং হবে আগামী পৃথিবীর উন্নয়ন। এই ক্ষেত্রে তোমরা তোমাদের প্রতিবেশীকে নিজের মত মহব্বত করবে। এই বিশ্বাস এবং চর্চার ফল হবে পৃথিবীর নি:স্বার্থ উন্নয়ন ও সাম্যের জাগরণ। হ্যা আমরা এই পৃথিবীর নি:স্বার্থ উন্নয়নের জন্য কাজ করি এবং এই উন্নয়নকে গতিশীলতা দিয়ে সাত্যের ও সাম্যের ভিত্তিতে উপভোগে উপভোগ্য করে তুলি। এযাবৎ কালে যা প্রকাশ ও প্রচার হয়েছে তা নিজেদের জন্য উন্নয়ন কিন্তু এখন থেকে চর্চায় রাখতে হবে সকলের জন্য উন্নয়ন। সকলের উন্নয়নের অংশীদ্বার হওয়ার জন্য কাজ করতে হবে। তাই সকলে মিলেই সকলের জন্য উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় ঝাপিয়ে পড়ি। সকলের জন্য সকলে আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের তরে এই মূলমন্ত্রের ব্যবহার করি। আর এই জন্য প্রথমে যা প্রয়োজন তা হলো আমাদের বহুধাবিভক্ত দল, মত, পথ ও চিন্তা থেকে বের হয়ে এসে সাম্যের উন্নয়নে ঐক্যবদ্য হওয়া যাতে করে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়ন সফলতা একসঙ্গে অগ্রসর হয়ে আগামীর ফলপ্রসু ও কার্যকরী হিসেবে রূপলাভ করে। এই সময়ে সরকারের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় শরীক হয়ে নিজ নিজ মত ও পথের সঙ্গে নতুন এক পৃথিবীর গতি প্রকৃতিকে আলিঙ্গনে আবদ্ধ করে নিজেদেরকে সমৃদ্ধ করি। তুচ্ছ বিষয় নিয়ে আর মাতামাতি না করি এবং ক্ষমতার লোভে আর নিজেদেরকে পাপের পূর্ণতার হাতে সমর্পন না করি। লোভে পাপ আর পাপে মৃত্যু এই কথাটি কিন্তু সত্যি; কিন্তু আল্লাহর কালাম বলে তোমাদের দিলের কামনায় তোমাদের গুনাহের (দিকে) পথে নিয়ে যায়; আর কামনা পুর্ণ হলে গুনাহের জন্ম হয়; আর গুনাহের পূর্ণতায় মৃত্যুর অধিনে পরাধিনতার শিকলবন্ধি হয়”। জ্ঞান ব্যবহার করে ঐ শিক্ষায় নিজেদেরকে সম্বৃদ্ধ করে এগুবো। হ্যা আমরা আমাদের ঐক্যবদ্ধ উন্নয়ন সফলতা এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে আরো মজবুত করে আগামীর কঠিন সময়ের মুখোমুখি হয়ে উর্ত্তীর্নের অগ্রযাত্রার ধারাবাহিকতা অধ্যাহত রাখি এবং রাখতে বদ্ধপরিকর থাকি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.