বাজারে এলো দেশীয় ইলেকট্রিক গাড়ি-মোটর সাইকেল

প্রশান্তি প্রযুক্তি ডেক্স॥ পরিবেশবান্ধব ইলেকট্রিক সাইকেল, বৈদ্যুতিক গাড়ি ইত্যাদির বেলায় বাংলাদেশ আমদানি নির্ভর। এই নির্ভরতা কমাতে ইলেকট্রিক যান তৈরিতে এগিয়ে এসেছে দেশীয় প্রতিষ্ঠান বাঘ ইকো মোটরস লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি ব্যাটারিচালিত যান তৈরি করেছে। এরমধ্যে আছে সোলার কার, মোটর সাইকেল, সোলার ভ্যান, সোলার ইকো ট্যাক্সি ইত্যাদি। প্রতিষ্ঠানটির নির্মিত পরিবেশবান্ধব, জ্বালানি সাশ্রয়ী এই গাড়ির নাম রাখা হয়েছে ‘বাঘ’। এসব যানবাহনের উদ্বোধন ও প্রদর্শনী হয়ে গেলো ঢাকার হোটেল সোনারগাঁওয়ে।

গত শুক্রবার (৪ নভেম্বর) বিকালে বাঘ মোটরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট অভিনেতা আফজাল হোসেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাঘ ইকো মটরসের প্রেসিডেন্ট কাজী জসিমুল ইসলাম বাপ্পী। প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাহিদ নওরীন জাহানসহ প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোস্তাফা জব্বার আজকের দিনটাকে ‘অনন্য একটা দিন’ হিসেবে অভিহিত করেন। কারণ উল্লেখ করে বলেন, ‘আজ শহরে যান্ত্রিক বাঘ এলো।’

আইওটি-ভিত্তিক গাড়ির জন্য তিনি মুগ্ধতা প্রকাশ করে বলেন, ‘প্রযুক্তির মতো জনবান্ধব আর কিছু নেই। এটা দেখে মনে হচ্ছে আমরা পঞ্চম শিল্পবিপ্লবে পা রাখলাম।’

দেশে তৈরি এই ইলেকট্রিক যান সম্পর্কে প্রতিষ্ঠানটির প্রেসিডেন্ট কাজী জসিমুল ইসলাম বাপ্পী জানান, চার বছরের পরিশ্রমের পর বাঘ ইকো মোটরস সম্পূর্ণ আইওটিভিত্তিক সৌর বিদ্যুৎচালিত টু হুইলার, থ্রি হুইলার ও ফোর হুইলার ইলেকট্রিক যান বাজারে নিয়ে এলো। তিনি এই যানকে সম্পূর্ণ মেইড ইন বাংলাদেশ পণ্য বলে অভিহিত করেন। 

তিনি জানান, দেশীয় প্রযুক্তিতে উদ্ভাবিত এই বৈদ্যুতিক গাড়িগুলোতে আছে ইন্টারনেট সুবিধা, জিপিএস ট্র্যাকিং, মোবাইল ফোন চার্জিং সুবিধা। এছাড়া এতে আছে প্যানিক বাটন, ২৪ ঘণ্টা ভিডিও মনিটরিং ব্যবস্থা। রয়েছে ব্যাটারি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, চার্জিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ইত্যাদি।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাঘ ইকো মোটরসের তৈরি গাড়িগুলোতে ব্যবহার করা হয়েছে কোম্পানির নিজস্ব ডাটা সেন্টার। এতে করে সার্বক্ষণিক যানগুলো মনিটর করা যাবে। এতে থাকা প্যানিক বাটন চালক ও আরোহীকে বাড়তি নিরাপত্তা দেবে। চালক বা যাত্রী বিপদে পড়লে এই বাটন চেপে তাৎক্ষণিকভাবে সাহায্য চাইতে পারবেন। বিদ্যুতের অপচয় ও অপব্যবহার ঠেকাতে এসব ইলেকট্রিক যানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়েছে। ফলে গাড়িগুলোতে চার্জ দেওয়ার জন্য অবৈধভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করা যাবে না। যদি এর চালক অবৈধভাবে চার্জ দেওয়ার চেষ্টা করে তবে এতে থাকা আইওটি (ইন্টারনেট অব থিংস) ডিভাইসের মাধ্যমে বাঘ ইকো মোটরসের ডাটা সার্ভারে খবর চলে যাবে। ইতিমধ্যে এসব বাইক-গাড়ি সড়কে চলাচলের জন্য বিআরটিএর অনুমতি নিয়েছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি।

ব্যাটারিচালিত গাড়িগুলোর ব্যাটারিতে ৫ বছরের রিপ্লেসমেন্ট ওয়ারেন্টি দিচ্ছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। প্রত্যেকটি গাড়ির জন্য থাকবে প্রথম পক্ষের ইন্সুরেন্স। বাঘ ইকো মোটরস বাংলাদেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রফতানি করার পরিকল্পনা রয়েছে। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, পরিবেশবান্ধব এই ইলেকট্রিক যানগুলো চার্জ দেওয়ার জন্য অচিরেই দেশজুড়ে চার্জিং স্টেশন স্থাপন করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.