বাজেট

বাজেট শব্দটির সঙ্গে সকলেরই পরিচয় আছে বলে মনে হয় কিন্তু বাজেট এর অন্তনীহিত তাৎপর্য বুঝার ক্ষমতা সকলের নেই। তারপরও কিন্তু বাজেট নিয়ে মানুষের কৌতুহলের অভাব বা কমতি নেই। যে পারে সেও বলে আবার যে না পারে সেও বলে এই বিষয়টি নিয়ে। তবে যখন যারাই বাজেট পেশ করেছেন তাদের সকলের বিরুদ্ধেই বড় বড় বা লম্বা লম্বা কথা শুনা গেছে। অনেকে বিশেষজ্ঞ সেজে এই বাজেট নিয়ে বিভিন্ন রকম মন্তব্য করেছেন এবং করে যাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ বাজেট নিয়ে বিভিন্নরকম পরামর্শ এবং ভুলত্রুটি দেখিয়ে দিচ্ছেন। তবে অনেক কম মানুষই পেয়েছি বা দেখেছি যে, বাজেটকে মনে প্রাণে গ্রহণ করেছে এমনকি বাজেট নিয়ে উচ্ছসিত হয়েছে। তবে বাজেটের ক্ষেত্রে নেতিবাচকতাই বেশী পরিলক্ষিত হচ্ছে। কিন্তু আসল কথা কি জানেন, যে যত ভাল কাজ করবে বা অতি উত্তম ও মঙ্গলজনক পরিকল্পনা প্রণয়ণ করবে ততই বিষোধাগার হয়েছে এবং হবে। তবে আশার কথা হলো যে যাই বলুক না কেন সাধারণ মানুষ এই বাজেট প্রসঙ্গ নিয়ে চিন্তিত নই বরং তারা তাদের স্বাভাবিক জীবনে উৎফুল্ল। সাধারণ মানুষের প্রয়োজন কি জানেন; তা হলো নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের যোগান এবং সাধ্য ও সামর্থের মধ্যে পাওয়ার আকাঙ্খা। এই গুলো পূর্ণ হলেই আম জনতার যথেষ্ট অথবা সন্তুষ্টি শতভাগ।
যারা আজ বাজেট নিয়ে গলা ফাটাচ্ছেন তাদেরকে বলছি নেতিবাচকতা পরিহারের চর্চায় ইতিবাচকতাকে নিয়ে আসুন। সবাই চায় মঙ্গল, সবাই চাই উন্নতি, সবাই চায় সুনাম ও সুখ্যাতি, সবাই চাই জনগণের সেবা করতে। সেই সবাই এর তালিকায় কিন্তু আপনিও। তাই কারো সফলতায় বা প্রচেষ্টায় বাধা না হয়ে বরং সহযোদ্ধা বা সহযোগী অথবা পরামর্শকারী এমনকি সমস্যা সমাধানকারী হিসেবে কাজ করুন। আমরা… জনতা সবই দেখি এবং বুঝি ও স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করি। আমাদের চোখে আর ধোলা দিতে চেষ্টা করবেন না। কারণ আজকে যারা বাজেট উপস্থাপন করেছেন সেই জায়গায় আপনিও ছিলেন এবং ভাবুনতো আপনি থাকতে কি করতেন? আর বর্তমানের তারা কি করেছে তা দেখে গভেষনা এবং উভয়ের বাজেটের তুলনা করে ফল বের করুন এবং সেই আলোকে আগামীর কল্যাণ ঠিক করুন। বাজেট পেশের আগেই সমালোচনা এবং উপস্থাপনের সাথে সাথে হিসেবে নিকেশ না করে মুখ্যের মত কথা বলা বা মতামত প্রকাশ করা সঠিক নয় বরং এর মাধ্যমে নিজের ওজন কমিয়ে ফেলা ছাড়া আর কিই বা হয়? গায়ে মানে না আপনি মোড়ল সেজে অল অফ জ্যাক বাট অফ নান সাজার কি দরকার। যাক সেই কথা আসল কথা হলো যে, এই পর্যন্ত যত বাজেট হয়েছে; সবই দেশের কল্যাণ ও জনগণের প্রয়োজনে হয়েছে তবে এই সকলের মধ্যে কিছু হের-ফেরতো থাকবেই। কারণ আমরা মানুষ; যতই ভালর চিন্তা করি না কেন এর মধ্যেও খারাপ বের হয়ে আসে। যদি না আসত তাহলেতো আমরাই স্বয়ং সৃষ্টিকর্তায় পরিণত হতাম। একমাত্র নিখুঁত ও নির্ভূল কাজ বা সৃষ্টি তিনিই করতে পারেন এবং করেছেন ও করে যাচ্ছেন। তাই সৃষ্টিকর্তার সমতুল্য হতে যেয়ো না। বরং দিনে দিনে তাঁরই মত হয়ে বেহেস্তি জীবনের স্বাদ আস্বাদনের প্রস্তুতি নিন।
বাজেট কিন্তু ব্যক্তি জিবনে হয়, পরিবারে হয়, সমাজে হয়, প্রতিষ্ঠানে হয়, ব্যবসা ক্ষেত্রে হয়, রাষ্ট্রীয়ভাবে হয় এবং আন্তর্জাতিকভাবেও হয়। তাই এই বাজেট বুঝে না এমন সৃষ্টি খুবই নগন্য। তাই বাজেট উত্তেজনা বা বাজেট নামক নাটক আর মঞ্চস্থ্য করতে যাবেন না; জাতি এ পর্যন্ত অনেক দেখেছে এবং ঐ বাজেট এর সুফল ভোগ করছে ও করবে কিন্তু বাজেট নাটকের সুফল ভোগ করেনাই তবে কুফল কিছুটা ভোগ করেছে আর এর জন্য এখন এইধরণের নাটক মঞ্চস্থ্য করার প্রয়োজন নেই এমনকি এর সুযোগকে রহিত করে দিয়েছে। সরকার যে বাজেট করেছে তার বাস্তবায়ন হউক এবং এই বাস্তবায়নকল্পে আমাদের যে ভুমিকা তার সবটুকুই উজার করে দিতে জাতি প্রস্তুত। তবে জাতির এই ত্যাগ এবং স্বমহিমার দ্বারা উন্নয়ন ও মান-মর্যাদা বৃদ্ধির ক্রমোন্নতি দৃশ্যমান হচ্ছে। আল্লাহ তায়ালাও এই বাজেটকে আর্শিবাদে পরিপূর্ণ করেন; কারন তিনি চান তাঁর বান্দারা সুখে, শান্তিতে, নিশ্চিন্তে, সাম্যের ভিত্তিতে ক্ষমা ও ভালবাসার বন্দনে আবদ্ধ থাকার লক্ষ্যে সূদুরপ্রসারী চিন্তা ও কর্মের সমন্বয় ঘটিয়ে সামনে এগিয়ে যাক। ব্যক্তি স্বাথ্য নয়, দলীয় স্বার্থ্য নয় বরং সামগ্রীক কল্যাণে নিয়োজিত হয়ে সেবার পরিধির ব্যপ্তি বৃদ্ধি করুন। ন্যায় পরায়নতায় সৃষ্টিকর্তার অভিপ্রায়কে জাগ্রত রাখুন। বাজেট প্রাসঙ্গিকতায় বলার কিছু নেই বরং শুভকামনা ও সুরক্ষার মোনাজাত অবিরত।
আমার ক্ষুদ্র আকুতি এই যে, বাজেট নিয়ে নেতিবাচকতা মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকার, নিত্যব্যবহার্য্য এবং মৌলিক চাহিদার যোগানে আরেকটু যত্নশীল হউন। চাল, ডাল, তেল, লবন, পিয়াজ, রকুন, মসলা, কাপড়-চোপর, শিক্ষায়, শিক্ষা উপকরণে এবং যাতায়তে, বিদ্যুৎ এবং গ্যাসে জনগণের সামথ্যের মধ্যে জীবন ধারণের ব্যবস্থা দৃশমানতা বিরাজমান রাখুন। মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তের কথা মাথায় রেখে সমাজ বিনির্মানে মনোনিবেশ করুন। তেলের মাথায় তেল দেয়া বন্ধ করুন; ধনীকে আরো ধনী বানানোর প্রক্রিয়ায় ছেদ টানুন। ধনী এবং গরীবের ব্যবধানে এমনকি মধ্য ও নিম্নমধ্যবিত্তের মাঝে দুরত্বে লাঘাম টানুন। সাম্যের ভিত্তিতে একটি সমতা আনয়ন করতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখুন। জনগণ আপনাদের উপর আস্থা ও বিশ্বাস নিয়ে অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছে এমনকি যার যার অবস্থান থেকে সহযোগীতা অব্যাহত রেখেছে তাই অতি সাধারণদের দিকে দৃষ্টিনিবদ্ধ করুন। বাজেটের আকার ও আয়তন বৃদ্ধি পাচ্ছে ঠিক তেমনিরূপে সমস্ত কিছু উদ্ধগতিতে পরিলক্ষিত হচ্ছে কিন্তু মানুষের আয়ের ব্যাপ্তির পর্যাপ্ততা নেই, শ্রমীক ও কর্মীদের এমনকি সাধারণ চাকুরেদের বেতন বৃদ্ধি হচ্ছে না। তবে যাদের কর্ম আছে তারা যদিও উদ্ধগতির লাগাম ধরতে বা টানতে পারছে না তবে চেষ্টা করে যাচ্ছে কিন্তু যাদের একেবারেই কাজ নেই তাদের কি অবস্থা তা খতিয়ে দেখুন বা পরখ করুন। বাজারের লাগাম বা সঙ্গতি আনয়ন করুন। বাজেট নিয়ে মাথাব্যাথা নেই বরং বাজেট বাস্তবায়নে সহায়তা করার মানুষিকতা অব্যাহত রাখার রাস্তা সুপ্রস্থ করুন।
শেখ হাসিনার উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সুনাম এবং সুখ্যাতি বৃদ্ধিতে কাজ করুন। তাহলেই দেশের ও দশের উপকার হবে। নিজ নিজ স্বাথ্য এবং সুবিধা পরিহারে কাজ করুন। তাহলে দেশ উপকৃত হবে। দেশ উপকৃত হলে মা, মাটি ও এর সোদাগন্ধ উর্বর হবে আর মানুষ ঐ উর্বরতায় হেসে খেলে ভেসে বেড়াবে। তাই সময় এখন আর সুযোগও এখনই কাজে লাগাতে হবে। তবে যারা এর বিরোধীতা করছে বা প্রতিবন্ধকতা তৈরী করছে তাদের মুখের লাগাম টানুন। কথায় আছে সময় থাকতে মনা হুশিয়ার। তাই সময় নষ্ট করা চলবে না বরং সময়কে কাজে লাগাতে সরকার, দল ও জনগণ একযোগ্য কাজ করতে হবে এবং শতভাগ সফলতার মূলমন্ত্র এই একটাই। দশে মিলে করি কাজ হারি যেতে নাহি লাজ। দশের লাঠি একার বোঝা। তাই আর একার বোঝাতে পরিণত হইবেন না। দশের লাঠিতে দৃষ্টি নিবন্ধ রাখুন।
বাজেট উপস্থাপন হয়েছে কিন্তু একটি বিষয় এই বাজেট এখনও প্রকাশ করতে পারেনি আর তা হলে মুখের লাগাম বা অতিরিক্ত এমনকি অপ্রয়োজীয় কথা বলায়। আমার অনুরোধ ঐ মুখের লাগাম টানার জন্য বাজেটে নতুন করে কর আরোপ করা হউক। করের ক্ষেত্রে টেক্স ও ভ্যাট উভয়ই আরোপ করে জানিকে সুনিশ্চিত গন্তব্যে পৌঁছাতে সহায়তা করা হউক। যারা বেশী কথা বলবে, যারা প্ররোচনা দিবে, যারা উত্তক্ত করবে, যারা মিথ্যায় মিথ্যায় সত্যের প্রলাপ বাতলাবে; সেই মিথ্যায়, যারা কথা দিয়ে সময় নষ্ট করবে, যারা খাবার দাবারে বিঘ্ন সৃষ্টি করবে এমনকি মানুষের স্বাভাবিক জীবন চলার গতিপথ রুদ্ধ করবে, প্রশ্নবিদ্ধ করবে, হরতাল, অবরোধ ও জটলায়, মারামারি, গালা-গালিতে ভ্যাট ও ট্যাক্স আরোপ এখন জরুরী হয়ে পড়েছে। যদি সম্ভব হয় তাহলে এইবারই এই কাজটুকু করে জাতির শান্তি, স্থিতিশীলতা, নিশ্চয়তা, নিরাপত্তা এবং উন্নয়ন অগ্রগামীতায় আরো একধান এগিয়ে যাওয়ার পথ সুগম করুন। এই অসমাপ্ত কাজটুকু করতে পারলে তথ্যপ্রযুক্ত আইনের চেয়েও বেশী ফলপ্রসু হওয়া যাবে। তবে বাজেটকে স্বাগত জানাচ্ছি এবং বাজেট বাস্তবায়নে যুগান্তকারী ভুমিকা রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করছি। জয় হউক এই বাজেটের। দৃষ্টান্ত হউক এই বাজেট এবং গর্বিত জাতি হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত হউক আমাদের অহৎকার গর্বের জায়গাগুলো। এইদিনেরে নিয়ে যাক সেই দিনেরই কাছে। আজ গর্বভরে বলতে চাই এই বাজেটই নিয়ে যাক আগামী বাজেটের কাছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.