প্রচন্ড তাপদাহে আক্রান্ত এশিয়া

প্রশান্তি আন্তর্জাতিক ডেক্স ॥ মৌসুমি তাপমাত্রার রেকর্ড ছাড়িয়েছে এশিয়ার তাপপ্রবাহ। ফলে দ্রুত পরিবর্তনশীল জলবায়ুর সঙ্গে এই অঞ্চলের দেশগুলো কতটা খাপ খাওয়াতে পারবে, তা নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ।

গত এপ্রিল মাসেই এশিয়ার একটি বড় অংশ মারাত্মক তাপপ্রবাহের শিকার হয়। আর মে মাসে সেই তাপমাত্রাও ছাড়িয়ে গেছে অঞ্চলটিতে। অথচ মে মাসের শেষের দিকে কিছুটা শীতল মৌসুমি বায়ু থাকার কথা। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোসহ চীন ও অন্যান্য দেশের তাপমাত্রা অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। এ অঞ্চলে তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে বলে সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা।

অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের জলবায়ু বিজ্ঞানী সারাহ পারকিন্স-কিরকপ্যাট্রিক বলেন, ‘বিষয়টির সঙ্গে অভ্যস্থ হওয়া কিংবা খাপ খাওয়াতে বলতে পারি না আমরা। কেননা, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে পরিস্থিতি।’

চলতি বছরের ৫০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা দেখেছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। গত এপ্রিলে ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রতিবেশী দেশ ভারত, পাকিস্থানের অবস্থাও ব্যতিক্রম নয়। এদিকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ থাইল্যান্ডের তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়ে নতুন রেকর্ড তৈরি করেছে।

এছাড়া চলতি বছর শতাব্দীর উষ্ণতম মে মাস কাটিয়েছে এশিয়ার দেশ চীন। মে মাসে দেশটির গড় তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ৪০ বছরের মধ্যে উষ্ণতম মে মাস কাটিয়েছে সিঙ্গাপুরও।

ইতোমধ্যে ভিয়েতনামের রাস্তার লাইটসহ বিদ্যুৎ ব্যয় হয় এমন অনেক প্রকল্প থেমে গিয়েছে। কারণ গরমের তীব্রতার কারণে দেশটিতে এসির চাহিদা ও ব্যবহার এত বেশি বেড়ে গেছে, ফলে বিদ্যুতের জোগান দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। মে মাসে দেশটির ইতিহাসের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার (৪৪ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস) মুখোমুখি হয় ভিয়েতনাম।

এশিয়ার প্রায় সব দেশেই তাপপ্রবাহের একই অবস্থা। এর ওপর বাতাসের আর্দ্রতা যেন ‘মরার ওপর খাড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাতাসের আর্দ্রতা বেশি থাকার কারণে আসল তাপমাত্রার চেয়েও অনেক বেশি গরম ও অস্বস্তি অনুভূত হচ্ছে।

থাইল্যান্ডের চিয়াং মাই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ছায়া বধনফুটি বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের এ ধারা বজায় থাকলে এমন তাপপ্রবাহের মাত্রা বাড়বে আরও ৩০ গুণ। ফলে এই অঞ্চলে প্রায় সময়েই এমন তাপপ্রবাহ দেখা দিতে পারে। সুত্র: রয়টার্স

Leave a Reply

Your email address will not be published.