স্কুলছাত্র হত্যায় ১৭ কিশোরের সাত বছর ‘কারাদণ্ড’

প্রশান্তি ডেক্স॥ খুলনা পাবলিক কলেজের ছাত্র ফাহমিদ তানভীর রাজিন (১৩) হত্যা মামলায় ১৭ কিশোরের সাত বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তবে যাদের বয়স ১৮ বছরের কম তাদের কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গত সোমবার (২৩ মে) দুপুরে খুলনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আব্দুস ছালাম খান এই রায় ঘোষণা করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফরিদ আহমেদ এ তথ্য জানিয়েছেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২০ জানুয়ারি খুলনা পাবলিক কলেজের ৩১তম পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান ছিল। রাতে কনসার্টের আয়োজন করা হয়। প্রথম দিন গেট বন্ধ থাকলেও পরের দিন সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। ওই দিন রাত ৯টার দিকে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে পাবলিক কলেজের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র রাজিন নিহত হয়। 

একদিন পর তার বাবা শেখ জাহাঙ্গীর আলম ৬ জন আসামির নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১০ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। পুলিশ এজাহারে উল্লেখিত আসামিদের গ্রেফতার করে। তাদের কয়েকজন হত্যাকাণ্ডের বিবরণ জানিয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। মামলার এজাহারভুক্ত এক আসামির স্বীকারোক্তি মোতাবেক রূপসা উপজেলার আইচগাতি থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিসহ আরেকজনকে গ্রেফতার করা হয়।

মামলার অভিযোগপত্র সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন সন্ধ্যা ৬টায় রাজিন পাবলিক কলেজের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়। এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করাকে কেন্দ্র করে মুজগুন্নী এলাকার এক কিশোরের সঙ্গে তার বিরোধ ছিল। পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিন রাতে ওই কিশোর তার বন্ধুদের নিয়ে অনুষ্ঠানে যায় এবং রাজিনকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। 

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খালিশপুর থানার এসআই মিজানুর রহমান একই বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। সবার জামিন বাতিল করে আদালত ১৭ মে তাদের জেলহাজতে পাঠানো হয়। এ মামলায় ২৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।

রাজিনের মা রেহানা আক্তার বলেন, ‌‘বয়রা এলাকায় ডেঞ্জার বয়েজ, গোল্ডেন বয়েজ ও চিপসী বয়েজ নামে কয়েকটি কিশোর গ্যাং রয়েছে। একেকটা গ্যাংয়ে ২৫ জন করে সদস্য। এসব গ্রুপের সদস্যদের হাতে আমার ছেলে খুন হয়েছে। আমার মতো আর কোনও মায়ের কোল যেন খালি না হয়।’

মামলা পরিচালনা করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফরিদ আহমেদ, কাজী সাব্বির আহমেদ ও  সুলতানা রহমান শিল্পী। আসামি পক্ষে ছিলেন রজব আলী সরদার, আক্তার জাহান রুকু ও গৌতম ঘোষ।

Leave a Reply

Your email address will not be published.