বঙ্গবন্ধু ছিলেন ভীষণ গণমাধ্যমবান্ধব: তথ্যমন্ত্রী

প্রশান্তি ডেক্স॥ তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বঙ্গবন্ধু যেমন গণমাধ্যমকে ভালোবেসেছেন, গণমাধ্যমও তেমনি বঙ্গবন্ধুকে ভালোবেসেছে। বঙ্গবন্ধু ভীষণ গণমাধ্যমবান্ধব ছিলেন এবং তার দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনে গণমাধ্যমের ভূমিকা অনেক।

গত  বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) প্রাঙ্গণে দীপ্ত টিভি এবং বিএফডিসি আয়োজিত চার দিনব্যাপী ‘গণমাধ্যম ও বঙ্গবন্ধু শীর্ষক দুর্লভ আলোকচিত্র ও ১৫ আগস্টে দুই বাড়ি’ তথ্যচিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এ কথা বলেন।

ড. হাছান বলেন, অনেকে পঁচাত্তর সালে চারটি সংবাদপত্র রেখে বাকিগুলো বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়ে কথা বলেন, কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত ছিল সাময়িক এবং অনেকে হয়তো জানেন না, কোনও পত্রিকার কোনও সাংবাদিক তখন বেকার হননি। তথ্য দফতরের মাধ্যমে প্রত্যেককে সরকারি বিভিন্ন বিভাগে চাকরি দেওয়া হয়েছিল।

তথ্য বলেন, বঙ্গবন্ধুর মতো বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও অত্যন্ত গণমাধ্যমবান্ধব। তার নেতৃত্বে দেশে গণমাধ্যমের অভূতপূর্ব বিকাশ ঘটেছে। তার হাত ধরেই দেশে বেসরকারি টিভির যাত্রা শুরু। এরপর ২০০৯ সালে আবার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়ার সময় ১০টি টিভি ছিল, এখন ৪৫টি। ৩৮টি সম্প্রচারে আছে, শিগগিরই আরও সম্প্রচারে আসছে। বেসরকারি এফএম, কমিউনিটি বেতারও বঙ্গবন্ধুকন্যার হাত ধরেই এসেছে, দেশে দৈনিক পত্রিকা ১২শ’র বেশি। 

অনেক উন্নয়নশীল এমনকি অনেক উন্নত দেশের চেয়েও বাংলাদেশে গণমাধ্যম অনেক বেশি স্বাধীনতা ভোগ করে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পাশাপাশি গণমাধ্যমের দায়িত্বশীলতা অতীব প্রয়োজন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পটভূমি তৈরিতে যেমন অপসাংবাদিকতা ভূমিকা রেখেছে, বাসন্তীকে জাল পরানো ছবি ছেপে এবং এমন অনেক মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হয়েছে, তেমনি এখনও কিছু কিছু গণমাধ্যমে তেমন চর্চা দেখা যাচ্ছে। 

বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি, জ্বালানি সংকটের কথা এড়িয়ে গিয়ে শুধু দেশের দ্রব্যমূল্য নিয়ে সংবাদ দিলে তা ঠিক সাংবাদিকতা হয় না, বলেন ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, সিংগাপুর, থাইল্যান্ডে হাতেগোনা কয়েকটি টিভি আর পত্রিকা, মালয়েশিয়ায় সব টিভির ফিড একটি ট্রান্সমিশন কেন্দ্রের মাধ্যমে যায়, কোনও বিতর্কিত বিষয় থাকলে ফিল্টার করা হয়, আমাদের দেশে তা হয় না। অসত্য সংবাদ পরিবেশনের জন্য বিবিসি’র একটি সেকশনের পরিচালকসহ সবাইকে পদত্যাগ করতে হয়েছে, অসত্য সংবাদ পরিবেশনের ফলে মামলায় কয়েক বিলিয়ন ডলার জরিমানা না দিতে পেরে ১৩০ বছরের পুরনো ব্রিটিশ পত্রিকা নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড দেউলিয়া হয়ে বন্ধ হয়ে গেছে। ইউরোপ-আমেরিকায় ভুল বা অসত্য সংবাদ পরিবেশন করলে বিশাল অঙ্কের জরিমানা হয়, আমাদের দেশে হয় না। আমাদের দেশে গণমাধ্যম অনেক বেশি স্বাধীন।

মন্ত্রী আমন্ত্রিতদের সাথে নিয়ে প্রদর্শনীটি ঘুরে দেখেন এবং এর বড় ক্যানভাস ও দুর্লভ চিত্রের সমাবেশের প্রশংসা করেন।

বিএফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মো. মকবুল হোসেন, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের কিউরেটর নজরুল ইসলাম খান, আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন, দীপ্ত টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী জাহেদুল হাসান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফুয়াদ চৌধুরী।

Leave a Reply

Your email address will not be published.