বিএনপির শাসনামল: মির্জা আব্বাসের লাগামহীন দুর্নীতি এবং বেপরোয়া জবর-দখল-সন্ত্রাস

বাআ॥ বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শেষের দিকে, টেন্ডার ছাড়াই সম্পূর্ণ অবৈধভাবে রেলওয়ের ২ একর জমি একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানকে লিজ দেয় গণপূর্ত মন্ত্রী মির্জা আব্বাস। এই সম্পদের মূল্যের পরিমাণ ছিল তখন কমপক্ষে ৫১ কোটি টাকা। হাওয়া ভবনের নির্দেশে মাত্র ১৪ দিনের মধ্যে এর পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ এই বিএনপি নেতা। অথচ রেলওয়ের জমি গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনেই নয়, এটি করার আইনগত অধিকার তার নাই।

এমনকি যে সমিতির নামে জমিটি ৯৯ বছরের জন্য লিজ দেওয়া হয়েছে, সেই সমিতির নামও সমবায় অফিসের তালিকায় খুঁজে পাওয়া যায়নি। ২০০৭ সালের ২৮ জুলাই দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার সংবাদে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার পর রেলওয়ের পক্ষ থেকে তাদের জমির ন্যায্য দখল ফিরে পাওয়ার দাবি জানালে, বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশনের নজরে আসে।

জানা যায়, ২০০৬ সালের অক্টোবরে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতা ছাড়ার আগে এটাই মির্জা আব্বাসের শেষ দুর্নীতি। মাত্র ১৪ দিনের মধ্যে পূর্বাচল সমবায় সমিতির নামক একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ১ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ক্যাশ জমা নিয়ে জমির দখল বুঝিয়ে দেওয়া হয়। রেলওয়ের মালিকানাধীন ওই জমির একটি অংশে, রেলওয়ের অনুমোদক্রমে একটি প্রতিষ্ঠান লিজ নিয়ে ব্যবসা করছিল, পেশী শক্তি খাটিয়ে তাদেরও সেখান থেকে ভাগিয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় রেলওয়ে প্রতিবাদ জানালেও মির্জা আব্বাসের ক্যাডার বাহিনীর প্রতাপের কাছে হেরে যায় তারা।

বিএনপি আমলে এভাবেই সন্ত্রাসীদের ক্ষমতার দাপটে নিয়মনীতির তোয়াক্কা করা হয়নি কোথাও। এমনকি সরকারি কর্মচারীদেরও হুমকি-ধামকি ও সন্ত্রাসী আচরণ চালিয়ে গেছে বিএনপি-জামায়াতের এমপি-মন্ত্রীরা। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ভাই-ভাগ্নেসহ অন্যান্য স্বজন এবং মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামেও রাষ্ট্রের ৮০০ কোটি টাকার জমি জালিয়াতি করে দলিল করে দিয়েছিল এই আব্বাস। এমনকি তারেক রহমানের হয়ে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতো ঢাকার যে চারজন এমপি, আব্বাস তাদের মধ্যেও অন্যতম।

Leave a Reply

Your email address will not be published.