সন্তুষ্টি আর অসন্তুষ্টি

সন্তুষ্টি আর অসন্তুষ্টি এখন মাথাচারা দিয়ে উঠেছে। তবে এই দুটি শব্দ আগেও ছিল এবং এখনও আছে আর ভবিষ্যতেও থাকবে। তবে আগে এর ব্যবহারের রকমফের ছিল কিন্তু বর্তমানে এর ব্যবহারের কোন রকমফের নেই। সন্তুষ্টি এবং অসন্তুষ্টি নিয়ে পৃথিবীতে অনেক ঘটনাই ঘটেছে যা ইতিহাসে লিপিবদ্ধ রয়েছে। স্বয়ং সৃষ্টিকর্তাই তাঁর সৃষ্টির্কে সন্তুষ্ট করতে পারেনি আর ভবিষ্যতে পারবে বলে মনে হয় কি? তবে কিছু কিছু মানুষ সৃষ্টিকর্তায় বিলিন এবং তারা তাদের জীবনে শত অসন্তুষ্টির মধ্যেও সন্তুষ্ট থাকতে চেষ্টা করে এবং সৃষ্টিকর্তার সহায়তায় সফল হয়। তবে সর্বময় সন্তুষ্টি বিরাজমান থাকে তা কিন্তু নয়। কিছু সময়ের জন্য হলেও সেই সন্তুষ্টির ছেদ ঘটে তবে পুনরায় অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করে আবার সৃষ্টিকর্তার কাছে ফিরে আসে। ঐ আসাটাই হলো মুমিন ও পরহেজগারের কাজ।
বিশ্বে আজ যত জামেলা বা ঝঞ্জাট তার পুরোটা জুড়েই রয়েছে সন্তুষ্টি আর অসন্তুষ্টির মারপ্যাচ। আমি বর্তমানের সঙ্গে ভবিষ্যতের তুলনা করতে চাই না বা অতীতেরও বিশ্লেষণ করতে চাই না তবে বলতে চাই বর্তমানের সন্তুষ্টি আর অসন্তুষ্টি একই বৃত্তের ছকে আটা এক মরণ ফাঁদ। তবে এই দুইয়েরই নেতিবাচক প্রভাব বেশী। তবে সন্তুষ্টির যে ইতিবাচক প্রভাব ছিল ও তার ছেদ ঘটেছে এবং সেই সন্তুষ্টিই এখন অসন্তুষ্টিতে পরিণত হয়েছে। সৃষ্টির রহস্যে এখন সন্তুষ্টি ও অসন্তুষ্টি ঘুর্ণায়মান চক্রাকারে বিরাজমান রয়েছে। এখানেই যত বিভ্রান্তি, মতভেদ, অসহিষ্ণুতা, অন্যায় আর ঘৃণার জাগরণ। মানুষকে, সমাজকে, রাষ্ট্রকে মোট কথা একটি সার্বজনীন ইতিবাচক কল্যাণকর ব্যবস্থার মধ্যে যা কিছু প্রয়োজন সকল কিছুই সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছা ও অভিপ্রায়ের আলোকে সাজানোর পরিপ্রেক্ষিতে সৃষ্টি হয় অসন্তুষ্টি। আর এই ক্ষেত্রে সন্তুষ্টিই ঐ অসন্তুষ্টিকে আহবান জানিয়ে সুযোগ করে দেয়; যাতে করে সকল কর্মকান্ডে অসন্তুষ্টির ছাপ বৃদ্ধমান থাকে। আর তাই হচ্ছে এই বর্তমানের উষ্ণ জাগরণে।
মানুষের কল্যাণে, যাবতীয় প্রয়োজনে, শিক্ষায় (স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, মসজিদ, মক্তবসহ সকল উচ্ছশিক্ষার আঙ্গিনায়), স্বাস্থ্য সেবায়, খাদ্য ও বাসস্থান আর কর্মসংস্থান এই সকল ক্ষেত্রেই সকলের প্রয়োজনে সমতাভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা কায়েমের লক্ষ্যে যারাই কর্মরত; আম জনতা বেশীরভাগ ক্ষেত্রে তাদেরই বিরুদ্ধে দন্ডায়মান। তবে অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং জীবন মানোন্নয়নের ক্ষেত্রেও ঠিক তাই। অতিত ও বর্তমান এবং ভবিষ্যত কি এই একই ভাব সম্প্রসারণে অগ্রগামী হবে নাকি নতুনের প্রয়োজনে নিজেদেরকে নতুন করে সাজাবে? দোষে ও গুণেই মানুষ। আর মানুষের দোষের চেয়ে গুণেরই কদর করা শ্রেয়। কে দোষ করেনি বা করবে না তা কি বলতে পারেন? দোষহীন কি কেউ আছেন? তাহলে কেন শুধু দোষ-ত্রুটি খুঁজে বেরান? বরং দোষ-ত্রুটিতে মনযোগ না দিয়ে বরং গুণের বহি:প্রকাশে মনযোগ দিন। একজন মানুষকে গুণের বহি:প্রকাশের বাহাবা দিয়ে উৎসাহিত করুন যেন সকল গুণগুলি একে একে প্রস্ফুটিত হয়।
পরিবার, সমাজ, দেশ-রাষ্ট্র বা জাতির কল্যাণে কার কি অবদান আছে অথবা কে কি করেছে এবং কার দ্বারা আর কি কি করার সম্ভাবনা রয়েছে সেই বিষয়টি খুজুন। এটা এখন সময়ের দাবী। উত্তপ্ত পৃথিবীতে ফুটন্ত অগ্নিউৎপাত বন্ধে শান্তি ও স্থিতিশীলতার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে চলমান গতিশীলতাকে আরো বেগবান এবং সুস্থির করার কারীঘরকে চিহ্নিত করুন এবং তাদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করুন। দ্বিমত থাকতে পারে, পছন্দ করতে না পরি কিন্তু জাতির বৃহত্তর কল্যাণের স্বার্থ্যে সমর্থন দিয়ে আগামীর কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত রাখতেতো পারি। কথায় এবং ষড়যন্ত্রে পারদশীদের সংস্পর্শ থেকে নিজেকে এবং নিজের পরিচিতজনকে দুরে রাখতে স্ব স্ব ভুমিকা পালন করি। বাংলার আকাশে উদীয়মান সুর্য্যকে অস্তমীত হতে দিতে আর অগ্রসর না হয়। যতটুকু এরই মধ্যে হয়েছি ঠিক এখানেই লাগাম টেনে ধরি এবং অতীতের শত্রুদের কুমন্ত্রণা ও মধুময় হাস্যোজ্জ্বল মুখের মনভোলানো কথায় কান না দিই বরং অপ্রীয় সত্যকে আলিঙ্গন করে সার্বিক কল্যাণ সুনিশ্চিত মতামত ব্যাক্ত করি। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মাধ্যমে কোন অধিকার অর্জন হয়না বরং আরো নেতিবাচক বিশৃঙ্খলাই অপেক্ষা করে। খারাপ কথা বলা, মিথ্যা সম্প্রচার বা প্রচার করে নিজেদের দন্ডের পাল্লা ভারি করার কথা থেকে বিরত থাকি এবং সমালোচনার জবাব সমালোচনায় না দিয়ে বরং কাজে ও কর্মের মাধ্যমে দিয়ে জনসন্তুষ্টি অর্জন করি।
বাংলাদেশ এগিয়েছে এবং এগিয়ে যাচ্ছে ও যাবে কিন্তু এই বাংলাদেশের মানুষই এই দেশকে আবারো পিছাতে মরিয়া হয়ে বিভিন্ন কর্মকান্ডে লিপ্ত রয়েছে। তাই সচেতনতা ভাল কিন্তু নিরবতা ভাল নয়। তাই উপযুক্ত সময়ে উপযুক্ত কাজটুকু সম্পন্ন করুন এবং দেশ মার্তৃকার তরে নিজেকে নিয়োজিত রাখুন। একটি ভাল ও গ্রহণযোগ্য কাজ সম্পন্ন করতে গেলে সমালোচনা এমনকি প্রতিবন্ধকতা আসবেই অথবা কোন কোন পদক্ষেপে ভুল হবেই; তাই তাকে ঐ কাজ থেকে সরিয়ে দিয়ে অন্যকে আনয়ন করার মধ্যে কোন বাহাদুরী অথবা বুদ্ধিমত্তার পরিচায়ক বহন করে না। বরং বর্তমানের ভুল থেকে আরো বড় ভুলের সুযোগ সৃষ্টি হয় যা বহুদিন ধরে জাতিকে এর খেসারত দিয়ে এগুতে হয়। তাই যে ভুল করেছে তাকেই সেই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে অগ্রসর হতে সুযোগ দিন। নিজের শৈসবের হাটি হাটি পা পা করে পথ চলা শিখার বিষয়টি একটু চিন্তা করুন এবং সেই আলোকেই আগামীর সিদ্ধান্ত নিয়ে অগ্রসর হউন।
অফিস-আদালত এবং গ্রাম-গঞ্জের সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে উপনিত হয়েছি যে, আরেকটি ভুল করতে সবাই প্রস্তুত হচ্ছে। তাই ঐ ভুল করার কোন সুযোগ ঐসকল মানুষদেরকে দেয়া যাবেনা। যদি তাদের হাতে কোন প্রকার সুযোগ দেয়া হয় তাহলে তারা বিপদজনক ভুল করে বসবে; যা জাতীর জন্য মরনকামর হিসেবে বিবেচিত হবে। সবাই অন্ধ হয়েছে এমনকি সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করে অসন্তুষ্টির মনোভাব প্রকাশ করে ভুল করার সিদ্ধান্ত শতভাগ বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর হয়ে এগুচ্চে। এই মুহুত্ত্বে আমার কোন পরামর্শ নেই তবে ভাবাবেগ ও হৃদয়ের রক্তক্ষরণ হচ্ছে। যে কিভাবে এইসকল মানুষদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনয়ন করা যায়। সরকারী উচ্চপদস্থ অফিসার থেকে শুরু করে সাধারণ রিকসাওয়ালা এবং পথচারী ও কৃষক পযন্তদের সম্মান করে সুযোগ দিয়ে প্রয়োজনীয় যোগানে ভরপুর রেখে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সকল ইতিবাচক দিক ভুলেগিয়ে নেতিবাচক দিকে মনোভাবাপন্ন হয়ে পরিবর্তনের অঙ্গিকারাবদ্ধ হয়েছে। কি বলব তবে শুধু এইটুকুই বলতে চাই সময় ও সুযোগ থাকতে ঐ নেতিবাচকদের ইতিবাচকতায় ফিরিয়ে নিয়ে আসুন এবং ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির বহি:প্রকাশে কাজ করুন। এখানে সস্তুষ্ট এবং অসন্তুষ্টের সমন্বয়ের অগ্নুৎপাত ঘটছে।
আমার দেশের কথা বলতে গেলে বলতে হয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই জাতির কল্যাণের আশির্বাদ এবং স্বাধীনতা অর্জনকারী দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের জনজোয়ারের দিশারী। কিন্তু বাকী সকল মন্ত্রী-এমপিরা যেন জনতার শত্রু এবং জনরোষের কারিঘর। তাই শেখ হাসিনাকে অনুসরণ ও অনুকরণ করে আগামীর দিনগুলোকে কাজে লাগান এবং নিজেও একজন জনজোয়ারের কারিঘরে পরিণত হউন। এই দেশের জন্য এবং দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য বঙ্গবন্ধু থেকে শেখ হাসিনা কতকিই না করেছেন। কিন্তু মানুষকি এইসকল উন্নয়ন এবং দৃষ্টান্তগুলোকে মনে পোষণ করেছেন; না বরং প্রত্যেকটি মানুষই অকৃতজ্ঞ হয়ে সুযোগের সৎব্যবহারের আশায় বসে আছেন। ভাল-মন্দে মিশানো একটি মানুষের জীবন এবং এই জীবনেই রয়েছে আমাদের প্রাণপ্রীয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী; যেসকল ভালগুণ রয়েছে সেই প্রত্যেকটি গুণই তিনি মানবতার কল্যাণে এবং দেশের উন্নতির তরে ব্যবহার করে সফলতা এবং দৃষ্টান্ত বহন করেছেন। আগামীতে হয়তো আরো বিশাল কিছু এই জাতির জন্য অপেক্ষা করছে। যার উপর ভর করেই এই জাতি বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে বীরবেশে উন্ননতর জীবন-যাপন করে বিশ্ব নেতৃত্বের একজন স্বক্রীয় কর্মী ও নেতা এবং উপদেষ্টা হিসেবে ভুমিকা রাখতে পারবেন। তাই সকল কর্ম ও ক্ষেত্র বিশেষে আমরা সন্তুষ্টি ও অসন্তুষ্টিকে বিসর্জন দিয়ে আগামীর কল্যাণের তরে আরো কয়েকটি বছর শেখ হাসিনাকে নিয়ে এগুই। শেখ হাসিনার বিকল্প এখনও কেই বাংলাদেশে নেই এবং আগামীর রাজনীতির পালাবদলের জন্য নেতা হিসেবে দায়িত্ব নেয়ারও কেউ এখনও বিকল্প তৈরী নেই; তাই নের্তৃত্ব বদল এমনকি সরকার বদল নয় বরং কর্মে, কথায় যারা উপযুক্ত নয় তাদের পরিবর্তে নতুনের আগমন ঘটাতে কাজ করুন। পুরাতনকে বিদায় দিয়ে নতুনকে শিখানোর কাজে মনোনিবেশ করুন। যারা জরাজির্ণ এবং পরীক্ষিত অসফল তাদেরকে অব্যাহতি দিয়ে নতুনকে, উদ্যোমীকে, চৌকস ও দুরদর্শীকে পদায়ন করুন। সরকার প্রধান শেখ হাসিনার সাঙ্গে তাঁরই মত যোগ্য, অভিজ্ঞ এবং চৌকসদের সমন্বয়ে দেশ পরিচালনার ব্যবস্থা করতে সহায়তা করুন।
সকল সন্তুষ্টি ও অসন্তুষ্টিকে বিতারণ করুন। সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছা ও অনিচ্ছার প্রতি গুরুত্বারূপ করুন। বিশ্ব অচলায়তনের জোড়ালো হাওয়া থেকে আমাদের মার্তৃভুমি রক্ষায় ভুমিকা রাখুন। প্রথমে নিজে এবং সমাজ ও দেশ রক্ষার পরেই প্রতিবেশীকে ঠিক নিজের মত মহব্বত করুন। এইভাবেই বিশ্ব অচলায়তনের বেড়াজাল মুক্ত করে শান্তি, স্থিতিশীলতা, নিশ্চয়তা, নিরাপত্তা এককথায় বেহেশতী রাজ্যের অভয়ারন্যে এই অচল পৃথিবীকে সচল রাখুন। পাওয়া নাওয়ার হিসেব নিকেশ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখুন এবং সন্তুষ্টি ও অসন্তুষ্টির উর্দ্ধে উঠে স্ব স্ব ভুমিকা পালনে সচেষ্ট থাকুন। আমাদের দ্বারা সৃষ্টিকর্তা এই পৃথিবীকে নিয়ন্ত্রণে নিবেন এবং তাঁর সকল ইতিবাচক ও মঙ্গলজন ন্যায় নিষ্ঠা পূর্ণপ্রতিষ্ঠা করিবেন। সবাই ভাল থাকেন এবং সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে থাকুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.