বঙ্গবন্ধুর ছোটবেলার স্মৃতিচারন টুঙ্গি পাড়ার বাড়িতে

প্রশান্তি ডেক্স॥ স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে প্রথম বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে টুঙ্গিপাড়ার সেই বাড়িতে দাঁড়িয়ে তাঁর বাবা শেখ লুৎফর রহমান ও মা সাহারা খাতুন ছেলের ছোটবেলার স্মৃতিচারণ করেন। এটি সেই বাড়ি, যেখানে পাকিস্থানি বাহিনী মুক্তিযুদ্ধকালে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিল। সে সময় ধ্বংস করে দেওয়া হয় বাড়িটি।

১৯৭২ সালের ১৮ মার্চ প্রকাশিত দৈনিক বাংলা পত্রিকায় একটি ছবিসহ প্রতিবেদনটি ছাপা হয়। সেখানে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধুর বাবা-মার সাক্ষাৎকার গ্রহণ করছেন প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সেক্রেটারি আমিনুল হক বাদশা। এ সময় বঙ্গবন্ধুর বাবা-মা শ্রীমতি গান্ধী ও ভারতের জনগণের সুখ-সমৃদ্ধি ও উন্নতি কামনা করে টুঙ্গিপাড়া থেকে একটি বার্তা পাঠান।

সে সময় ইন্দিরা গান্ধী স্বাধীন বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় সফরে ছিলেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, বঙ্গবন্ধুর বাবা-মা প্রার্থনা করেন, প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বন্ধুত্ব বৃদ্ধি পাবে ও চিরস্থায়ী হবে।

বঙ্গবন্ধুর বাবা-মা প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও ভারতের জনগণের জন্য সম্মান, সুখ-সমৃদ্ধি ও উন্নতি কামনা করেন। একইসঙ্গে দুঃখ প্রকাশ করেন যে প্রচুর ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও অসুস্থতার কারণে ঢাকায় গিয়ে ব্যক্তিগতভাবে তা জানাতে পারছেন না।

সেই বছর অনাড়ম্বর কিন্তু আন্তরিকতার সঙ্গে পালিত হয়েছিল জন্মদিন। এইদিনে ভারতের কোটি মানুষের শুভেচ্ছা নিয়ে এসেছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। এছাড়া সকাল থেকে ধানমন্ডির বত্রিশ নম্বর সড়কের সেই বাড়িতে ঘনিষ্ঠজন সবাই আসেন। তাদের দেখে স্মিতমুখে বেরিয়ে আসেন জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি বেরিয়ে সমবেত জনতার উদ্দেশে বলেন আরে, আমার আবার জন্মদিবস কিরে, আয় আয় তোরা আমার কাছে আয়। সেই ডাকে যেন ছিল একটি সাগরের আহ্বান।

সেদিন সমবেত অনুরাগীদের মধ্যে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী, ছাত্রনেতারা, রাজনৈতিক উপদেষ্টা তোফায়েল আহমেদসহ অনেকে। স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী বঙ্গবন্ধুকে শুভেচ্ছা জানায় ও তাদের পক্ষ থেকে প্রিয় নেতাকে মালা পরিয়ে দেন বাহিনীপ্রধান গণপরিষদ সদস্য আব্দুর রাজ্জাক। বাংলাদেশ যুব সংঘ জন্মদিন উপলক্ষে প্রকাশিত একটি পুস্তিকা বঙ্গবন্ধুকে উপহার দেন। এ সময় দোতলার বারান্দার রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে ছিলেন ছোট্টমনি রাসেল ও তার মা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব, তার বড় ভাই শেখ কামাল, মেজ ভাই শেখ জামাল, বড় বোন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।

Leave a Reply

Your email address will not be published.