যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা ও ডিপলোমেটিক ছলছাতুরীর প্রাসঙ্গীকতা

যুদ্ধ যুদ্ধ খেলায় মাতোয়ারা এখন বিশ্ব। তবে এর সঙ্গে যুক্ত কূটনৈতিক বা ডিপলোমেটিক ছলছাতুরী। যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা শুধু অস্ত্রের নয় বরং কথার, কুটকৌশলের, অন্যের ক্ষতি করার, অন্যের সম্পদ ভোগ দখলের বা নিজের করায়ত্ব করার, ক্ষমতার, পদের, অর্থের, মোট কথা বাদশাহ সোলাইমানের না পাওয়ার তৃপ্তির পেছনে ছোটার, বলা যায় বাতাসের পিছনে দৌঁড়ানো ছাড়া আর কিছুই নয়। এত সমৃদ্ধি, এত জৌলুস এবং এত আভিজাত্যের পরও আমরা কেন মিছে মায়ার দিকে ছুটছি তার কি কোন ব্যাখ্যা বা যৌক্তিক কারণ বলতে পারেন? আমরা জানি ইতিহাসের মাধ্যমে অথবা সৃষ্টিকর্তার পাক কালামের মাধ্যমে যে, বাদশাহ সোলাইমান (আ:) যা চেয়েছিলেন তারচেয়েও বেশী পেয়েছিলেন। আর পৃথিবীতে তাঁর পরে কোন বাদশাহর বা প্রশাসকের অথবা কোন কোন ব্যক্তির তাঁর মত আর পাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। তারপরও কেন এই মিছে চেষ্টা? তবে ইতিহাস এবং প্রকৃতি কি আমাদেরকে এই বিষয়ে কোন শিক্ষা দেয়নি? অথবা আমাদের পূর্বশুরীরা কি এই বিষয়ের দৃষ্টান্ত হতে পারেনি? আমরা কি এখনও অতিত, বর্তমান এবং ভবিষ্যতের সংমিশ্রনে কোন চিন্তার সমন্বয় ঘটায়নি?
পৃথিবীতে যত রাজা বাদশাহ এবং মন্ত্রী-মিনিষ্টার এমনকি ক্ষমতাধর ব্যক্তিদ্বয়ের আভির্ভাব ঘটেছে তাদের জিবনের দিকে কি আমরা তাকাইনি; আর যদি তাকাই তাহলে কি দেখি; তাদের জীবনের উত্থান, পতন এবং শেষ পরিনতির দিকে আবারো আরএকটু সময় নিয়ে তাকাই। এই সময়ে এসে এটা খুবই প্রয়োজন। শান্তির বদলে অশান্তি সৃষ্টিকারী কারা এবং কেন ও কি কি মাধ্যম বা শব্দ ব্যবহার করে ঐ নৈরাজ্য চালিয়ে যাচ্ছে তার স্বরূপ উন্মোচন করা দরকার। পৃথিবীর সকল শান্তিকামী মানুষ, সহজ সরল মানুষ এবং সৃষ্টিকর্তার অভিপ্রায়ের সঙ্গে যুক্ত মানুষ এইসকল জানেন কিন্তু তারা ঐ লোভে এবং ক্ষমতার মোহে অন্ধ মানুষদের জন্য প্রতিনিয়ত মোনাজাত করে এমনকি ক্ষমা করে অধির আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছে যাতে তারা স্বজ্ঞানে এবং স্বেচ্চায় ফিরে আসে। মানুষ মানুষের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই, সৃষ্টির সেরা জীবের মধ্যে কোন বৈষম্য নেই, তবে মানব সৃষ্টি বৈষ্যম্যে এখন দিশেহারা এই সৃষ্টির সেরা জীবন। সৃষ্টির উদ্দেশ্যকে বিনষ্টকরণের যাবতীয় কার্য সম্পন্ন করে যাচ্ছে বর্তমানে সেরাদের সেরারা। কি চমৎকার! বাহাবা পাওয়ার কিন্তু আদতে ঘৃণা এবং ধিক্কার পাওয়ার যোগ্য এই যুগের সেরাদের সেরারা।
সমগ্র পৃথিবী এখন সেরাদের সেরা কর্মকান্ডে মাতম এবং মাতলামীপূর্ণ। শান্তি, আশা, আকাঙ্খা, নিশ্চয়তা এবং নিরাপত্তা এই শব্দগুলি বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে। মুখে, পুস্তকে, ইতিহাসে এমনকি ধর্মীয় আবরণে জীবিত থাকলেও কার্যত সম্পূর্ণ মৃত অবস্থায় পর্যবসীত হয়েছে আমাদেরই জ্ঞান, বুদ্ধির নেতিবাচক ব্যবহারে। নারী, অর্থ, সম্পদ, ক্ষমতা, পদ, শাসনের অধিনে আনা কি আগেও ছিল না, এমনকি আগের প্রজন্মের সেরাদের সেরারা কি ঐসকল ভোগ দখল করেনি। হ্যাঁ করেছে কিন্তু এর শেষ পরিণতির দিকে একটু তাকাই এবং নিজেদেরকে নিয়ন্ত্রণ করে আগামীর ভাবনা চিন্তা স্থির করি। জীবন কয় দিনের আর জিন্দেগীর বাগারম্ভরও কয়দিনের এই বিষয়টি কি একটু ভেবে দেখবেন? জীবনের প্রয়োজন কি, জিন্দেগীর প্রয়োজন কি অথবা জীবন সায়ান্নে এসে আপনার আমার কি প্রয়োজন তা একটু ভাবুন। ভাবার যথেষ্ট সময় এখন কিন্তু খেলায় সময় নষ্ট করবেন না। মিথ্যার জয়জয়াকারে নিজেদেরকে আর জড়াবেন না বরং মিথ্যার খোলস থেকে বের হয়ে এসে সত্যের আবরণে নিজেকে জড়ান। এখনও সময় আছে নিজের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করার বা ভুল স্বীকার করে সঠিক অবস্থান ও সঠিক জায়গায় এবং সঠিক পরিকল্পনায় সামনে অগ্রসর হওয়ার।
পৃথীবির শান্তি বিনষ্টকারী কে?- আপনি আমি না শয়তান। যদি আপনি আমি না হয় তাহলে নিশ্চিত শয়তান। শয়তানের শয়তানীর সঙ্গে যুক্ত কে বা কারা হয়েছে বা শয়তান কাকে কাকে প্রভোলিত করেছে এবং কিভাবে করেছে, প্রলোভিত করার মাধ্যমগুলো কি কি খুজে বের করুন। শয়তানের সঙ্গে সৃষ্টিকর্তার কি ব্যবস্থা চুড়ান্ত হয়েছে তার খোঁজ করুন। আর শয়তানের কি প্রতিশ্রুতি বা চ্যালেঞ্জ সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে এই আদম সন্তানদেরকে নিয়ে তাও খুজে দেখুন। তারপর নিজেদেরকে নিজেদের স্ব স্ব আঙ্গিনায় পূর্ণবাসন করুন। এই শয়তানের সঙ্গি না হয়ে বরং শয়তানকে বিতারণের জন্য সৃষ্টিকর্তার যাবতীয় সাজে নিজেদেরকে সাজিয়ে তুলুন যাতে পৃথিবী থেকে শয়তান এবং শয়তানের শয়তানি বিতারিত হয়। যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা, ডিপলোমেটিক ছলছাতুরী এমনকি সকল অশান্তির উপাদান পৃথিবীর মাঝখানে আর না থাকে সেই কাজে নিজেকে নিয়োজিত করুন। সৃষ্টিকর্তার প্রতিনিধিত্ব করুন, সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে যুক্ত হউন এবং থাকুন। সৃষ্টিকর্তার কাজ নিজের জীবন-কর্ম, চিন্তায়, বাস্তবতার নিরিখে বাস্তবায়ন করুন। শয়তানের সঙ্গে যুক্ত হওয়াদের মুক্তকরণে ভুমিকা রাখুন। তাদের ভুল বুঝতে সহায়তা করুন। স্ব স্ব ধর্মের প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা এবং নির্ভরতা বাড়িয়ে তুলুন। ধর্মের স্বারকথা সারমর্ম বা স্বারবানী অনুযায়ী নিজ নিজ জীবন পরিচালনা করুন। সৃষ্টিকর্তা আপনাকে আমাকে পথ দেখাবেন এবং সেই অনুযায়ী আপনার আমার ভবিষ্যতের আশা পূর্ণ করবেন। তবে পৃথিবীর মত বা শয়তানের মত নয় বরং শান্তি, স্থিতিশীলতা, নিশ্চয়তা, নিরাপত্তা, আশা, আকাঙ্খার ইতিবাচক সকল পরিপূর্ণতা দিয়ে। মোট কথা- যা সত্য, যা উপযুক্ত, যা সৎ, যা খাঁটি, যা সুন্দর, যা সম্মান পাবার যোগ্য, মোট কথা যা ভাল এবং প্রশংসার যোগ্য সেই দিকে তোমরা মন দাও। এই নীতি ও বিশ্বাসের মূলমন্ত্রে উজ্জ্বীবিত হয়ে আমাদের আগামীর সকল কর্মকান্ড পরিচালিত করি এবং পৃথিবীকে সৃষ্টিকর্তার অভিপ্রায়ে সাজাই।
সার্বজনীন প্রাসঙ্গীকতার সহিত আমাদের বাংলাদেশের অতিত, বর্তমান এবং ভবিষ্যতের সমন্বয়ে অগ্রসর হওয়ার সময় অতিক্রান্ত হচ্ছে। ইতিহাস এবং বাস্তবতার সাথে আমাদের চিন্তা ও কাজের সমন্বয় ঘটিয়ে আগামীর স্বপ্নের সোনার বাংলা এবং সমৃদ্ধির উদীয়মান বাস্তব দৃশ্যায়মান বাংলাদেশ দেখতে ও দেখাতে নিজেদেরকে নিয়োজিত রাখি। সরকার, রাজনৈতিক দল, সাধারণ মানুষ আর সেবকের দল (বিভিন্ন সংস্থায় নিয়োজিত: সরকারী-বেসরকারী) একসঙ্গে কাজ করতে হবে। মতের অমিল, পথের অমিল, চিন্তার ফারাক, এমনকি পছন্দ ও অপছন্দের যোজন বিয়োজন দূরে রেখে সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টির মাহাত্ব্যে এক ও অভিন্ন হয়ে সমানে এগিয়ে যেতে হবে। যেমন বাবা আদম ও মা হাওয়ার মাধ্যমে আগত সন্তানাদি আজ বিভিন্ন জাতি, গোত্র এবং বহুবংশের এমনকি বিভিন্ন ধর্মের আবরণে বিভক্ত কিন্ত এই সকলকেই ঐ সেই আদি ঐক্যের সুতিকাঘারে আবার ফিরে যেতে হবে। পৃথিবীতে আগমন ও প্রস্থানের একই বহি:প্রকাশ আর বাবা আদম ও মা হাওয়ার সন্তানদের মাধ্যমই আদাদের আগমন। তাই সকল দুরত্ব ভুলে গিয়ে ঐ হারানো ঐক্য এবং ঐতিহ্যে নিজেদেরকে নিয়োজিত করি এবং শান্তি ও স্থিতিশীলতা, নিশ্চয়তা ও নিরাপত্তা এবং সাম্যের সমান্তরাল ব্যাবহারের পুণ:প্রচলন এখনই শুরু করি। যাতে পৃথিবী আবার ফিরে পাবে তার হারানো জৌলুস এবং ঐতিহ্য ও গতি এবং মানুষ ফিরে পাবে শান্তি, নিশ্চয়তা, নিরাপত্তা এবং চিরস্থায়ী সুখের অভিন্ন এক সমুজ্জ্বল সমান্তরাল সাবজনীনতার সন্ধান। আসুন ঐক্যবদ্ধ্য হই এবং নিজেরা নিজেদের আগামীর শুভ সুচনা করি এবং বর্তমানের সকল নৈরাজ্যকে বিতারিত করি। সকলের জন্য (আশরাফুল মাখলুকাত) পৃথিবীকে বেহেস্তী আবাসে পরিণত করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.