কূটনীতিকদের সঙ্গে আলোচনা নিয়ে সতর্ক বিএনপি

প্রশান্তি ডেক্স॥ পর পর দুদিন জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পর নীরব বিএনপি। দলটির ফরেইন উইংয়ের পক্ষ থেকে বৈঠকগুলোকে ‘প্রাসঙ্গিক ও দ্বিপাক্ষিক’ হিসেবে অভিহিত করা হলেও এর বেশি কোনও প্রসঙ্গ উত্থাপনে নারাজ দলটির নেতারা। এমনকি ব্যক্তিগত আলাপেও বিএনপির নীতিনির্ধারকরা কোনও ধরনের মন্তব্য করতে রাজি হননি।

গত ১২ জুলাই জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক জিন লুইস ও ১৩ জুলাই ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াটলি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির ফরেন উইং ও দলটির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের দায়িত্বশীলরা বলছেন, বৈঠকের গুরুত্ব অনুযায়ী উভয়পক্ষ নীরব অবস্থানে। প্রথমত, জাতিসংঘ ও ইইউ কর্মকর্তাদের প্রথম দিককার বৈঠক ছিল। বিশেষত, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন ইস্যুটি প্রাধান্য পেলেও বিএনপি বা সাক্ষাৎকারী কোনও পক্ষই এ বিষয়ে কথা বলতে ইচ্ছুক নয়।

দায়িত্বশীলরা বলছেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে কূটনীতিকদের তৎপরতার ওপর বিএনপি গভীর পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রেখেছে। আর আলোচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে বিএনপি নেতারা এবার একটু বেশিই সতর্ক বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির এক নেতা। তার ভাষ্য, বৈঠকগুলো রুটিন। তবে বিষয়বস্তু সম্পর্কে কেবল অংশগ্রহণকারীরাই ওয়াকিবহাল। দলীয় ফোরামেও কোনও আলোচনা হয়নি।

বিএনপি চেয়ারপারসন কার্যালয়ের একাধিক প্রভাবশালী সূত্র বলছে, বিএনপি প্রধানত দুটি দাবিই বিদেশিদের সামনে তুলে ধরছে। প্রথমত, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজন ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করা।

দলের ফরেইন উইংয়ের গুরুত্বপূর্ণ একজন সদস্য শুক্রবার বিকালে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, জাতিসংঘ ও ইইউ প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকটি প্রথমত রুটিন কল। দ্বিতীয়ত, আমাদের দেশে যাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক আদান-প্রদান রয়েছে, তারা এখানে সুশাসন, গণতন্ত্র, মানবাধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত দেখতে চায়, এটা স্বাভাবিক। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘প্রাসঙ্গিক ও দ্বিপাক্ষিক’ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, এতেই স্পষ্ট নির্বাচনের প্রসঙ্গও রয়েছে এসব বৈঠকে।

দলের পক্ষ থেকে নীরবতা কেন, এমন প্রসঙ্গে স্থায়ী কমিটির একজন প্রভাবশালী সদস্য বলেন, মহাসচিব বা আমির খসরু কারও তরফেই বৈঠকের আলোচ্য বিষয় নিয়ে কিছু বলা হয়নি। দ্বিতীয়ত, যেকোনও বক্তব্য দিলেই কূটনীতিকরা স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করেন না। সে কারণে দলীয়ভাবে কেউ কথা বলবে না।

চেয়ারপারসন কার্যালয়ের একজন জানান, স্যাবোটাজ হওয়ার শঙ্কা থেকে কোনও বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে না বিএনপির পক্ষ থেকে।

জানতে চাইলে স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার বলেন, এসব সম্পর্কে আমি আসলেই কিছু জানি না। আমি আন্দাজে কিছু বলতে চাই না।

Leave a Reply

Your email address will not be published.