অগ্নিসন্ত্রাস মামলার আসামিদের ছাড় দেওয়া হবে না: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বাআ॥ আন্দোলনের নামে অগ্নিসন্ত্রাসে জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষ হত্যা, অগ্নিসন্ত্রাসে জড়িত আসামীদের ধরতে হবে এবং তাদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে। গত শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভার সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, যে কারণে আজকে বিএনপি স্বাধীনভাবে মিটিংও করতে পারছে, মিছিলও করতে পারছে, সবই করতে পারছে। কিন্তু যেসব আসামি অগ্নিসন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত, যারা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করেছে, রেল, বাস, গাড়ি, সিএনজি, লঞ্চে আগুন দিয়েছিল, কোনো জায়গা বাদ ছিল না, প্রত্যেক জায়গায় আগুন দিয়ে জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে পুড়িয়ে হত্যা করেছে তাদের বিচার করা হবে।

তিনি বলেন, যারা এই খুনের সঙ্গে জড়িত, অগ্নি সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত, জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত, আমি জানি তারা অনেকেই লুকিয়ে ছিল। এখন বিএনপি মাঠে নেমেছে, তারা মাঠে নামবে। কিন্তু এসব আসামিকে ধরতে হবে এবং তাদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে। কারণ তারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে, জীবন্ত মানুষ হত্যা করেছে। হাত কেটেছে, চোখ তুলেছে, মানুষকে নির্যাতন করেছে। তাদের ছাড় নেই। আইন তার আপন গতিতে চলবে। আইন সবার জন্যই সমান। এটা তাদের মাথায় রাখতে হবে। রাজনীতি করবে, রাজনীতির হিসেবে। কিন্তু সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদী রাজনীতি এই দেশে চলবে না। এটা আমরা চলতে দেব না। এটা মাথায় রাখতে হবে।

আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা বেড়েছে দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, গত ১৪টা বছর আমরা এই দেশের মানুষের আস্থা, বিশ্বাস ধরে রেখেছি, অর্জন করেছি। আরও বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে আওয়ামী লীগ। সেটা মাথায় রেখে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। তিনি বলেন, যারা সন্ত্রাসী, খুনি, ১০ ট্রাক অস্ত্র বা গ্রেনেড হামলাকারী, ৬৩ জেলায় বোমা হামলাকারী এদেরকে বাংলাদেশের জনগণ বিশ্বাসও করে না। এদের পাশে কোনোদিন থাকবে না, ভোটও দেবে না। এটা হল বাস্তবতা।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ দেশ চালায় জনগণের প্রতি একটা দায়িত্ববোধ থেকে, আমরা স্বাধীন করেছি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে, জনগণের প্রতি আমাদের একটা আস্থা আছে, বিশ্বাস আছে আর দায়িত্ববোধ আছে। সেই ভাবে চিন্তা করেই আমরা রাষ্ট্র চালাই বিধায় এখনো বাংলাদেশের অর্থনীতি সচল আছে, যেটা পৃথিবীর আর কোনো দেশে নেই।

নেতা-কর্মীদের আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের কথা জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের উন্নয়নের কথাগুলো মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। ভবিষ্যতের জন্য আমরা যে পরিকল্পনাগুলো নিয়েছি সেটাও মানুষের সামনে তুলে ধরতে হবে। বিএনপির আমলে তাদের যে লুটপাট, দুর্নীতি, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ, বোমাবাজি, গ্রেনেড হামলা, অত্যাচার-নির্যাতন, খুন, রাহাজানি- এমন কোনো অপকর্ম নেই তারা করেনি। মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীনতা বিজয় অর্জনকারী দেশ সে বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে ভিখারির দেশে পরিণত করেছে।

সভায় সিদ্ধান্ত হয় আগামী ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এবারের সম্মেলন সাদাসিদে ভাবে অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এবারের সম্মেলন আমরা শান-শওকত করে করবো না। খুব সীমিত আকারে অল্প খরচে সাদাসিধা ভাবে আমাদের সম্মেলনটা করতে হবে।

নিয়মিত দলীয় সম্মেলন করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সম্ভবত বাংলাদেশের একটি মাত্র দল গঠনতন্ত্র মেনে চলে, নিয়মিত সম্মেলনএবং দেশের জন্য কাজ করে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় দলের সাধারণ সম্পাদকসহ কেন্দ্রীয় কার্যনিবার্হী সংসদের সদস্যরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.