ঈমানে ও বিশ্বাসে স্থির থেকে স্বজাগ থাকুন

চলতি সময়ে এসে যুগের চাহিদায় এবং সমস্ত কিতাবের বিশ্লেষণে উপনিত হওয়া যায় যে, শেষ সময়ের খুব কাছাকাছি এখন বিশ্ব। জ্ঞানী ও গুনী এবং শিক্ষায় শিক্ষিত আর স্বশিক্ষায় শিক্ষিত সকলেই একমত হবেন অথবা ঐক্যমত্যে পৌঁছাতে পারবেন যে, আমরা আর আগের মত শান্তি ও স্থিতিশীলতায় ফিরে যেতে পারব না। কারণ পৃথিবীর চাহিদায়-ই হলো নৈরাজ্য এবং বিশৃঙ্খলা; এই নৈরাজ্য এবং বিশৃঙ্খলার ইতি বা যবনীকাপাত টানার একমাত্র হাতিয়ার হলো কিয়ামত বা শেষ বিচারের দিন। সেই দিন যতই সন্নিকটে আসবে পৃথিবী ততই উত্তাল এবং উম্মাদ আচরণে একে অপরকে অতিষ্ট করে তুলবে। যা এখন শুরু হয়েছে এবং এর শেষের দিকে গতিময়তা নিয়ে বিভিন্ন আঙ্গিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তাই উপযুক্ত সময়েই আমাদেরকে সাবধান হতে হবে। সময় এখনই সাবধান হওয়ার এবং ঈমান ও বিশ্বাসে স্থির থাকার।
বিভিন্ন ব্যক্তি ও দেশের চলমান কার্যক্রমে এইমতে উপনীত হওয়া যায় যে, পৃথিবী শেষের প্রান্তে কারণ ক্ষমতার বাহাদুরী আর নৈতিবাচক স্বার্থের দ্বন্ধ এখন চরমে। এই চরমে থাকা দ্বন্ধের মূলেই রয়েছে পৃথিবী শেষের উন্মত্ততা আর উত্তাল বৈরী আচরণ। সত্যকে, সুন্দরকে এমনকি স্থীতিশীলতাকে, নিশ্চয়তাকে আর নিরাপত্তাকে বৃদ্ধাংগুলি দেখিয়ে অনিশ্চয়তার অতল গহ্বরে নিমজ্জ্বিত করানোই এখন চলমান কার্যক্রমের গতিময়তায় পরিণত হয়েছে। কেউ কেউ আবার প্রকাশ্যে বলে বেড়াচ্ছেন “এবারই শেষ; হয়ত জীবন নয়ত মরণ”। তাই সাবধান হউন এবং স্বজাগ থাকুন। যেমনিরূপে পূর্বেকার নবি ও রাসুলগন আমাদেরকে দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখিয়ে গেছেন। যেমন সৃষ্টিকর্তার কালাম বলে তোমরা সাপের মত সতর্ক হও এবং কবুতরের মত সরল হও। হ্যা এখনই এই যুগে ও সময়ে সতর্ক হওয়া এমনকি সরল হয়ে স্বজাগ থাকা বাঞ্চনীয় হয়ে পড়েছে। এর ব্যতিক্রম ভাবার কোন সুযোগ নেই অথবা করারও কোন সুযোগ নেই। তাঁর সকল কাজ-কর্মে ঈমান ও বিশ্বাসকে জিইয়ে রেখে স্ব স্ব কার্যক্রম আকড়ে ধরে সামনে এগিয়ে যান যেন শেষ সময়ে এসে নিজ নিজ নিরাপত্ত্বা এবং সততার প্রাপ্তী ও সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্য অটুট রেখে সুখী ও সমৃদ্ধ অনন্ত জীবনের স্বাধ আস্বাধনে নিয়োজিত থাকতে পারি।
পৃথিবীর চলমান গতিপথ ভঙ্গুর এবং রাজনৈতিক গতিপথও ভঙ্গুর। এই দুইয়ে মিলেই এখন মহা প্রলয়ের দিকে ক্রমবর্ধমানভাবে এগুচ্ছে। তাই মানুষের মাঝে নেই মমতা, ধৈয্য এবং ক্ষমা ও ভালবাসা। মানুষ এখন ক্ষুব্ধ এবং বিবেক বিসর্জিত ও মায়াবিহীন ক্ষমা ও ভালবাসার জগতে। তাই মানুষের কাছে ক্ষমা ও ভালবাসা চাওয়া এখন অর্থহীন অথবা নিজেকে ঈমান ও বিশ্বাস থেকে সরিয়ে নেয়ার সামিল। তাই মানুষের কাছে ক্ষমা ও ভালবাসা প্রত্যাশা না করে খোদার কাছে ক্ষমা ও ভালবাসা প্রার্থনায় মনযোগী হউন। খোদার সান্নিধ্যে থাকার নিমিত্ত্বে নিজেদেরকে নিয়োজিত রাখুন। স্ব স্ব ধর্মের অমীয় বাণীর প্রতি গুরুত্বারূপ করুন। ধর্মের আচলে নিজেদেরকে বন্ধি করুন। সৃষ্টিকর্তার সেবায় পুজিত হউন এবং অন্যদেরকে সেই সেবার অংশীদ্বার করানোর কাজে নিজেদেরকে জড়িত রাখুন। কল্যাণকামী চিন্তা ও চেতনায় উদ্ভুদ্ধ হউন এবং উদ্ভুদ্ধ করানোতে নিয়োজিত থাকুন। সৃষ্টিকর্তার বাক্যে আছে যে, শেষ যুগে বা সময়ে এসে মানুষ পিতা-মাতা, ভাই-বোন, সন্তান, স্ত্রী বিমুখ হবে। পিতা তার সন্তানকে অস্বীকার করবে এবং স্ত্রী তার স্বামীকে অস্বিকার করবে, মা তার সন্তান ছেড়ে চলে যাবে, সন্তান তার মা-বাবাকে ছেড়ে চলে যাবে। মোট কথা কেউ কারো খবর রাখবে না বরং নিজের ইয়ানাফছি ইয়ানাফছি করবে। হ্যাঁ এই চর্চার শুরুটা আরম্ভ হয়েছে এবং শেষটার দিকে গতিময়তা নিয়েই দৌঁড়াচ্ছে। তাই সাবধান! সময় ও সুযোগ উভয়টাই কাজে লাগাতে সচেষ্ট থাকুন। ক্ষমতা, অর্থ এবং পদ-পদবী আর গোষ্টিয় উপাধি আজ/ আগামীতে আর কাজে আসবে না। তাই ঐ সময়ের পূর্বেই নিজেদেরকে শোধরানোতে মনযোগী হউন এবং সংশোধিত জীবনের চর্চায় নিয়োজিত থাকুন।
একটি কথা আছে যা খুবই শক্তিশালী মানুষের জীবনের জন্য। সৃষ্টিকর্তা বহুপূর্বেই বলেছেন যে, তোমরা মানুষ হত্যা করো না; কারণ মানুষ হত্যা করলে আমাকেই হত্যা করা হয়। কারণ আমি আমার ছিফতে মানুষ সৃষ্টি করেছি আর এই মানুষকে দিয়েই আমি আমার পৃথিবীকে নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা এবং সুরক্ষায় রাখি। মানুষকে দিয়েই এই পৃথিবীকে শাষনের অধিনে রাখি। মানুষকে ব্যবহার করেই আমি আমার যাবতীয় কার্য পরিচালনা করি। আমার ভালবাসা ও ক্ষমা সম্পূর্ণই এই মানুষের জন্য এবং মানুষের কল্যাণের জন্য। মানুষের অন্তরাত্মাই হলো আমার ঘর। আমি ঐ ঘরেই বসবাস করি। আমি এখানে ভুপেন হাজারিকার সেই গানের উক্তিটিও স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, মানুষ মানুষের জন্য, আর জীবন জীবনের জন্য। ভেবে দেখেনতে ঐ উক্তি এবং গানের কথাগুলোতে কি শিক্ষা রয়েছে আমাদের জন্য? আজকের এই সময়ে এসে আমরা সর্তক্য ও স্বজাগ থাকার সেই প্রকাশিত বানীর হুবহু মিলনমেলা ঘটেছে। কিতাবে এও আছে যে, কিয়ামতের পূর্বে ঈসা মহিস আসবে এবং সেই আসাতেই অনেকেই তাঁর সাক্ষাতে বেহেস্ত নসিব হবেন। অন্য কিতাবে এও আছে ঈসার আগমন তরান্বিত হবে এবং কিয়ামত ও প্রলংয়করী ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে দাড়িয়ে তিনি খোদাভক্তদের রক্ষা করবেন। হ্যা সবই এখন প্রকাশিত ও প্রজ্বলিত। তাই স্ব স্ব ধর্মের আবরণে ও আলোকে হিসেব নিকেশ কষে আগামীর করনীয় ঠিক করুন।
পরিশেষে বলতে চাই আমাদের ভুরাজনীতি এবং কর্মনীতির বিষয়ালোকে। আমরা আমাদের শৈশব ও কৈশর পেরিয়ে এখন যুবা বা বৃদ্ধ বয়সের দিকে আর এই স্বাধীন সোনার বাংলা আমাদেরই মত যৌবনে পদার্পন করেছে তবে এই যৌবনে এসে বিশেষ বিশেষ বাধার সম্মুক্ষিণ হয়ে সম্মুখ সমরে এগুচ্ছে। তাই হিসেবে গোলমাল আর করা যাবে না বরং পাকাপোক্ত হিসেব নিকেষ কষেই এই যৌবনের সকল বাধা-বিপত্তিকে মোকাবিলা করতে হবে। যারা এই দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন তাদের হাতেই দেশের এই ক্রান্তিকাল মোকাবিলা করে সমৃদ্ধির ধারাবাহিকতায় এগিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব। সময়ের এই কঠিন সন্ধিক্ষণে আজ শুরু হওয়া নৈরাজ্য এবং এর গতিময়তা বৃদ্ধি পাওয়ার আগেই সামাল দেয়ার যাবতীয় ব্যবস্থা সুসম্পন্ন করতে হবে। হয়ত জীবন নয়ত মরন এই কঠিন বাক্যগুলো মোকাবিলা আগামীর মসৃন অগ্রযাত্রাকে ব্যহত করবে। সুতরাং আগামীর কল্যাণ ও নিজেদের স্থায়ীত্ব রক্ষায় ইতিবাচক ভূমিকা নিয়ে সকল নেতিবাচকতাকে মোকাবিলা এবং নেতিবাচক জীবন ও মরন বাক্যের উদ্যোক্তাদের জীবন রেখে নেতিবাচকতার মরণকে বিতাড়িত করুন। জনগণ ও দল এবং সরকার এই তিনের ঐক্য সুপ্রতিষ্ঠিত করেই ঐ সকল লোভাতুর নেতিবাচক উদ্যোক্তাদের দেহে জীবন রেখে নেতিবাচকতার মরন সুনিশ্চিত করুন। তাই স্বজাগ থাকুন এবং সতর্ক থাকুন। কোন অবস্থাতেই ঐসকল নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির অথবা নেতিবাচক কর্মকান্ডের সাথে যুক্ত এমনকি একাত্মতা পোষণ ও প্রকাশ করবেন না। বৃহত্তর স্বার্থে ক্ষুদ্র স্বার্থ পরিহার করুন এবং একে অপরকে নিশর্ত ভালবাসার বন্ধনে আবদ্দ করুন। দেশ, দল, রাষ্ট্র এবং জনগণ (মিলে) ঐক্যবদ্ধ আচরণ ও কর্মকান্ড পরিচালনা করুন। শেষ কথায় আবারো জোড় দিয়ে বলতে চাই ঈমানে ও বিশ্বাস স্থির থেকে স্বজাগ থাকুন। মহান সৃষ্টিকর্তা আমাদের সঙ্গে থেকে এগিয়ে নিবেন এটা সুনিশ্চিত। তাই সৃষ্টিকর্তার স্মরণ নিয়ে সকল কাজে অগ্রসর হউন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.