কসবার কালামুইরা গ্রামে দেয়াল প্রাচীর করে এক পরিবারকে অবরুদ্ধ করে জিম্মী করেছে ভূমিদস্যু শাহীন

ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি   কসবার কুটি ইউনিয়নের কুমিল্লাসিলেট মহাসড়কের পাশে কালামুইরা গ্রামে একটি পরিবারের তিনদিকে বাউন্ডারী দেয়াল দিয়ে অবরুদ্ধ করেছে শাহীন নামক এক ভূমিদস্যু। ব্যাপারে কসবা থানা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট পৃথক পৃথক অভিযোগ দিয়েছেন অবরুদ্ধ পরিবারের কর্তা মোঃ শাজাহান। কিন্তু এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোনো প্রতিকার পায়নি পরিবার।

            উপজেলা নির্বাহী অফিসার কসবা থানা অফিসার্স ইনচার্জের নিকট মোঃ শাজাহানের দয়েরকৃত অভিযোগ থেকে জানা যায় বিগত ১৬ বছর যাবত শাজাহান মিয়া ১৬ শতক জায়গা কিনে বাড়িঘর করে সেখানে ছেলেমেয়ে নিয়ে বসবাস করছেন। শাজাহানের পাশ্ববর্তি বাড়ির সামাদ মিয়ার পুত্র শাহীন মিয়া শাজাহানের বাড়ির তিনপাশের নীচু জমি ক্রয় করে ভরাট করে ফেলে। শাহীন সড়ক জনপথের জায়গাও দখল করে ভরাট করে ফেলে। পরে প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে সীমানা দেয়াল করে শাজাহানের  পথ বন্ধ করে দেয়। স্থানীয় সর্দার মাতবরদের জানিয়ে কোনো প্রতিকার না পেয়ে শাজাহান মিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। কসবা থানার সাব ইন্সপেকটর আনিসুজ্জামান অভিযোগ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন শাহীন শাজাহান মিয়ার বাড়ির তিন দিক দিয়ে দেয়াল নির্মান করছেন। অন্য একদিকে রয়েছে একটি পুকুর, দারোগা কাজ বন্ধ রাখতে বললেও ভাড়াটিয়া লোক দিয়ে তড়িঘরি করে বাড়ির তিনদিকে দেয়াল নির্মাণ করে অবরুদ্ধ করে ফেলে।

ফলে নিরুপায় হয়ে শাজাহান কসবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ উল আলমের নিকট অভিযোগ পেশ করেন। তিনি স্থানীয় কুটি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোাঃ  ছাইদুর রহমান স্বপনের নিকট গ্রাম্য আদালতের মাধ্যমে বিষয়টি  নিষ্পতি করার নির্দেশ দেন।

এদিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শাজাহান মিয়ার বাড়ির লোকজন অবরুদ্ধ হয়ে আছেন। শাজাহান মিয়ার তিন ছেলে চার মেয়ে। বাড়ি উঠুনে ধান মাড়াইয়ের মেশিন রয়েছে। গ্রামের মাঠে এই ধান মাড়াই দিয়ে ধান মারায় পুত্র সজিব (২৬) কিন্তু রাস্তাবন্ধ করে ফেলায় মেশিনটি বের করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে রুজিও বন্ধ হয়ে গেছে। শাজাহানের মেয়ে নাতিনাতনীরা স্কুলে যেতে পারছে না। তাঁর মেয়ে মুন্নী (১৫) এসএসসি পরীক্ষার্থীনী। ১৫ জুন তাঁর এসএসসি পরীক্ষা। ভেবে পাচ্ছে না কিভাবে পরীক্ষা দিতে যাবে। মুন্নি জানায় শাহীন রাস্তাঘাটে দেখলে নানা ধরণের অশালীন কথা বলে উত্যক্ত করে।

কসবা থানা অফিসার ইনর্চাজ মুহাম্মদ আলগীর ভূইয়া কালামুইরার ওই জায়গা দেখে এসেছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, শাহীন যা করেছে তা ন্যাককারজনক। তাকে শাজাহানের পরিবাররের লোকজন চলাচলের জন্য রাস্তা দেয়ার কথা বলা হয়েছে। রাস্তা না দিলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয়  আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা  হবে

প্রসংগে শাহীনের সংগে যোগাযোগ করলে সে জানায় স্থানীয় সর্দাররা চেয়ারম্যান অফিসে গত একবছর পূর্বে রায় করেছিল বাড়িটি আমার কাছে বিক্রী করতে। কিন্তু সেই রায় শাজাহান মানেনি।

শাজাহান বলেন, এমন অবিচার আমি কিভাবে মানবো? আমার সারাজীবনের উপর্জিত অর্থ দিয়ে বাড়িঘর নির্মাণ করে বসবাস করছি। শাহীন চায় আমার বাড়িটি তাকে দিয়ে আমি শূন্যে ভাসি। সে পরসম্পদলোভী। সে / বছর পূর্বে মাটি কাটা লেবার ছিল। এখন সে কোটি কোটি টাকার মালিক।

          বিষয়ে কুটি ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ ছাইদুর রহমান স্বপনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, উপজেলা নিবার্হী অফিসার স্বাক্ষরিত নির্দেশনা পেয়েছি। আমি বর্তমানে অসুস্থ। সুস্থ হয়ে বিষয়টি দেখবো।

     গতকাল মঙ্গলবার (১৪ জুন) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ উল আলম সাংবাদিকদের জানান,কালামুড়িয়া গ্রামের গৃহবন্দী শাজাহান মিয়ার অভিযোগটি গ্রাম আদালতের মাধ্যমে  নিষ্পত্তি করে দেয়ার জন্য কুটি ইউপি চেয়ারম্যানকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিষ্পত্তি না হলে ব্যাপারে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.