প্রশান্তি আন্তর্জাতিক ডেক্স॥ ইউক্রেনের যে চারটি অঞ্চল মস্কো দখল করেছে সেগুলোকে রাশিয়ার নিজস্ব ভূখণ্ড হিসেবে ঘোষণা করা হবে। গত শুক্রবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা দেন।
রুশ বাহিনীর দখল করে নেওয়া ডনেস্ক, লুহান্সক, খেরসন ও জাপোরিজ্জিয়া- এই চারটি অঞ্চলে তড়িঘড়ি করে গণভোট আয়োজনের পর মস্কো এই ঘোষণা দিচ্ছে।
ইউক্রেন এবং তার মিত্র দেশগুলো অবশ্য গণভোটের ফল প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা বলছে, কথিত গণভোটের অজুহাত দেখিয়ে এসব অঞ্চলকে রুশ ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত করে নেওয়া হচ্ছে।
রাশিয়া থেকে খবর পাওয়া যাচ্ছে, পুতিনের এই ভাষন মস্কোর রেড স্কয়ার হয়েছে। সেখানে যেসব বিলবোর্ড লাগানো হয়েছে সেগুলোতে ইউক্রেনের এই চারটি অঞ্চলকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে দেখানো হয়েছে। এই ভূমি সংযোজন প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পন্ন করার আগে রুশ পার্লামেন্টের উভয় কক্ষে প্রস্তাবটি পাস করা হয়।
২০১৪ সালে রাশিয়া যখন ক্রিমিয়া দখল করেছিল তখনও পশ্চিমা দেশগুলো সেটিকে পাতানো নির্বাচন বলেছিল। সে সময়ও এ ধরনের একটি গণভোটের আয়োজন করা হয়েছিল। তখন মস্কোয় ভাষণ দিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট অঞ্চলটিকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিলেন।
ইউক্রেনের চারটি এলাকা, পূর্বে লুহানস্ক ও ডনেস্ক এবং দক্ষিণে জাপোরিজ্জিয়া ও খেরসনে এ সপ্তাহের শুরুতে যে কথিত গণভোট হয়েছে সেখানে স্বাধীনভাবে কেউ ভোট পর্যবেক্ষণ করেনি। সশস্ত্র সেনাদের প্রহরায় কর্মকর্তারা ভোটারদের ঘরে ঘরে গিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মিডিয়ার যুক্তি, নিরাপত্তার খাতিরেই সশস্ত্র রক্ষীদের ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু বিবিসির সংবাদদাতারা বলছেন, এটা স্পষ্ট যে, ভোটারদের ভয় দেখানোও একটা উদ্দেশ্য ছিল।
দখলকৃত একটি শহর এনেরহোদারের একজন নারী বিবিসিকে জানিয়েছেন, তাকে বলা হয়েছিল, ‘আপনাকে মৌখিকভাবে ভোট দিতে হবে এবং একজন সৈনিক উত্তরটি একটি কাগজে লিখে রাখবে।’
‘জালিয়াতির ভোটে’র ফলাফল
ইউক্রেনের সরকার শুরু থেকেই এই ফলাফল নাকচ করে আসছে। তারা বলছে, কোনওভাবেই এই ভোট কিংবা তার ফলাফল তারা গ্রহণ করবে না। তারা এবং পশ্চিমা দেশগুলো একে জালিয়াতির ভোট বলে বর্ণনা করছে। তবে ইউক্রেনের এসব দখলকৃত অঞ্চলে মস্কো যেসব কর্মকর্তাদের বসিয়েছে তাদের দাবি, গণভোটে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে প্রায় সবাই অঞ্চলগুলোকে রাশিয়ার অংশ করে নেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছে।
যুদ্ধবিধ্বস্ত এই চারটি অঞ্চলে প্রায় ৪০ লাখ মানুষকে ভোট দেওয়ার জন্য আহবান জানানো হয়েছিল। এ অঞ্চলগুলো ইউক্রেনের মোট ভূখণ্ডের প্রায় ১৫ শতাংশ। ডনেস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলে রুশপন্থী বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা খবর দিচ্ছে যে, ৯৯ দশমিক ২৩ শতাংশ মানুষ রাশিয়ায় যোগ দেওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছে। তবে পর্যবেক্ষকরা বলছেন গণভোটের ক্ষেত্রে এ ধরণের ফলাফল বেশ অস্বাভাবিক। সূত্র: বিবিসি বাংলা।