ত্যাগের মাসের সমন্বয়

ত্যাগের মাসের সমন্বয় সাধন বড়ই জটিল আকার ধারণ করছে। এই পৃথিবী এখন ত্যাগের উর্ধে এবং সমন্বয়ের উর্ধে উঠে গেছে আর জীবন-জীবিকা ও কর্মকরে খেটে খাওয়া মানুষদের উপর নির্যাতন ও অত্যাচারের শিকল বেষ্টিত এক অন্ধকার আরব্য রজনীর আইয়্যামে জাহেলিয়াত পর্ব বাস্তবায়ন বাস্তবে রূপদান কল্পে ঐক্যবদ্ধ, জোটবদ্ধ, অথবা একলা চলো নীতিতে অগ্রসর হচ্ছে। এই এহেন ত্রাহি ত্রাহি সময়ে পৃথিবীর নিকট আকুল আবেদন এবং এর বাসিন্দাদের প্রতি নিবেদন এই যে, ত্যাগের মহিমায় পরিপূর্ণতা আনয়ন করুন। সাম্য ও ভাতৃত্বের বন্ধনের নিশ্চয়তা পরিপূর্ণ করুন। শান্তি ও স্থৃতিশীলতার বিধান পরিপূর্ণ করুন। নৈতিকতা ও ঈমান এবং আমলের পরিপূর্ণতা আনয়ন করুন।

প্রত্যেকেই স্বমহিমায় ত্যাগের মাধ্যমে উদ্ভাসিত হউন। আপনি আর আমি কেহই এই পৃথিবীতে বা অবস্থানে বেশীদিন নয়; তবে কার কখন ডাক আসে বা পরে তা বলার ক্ষমতা কারো নেই কিন্তু একটি ক্ষমতা এখনো অব্যবহৃত রয়ে গেছে তা হলো চর্চার মাধ্যমে স্বরূপে ফিরার আর তা হলো ত্যাগের মাধ্যমে। সিয়াম সাধনা এই ত্যাগের চর্চায় কাজ করে এবং এর মাধ্যমে আমরা আশরাফুল মাখলুকাত ফিরে পেতে পারি আমাদের হারানো জৌলুস। যা সৃষ্টির পর মহান রাব্বুল আল আমীন তাঁর প্রতিক্রিয়াই বলেছিলেন,- চমৎকার ও অতি উত্তম। কিন্তু সেই চমৎকার আর অতি উত্তম অবস্থান আমরা হারিয়েছি। আর এই হারানোর বেদনায় আজ আমরা অন্ধকারের তলানিতে নিমজ্জ্বিত। বাবা আদম ও মা খাওয়ার সেই অবাধ্যতার ফল এখনও ভোগ করে যাচ্ছে এই আদম হাওয়ার ঔরসজাত সন্তানেরা।

একটি ঘটনা নিয়ে নানান জন নানান কথা বলেছেন আর কেউ কেউ এর পক্ষ নিয়েছেন কিন্তু সকলের মধ্যে একজনের কথাটি সবচেয়ে গ্রহনযোগ্য এবং সাম্য ও ভাতৃত্বসূলভ ছিল। তিনি আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রী জনাব একে আবদুল মোনেম সাহেব। তবে তথ্য প্রযুক্ত আইন হয়েছে এবং এই আইন থাকবে এটাই স্বাভাবিক। এর ব্যবহারে রকমারী বাহার বন্ধ করাটা জুররী। আইন ব্যবহারে যেন সাম্য ও সমন্বয় থাকে এমনকি সকলের অধিকার রক্ষা হয় সেইদিকে লক্ষ্যদিয়ে আগামীর করনীয় ঠিক করা জরুরী। এই আইনে কাউকেই বঞ্চিত করা যাবে না এমনকি যারা এযাবতকাল পর্যন্ত বঞ্চিত হয়ে এসেছেন তাদের বিষয়ে ভাবা দরকার। আমি পুর্বেও এই আইনের প্রয়োজনীয়তা এবং কাদের জন্য প্রয়োজন তা লিখনীতে স্পষ্ট করেছি সেই আলোকেই এই আইন কার্যকর থাকা বঞ্চনীয়।

সমন্বয় একটি সুন্দর ও গ্রহনযোগ্য শব্দ। এর ব্যবহার প্রস্ফুটিত হউক আমাদের সকলের কল্যাণে। সরকারী অফিসে সমন্বয় বড়ই অসহায়। এক অফিস আরেক অফিসকে ছোট করার কাজে সর্বদাই ব্যতিব্যস্ত। তাই এই সমন্বয় একান্ত কাম্য। মন্ত্রণালয়, এসবি, এনএসআই, বিডা, এনজিও ব্যুরো, ভিসা অফিস এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের কর্মকান্ডের সমন্বয় সাধন করা জরুরী। বর্তমানে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে সমন্বয় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখতে পারে। সমন্বয়হীনতার কারণে একে অন্যের সম্মানহানী এমনকি কোন কোন সময় রাষ্ট্রেরও সম্মানহানী হয়ে থাকে। তবে দেখার কেন নেই এবং শোনারও সময় নেই। তাই এই ক্ষেত্রে সমন্বয়ের বিকল্প নেই। আমরা কারো দুষ বা ত্রুটি নিয়ে মজা করতে চাই না বরং দোষত্রুটিগুলোকে সংশোধন করে সমন্বিত পদক্ষেপে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে চাই। নিখুত এর দৃষ্টান্ত স্থাপনে স্ব স্ব ভুমিকা রেখে একে অন্যকে সহযোগীতা এবং দেশের কল্যাণে ভুমিকা রাখতে শপথ নিয়ে বাস্তবায়নাধীন চর্চার ধারাবাহিক ক্রমোন্নতি সাধন করতে চাই। এক সংস্থার ইয়েছ কে যেন অন্য সংস্থার নো তে পরিণত না করি। ক্ষমতা কার বেশী তা দেখাতে গিয়ে দেশ ও জনগণকে যেন নিস্পেষিত না করি। কথায় আছে শিলে পাটায় ঘষাঘষি মরিচের জীবন শেষ। আমরা যেন মরিচের পর্যায়ে না পড়ি সেই দিকে লক্ষ্য রেখে প্রত্যেকে প্রত্যেকের দায়িত্ব পালন করি। আল্লাহর ন্যায় বিচার বা সৃষ্টিকর্তার বিচার দেখার সুযোগ সবাই পাবে এবং তাঁর বিচার এখন চলমান রয়েছে।

বিভিন্ন স্থালে লাগা আগুণের লেলিহান শিখায় যে শিক্ষা ভাসমান তা গ্রহণকরার মানুষিকতায় পরিপুর্ন হউন। কারো উপর দায় না চাপিয়ে প্রত্যেকেই নিজের উপর দায় নিয়ে আগামীর করনীয়তে অগ্রসর হউন। দায় চাপানো বা আত্মপক্ষ সমর্থন এমনকি অন্যের প্ররোচনায় করেছি বোঝানো কোন মানব সন্তানের কাজ নয় বরং ঐসকল কাজ যারা যারা করেছেন তারা ইবলিশ শয়তানের। তাই আর ইবলিশ শয়তানের অধিনে না থেকে আল্লাহর বা সৃষ্টিকর্তার অধিনে থাকতে চেষ্টা ও চর্চা উভয়ই করুন। বর্তমান বিশ্বে শয়তান জাগ্রত এবং তার কাজ প্রচন্ড গতিতে চলমান। শয়তান বন্ধি এই কথাটি শুনেছিলাম শৈশবে। রমজান মাসে শয়তান বন্ধি হয়ে যায় আর মানব সন্তানরা শয়তানি ছেড়ে আল্লাহর সান্নিধ্যে থেকে ত্যাগ ও তিতিক্ষার মহিমায় স্বউদ্ভাসিত হয়। কিন্তু আজ দেখছি শয়তান মুক্ত এবং শয়তানির বাহারি রকম ফের চলমান। তাহলে আল্লাহর কালামের শিক্ষার বিচ্যুতি কে ঘটাল। তা খুঁজে বের করা অবিশম্বাবি হয়ে পড়েছে।

স্ব স্ব ধর্মের বেড়াজালে থেকে সৃষ্টিকর্তার এবাদতে মশগুল থাকাই শয়তান মুক্ত থাকা এবং রাখার উত্তম ব্যবস্থা। ধর্মীয় মূল্যবোধের কোন বিকল্প নেই এবং ধর্মীয় মূল্যবোধের শিক্ষা এবং চর্চার আলোকেই পৃথিবীর চলমান নৈরাজ্য থেকে মুক্তির একমাত্র পথ। ধর্মীয় মূল্যবোধগুলোই আমাদেরকে ত্যাগের শিক্ষা দেয় এবং সেই ত্যাগের শিক্ষা এবং এর মহিমার মাধ্যমেই মানুষ স্বয়ং সৃষ্টিকর্তাকে দেখেন এবং তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। তাই আসুন এই উষ্ণ সময়ে সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্যলাভে স্ব স্ব ধর্মের শিক্ষায় মনোযোগী হই এবং সাম্য, ভ্রাতৃত্ব ও ন্যায়পরায়ন আর সততার সঙ্গে দৈনন্দিন বসবাস এবং আলিঙ্গনে আবদ্ধ থাকি। কম বেশী এবং লাভ লোকসানের হিসেব নিকেষ থেকে বের হয়ে এসে ত্যাগের মাধ্যমে সাম্যের বন্ধনের কার্যকারীতা দৃশ্যমান রাখি। সকালে বাদশা ও বিকেলে ফকির এবং বিকেলে বাদশা আর সকালে ফকির এই পদ্ধতির অবসান ঘটাই। সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্যে থেকে সব সময়ই বাদশাহী জীবন এবং অতি উত্তম এর স্বরূপে ফিরে গিয়ে স্ব স্ব কাজ সুসম্পন্ন করি।

রাজনীতিকে কলূষিত করার জন্য এই উপমহাদেশে এবং পশ্চিমা সংস্কৃতিতে এখন চর্চা শুরু হয়েছে। এই নেতিবাচক কুটকৌশলের চর্চা যেন আগামীর রাজনীতি এবং নিতি ও আদর্শকে মাটিচাপা দিয়ে নতুন এক রাজনীতি ও নিতি এবং আদর্শ উদ্ভাসিত হতে যাচ্ছে। সারা পৃথিবীর দিকে তাকালে যেন মনক্ষুন্ন হওয়া ছাড়া আর কোন উপায় অবশিষ্ট নেই। ইন্ডিয়া থেকে আমেরীকা কোথায় কোন নিশ্চয়তা নেই তাহলে কেন আমাদের দেশের রাজনীতি নিয়ে বড় বড় সবক আওয়ায়। এটাও এক প্রকাশ রাজনীতি। রাহুলের মামলার রায় এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প এর মামলা এই সকল যেন এক অবুঝ শিশুর অন্ধবস্থার নোংরামির খেলা; যা তারা কেউই দেখতে এবং বুঝতে পারে না। কিন্তু আমরা এবং আপনারাতো ঠিকই বুঝতে পারতেছেন এবং দেখতে পাইতেছেন। তাই বলি ঐ নেতিবাচকতা থেকে ইতিবাচকতার শিক্ষা নিন এবং আগামীর আমার ও আপনার রাজনীতি ও নিতি এবং আদর্শকে নিস্কলুস রাখতে পারি। আগামীর দৃষ্টান্ত হিসেবে জাগ্রত রেখে বিশ্বায়নের জন্য শিক্ষা এবং চর্চার উৎসাহ, আগ্রহ হিসেবে পরিগণিত করতে পারি। লোভ ও লাভের উদ্ধ্যে উঠে আগামীর রাজনীতি এবং নিতি ও আদর্শ এবং রাষ্ট্র পরিচালনা আর সরকারের কর্মকান্ডের দৃষ্টান্তে একটি ফলপ্রসু ও সফল কার্যকরী ব্যবস্থার দ্বার উন্মোচন করে অগ্রসর হতে পারি।

আধুনিক সমাজে নৈরাজ্যেল ইতি টানতে মধ্যপ্রাচ্যের রাষ্ট্রগুলো একটি ঐক্যবদ্ধ ভ্রাতৃত্বের বন্ধন তৈরীতে যে কাজ চলমান তার ধারাবাহিকতায় এশিয়া, ইউরোপ, আমেরীকা ও আফ্রিকা সকল প্রান্তেই এই সমন্বয় সাধনের কার্যকরী ঐতিহাসিক ফলপ্রসুতা বিরাজমান রাখতে ত্যাগের মহিমায় স্ব স্ব কার্য্যসিদ্ধি করতে হবে। ইতিবাচক প্রতিযোগিতা এবং ভ্রাতৃত্বের সেতুবন্ধন সাম্য, ন্যায়পরায়তা, সততার ব্যবহার এবং ত্যাগের মহিমার সমন্বয় সাধনে মনোনিবেশ করুন। নতুবা আগামীর পৃথিবী আরো কঠোর ও কঠিন পথে অন্ধকারের দিকে অগ্রসর হবে। আসুন আমরা নোংরার নোংরামি বন্ধ করে পরিস্কার ও পরিচ্ছন্ন ঈমান ও আমল সাধনে মনোনিবেশ করি। জয় আমাদের অবিসম্ভাবী; শতভাগ নিশ্চয়ত নিরন্তর শুবকামনায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published.