কসবায় কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া প্রতারকচক্রকে গ্রেফতার ও গ্রাহকের টাকা ফেরত পাওয়ার দাবীতে মানববদ্ধন

ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ গতকাল রবিবার (৩ জুলাই) সকালে কসবা উপজেলা পরিষদ চত্বরে প্রায় কোটি টাকা সঞ্চয়ের নামে অভিনব কৌশলে হাতিয়ে নিয়ে রাতারাতি উধাও হয়ে যাওয়ায় পল্লী ফাউন্ডেশন নামে এনজিও কর্মকর্তাদের গ্রেফতার ও গ্রাহকের টাকা ফেরত পাওয়ার দাবীতে মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগী পৌর শহরের কিছু গ্রাহক । তারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আইন মন্ত্রী আনিসুল হক এমপির হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগিদের পক্ষ থেকে উপজেলা নিবার্হী অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।


খোজ নিয়ে জানা যায় ,পল্লী ফাউন্ডেশন নামের একটি এনজিও ঋণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য গত ১৩ জুন কসবা পৌর সদরের ইমামপাড়ায় জেসমিন আক্তারের বাড়িতে অফিস ভাড়া নেয়। অফিসটি ভাড়া নিয়ে পল্লী ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প প্রকল্পের নামে ঋণ প্রদানের জন্য কেন্দ্র খোলেন। পল্লী ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা গ্রাহকদের প্রতি লাখ টাকা ঋণ দেওয়ার জন্য সঞ্চয়ের নামে ১০ হাজার টাকা করে নেয়। গ্রাহকদের ওরা পাশ বইও দেয়। গত ২৬ জুন থেকে তাদের ঋণ দেওয়ার কথা ছিল। ঋণ নিতে এসে গ্রাহকরা দেখতে পায় অফিসটি তালাবদ্ধ রয়েছে। এসময় গ্রাহকরা বুঝতে পারে তারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এ বিষয়ে দৈনিক সমকালসহ জাতীয় আঞ্চলিক পত্রিকায় ও টেলিভিশনে সংবাদ প্রকাশ হলেও ভুক্তভোগীরা কোনো প্রতিকার পায়নি।
প্রতারণার শিকার উপজেলার মজলিশপুর গ্রামের সিএনজি চালক আবদুল কাদের (৬০) জানান, তার বাড়িতে ঋণ দেওয়ার নামে কেন্দ্র করে পল্লী ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা। ওই গ্রামের ১১ জন গ্রাহকের নিকট থেকে ঋণ দেওয়ার নামে লক্ষাধীক টাকা সঞ্চয় নেয়।
উপজেলার চারুয়া গ্রামের বিল্লাল হোসেন, মজলিশপুর গ্রামের নয়ন মনি, কোনাঘাটা গ্রামের আবুল কালাম ,শাহ আলম ও রোকসানা জানান পল্লী ফাউন্ডেশনের লোকজন তাদেরকে প্রতি লাখে ১০ হাজার টাকা করে সঞ্চয় নিয়ে ঋণ প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রায় পাঁচ শতাধিক নারী পুরুষ থেকে সঞ্চয় গ্রহন করে। ভুক্তভোগীরা পল্লী ফাউন্ডেশনের প্রতারকদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দাবি জানান এবং তাদের টাকা ফেরত চান।তারা এ ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রী মহোদয়োর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন ।
বাড়ির মালিক জেসমিন আক্তার জানান; গত ১৩ জুন আমার বাড়িতে এসে তিনটি কক্ষ ভাড়া নেয় পল্লী ফাউন্ডেশন। ৫ জন পুরুষ ও ৩জন নারী পল্লী ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে মাসিক ৫ হাজার টাকা ভাড়ায় তার নীচ তলার পূর্ব পাশের ৩ কক্ষ বিশিষ্ট ইউনিটটি ভাড়া নেন।
গতকাল রবিবার (৩ জুলাই) পৌরশহরের কালিকা পুর,দক্ষিণ কসবা,খারপাড়ার নাছিমা বেগম,চাহনী বেগম,রুজিনা বেগম,র্স্বণা বেগম,মনি বেগম,আমেনা বেগমসহ বেশ কিছু দরিদ্র গ্রাহক কসবা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনের সামনে মানববন্ধন করেন। তারা প্রতারকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্তা গ্রহন ও তাদের টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রী মহোদয়োর হস্তক্ষেপ কামনা করেন ।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ উল আলম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,ভুক্তভোগীরা অসাবধানতার কারনে প্রতারনার শিকার হয়েছে। তারা আমার কাছে এসেছিল বিষয়টি সর্বোচ্চ দৃষ্টি দিয়ে প্রতারকচক্রের বিরোদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ।

Leave a Reply

Your email address will not be published.